সুফিয়ান আল হাসান »
১৯৯০ সাল, অস্ট্রেলিয়া কাপে বাংলাদেশ মুখোমুখি নিউজিল্যান্ডের। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান আজহার হোসেন সেন্টু এই ম্যাচে খেললেন ৫৪ রানের এক নান্দনিক ইনিংস, যা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে কোন ব্যাটসম্যান এর প্রথম আন্তর্জাতিক অর্ধশতক। এই ম্যাচের আগে কোন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান ছুঁতে পারেনি ৫০ রানের মাইলফলক। ম্যাচটি বাবার পাশে বসে টিভিতে দেখছিলেন আজহার হোসেন সেন্টুর ১২ বছরের ভাতিজা অপি। চাচার নয়ন জুড়ানো ইনিংস দেখে তার মনে দোলা দিলো ক্রিকেট প্রেম, মন সাগরে জাগলো ক্রিকেটার হওয়ার ইচ্ছা, ছোট বালকের কচি মন স্বপ্ন দেখতে শুরু করলো ক্রিকেটার হওয়ার। তার স্বপ্ন আরো জোরালো করলো তার বাবা (সেন্টুর বড় ভাই) , বাবার দেখানো স্বপ্ন শুধু ক্রিকেটার হওয়ায় সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তিনি ছেলেকে স্বপ্ন দেখলেন এক বিরল রেকর্ডের, যে রেকর্ড কারো পক্ষে ভাঙা সম্ভব না, বাবা ছেলেকে স্বপ্ন দেখলেন দেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হওয়ার, সেই ইচ্ছা বুকে নিয়েই শুরু হলো অপি নামের বালকটির পথচলা।
ঠিক ৯ বছর পরের কথা, জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ, ৯ চার ও ২ ছয়ে ১১৬ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন বাংলাদেশের এক ডানহাতি ওপেনার, ছেলেটার বয়স তখন ২১। ২১ বছরের বয়সেই এই ছেলেটি করলেন এক বিরল রেকর্ড, বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি করার রেকর্ড, যে রেকর্ড চিরস্থায়ী।হ্যা সেই ছেলেটি আর কেউ নয়, ৯ বছর আগে বাবার সাথে বসে দেশের প্রথম হাফসেঞ্চুরি দেখা অপিই সেই ২১ বছরের যুবক মেহরাব হোসাইন অপি। বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে সেঞ্চুরিয়ান তিনি। বাবার কথা রেখে দেশকে উপহার দিয়েছিলেন প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির।
কিছুদিন আগে সেঞ্চুরির স্মতি চারণ করতে গিয়ে অপি বলেছিলেন, ‘সেঞ্চুরি করার স্বপ্ন টা আমি ১২ বছর আগে থেকেই দেখছি, শারজায় চাচার হাফসেঞ্চুরি দেখেই আমার এই স্বপ্ন জেগেছিলো, সেদিন বাবা তার ভাইয়ের ব্যাটিং য়ে মুগ্ধ হয়ে বাবা বলেছিলেন আমি যেন বাংলাদেশের ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম সেঞ্চুরি করি।’
মেহরাব হোসেন অপির এই সেঞ্চুরিটিই ছিলো তার ক্যারিয়ারের ১ম এবং একমাত্র সেঞ্চুরি। ৯ টেস্টে ২৪১ রান এবং ১৮ ওয়ানডেতে ৪৪৯ রান করেছেন এই ডানহাতি ওপেনার।