দুর্জয় দাশ গুপ্ত »
বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোঃ আশরাফুল আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ২৬১ টি। সাদা পোষাকে আশরাফুল ৬১ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আর এক দিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ১৭৭ ম্যাচে।
দীর্ঘ ১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের সামনে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে মোঃ আশরাফুলের। ক্যারিয়ারের একদম শুরুর সময়টাতে ব্রায়ান লারা, শচীন টেন্ডুলকার, ওয়াসিম আকরাম, ম্যাথু হেইডেন, গ্লেন ম্যাকগ্রা, জ্যাক ক্যালিস, শেন ওয়ার্ন, মুত্তিয়া মুরালিধরনদের সাথে খেলেছেন অনেক ম্যাচ।
আশরাফুল যাদের সাথে খেলেছেন বা যাদের খেলা দেখেছেন তাদের মধ্যে থেকে দুই দশকের সেরা ওয়ানডে একাদশ নির্বাচন করেছেন। নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডট কমের জন্য বাছাই করা ওয়ানডে দলে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড থেকে আছেন একজন করে ক্রিকেটার৷ আর বাকি তিনজন ক্রিকেটার অস্ট্রেলিয়ার।
আশরাফুলের গত দুই দশকের সেরা ওয়ানডে দলের ওপনিংয়ে আছেন ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকার ও অস্ট্রেলিয়ান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। আশরাফুল মনে করেন ওয়ানডে ফরম্যাটে তাঁর দেখা সেরা ওপেনারদের মধ্যে এ দুজন একদম উপরের সারিতে আছেন। এক দিনের ক্রিকেটে ৪৬৩ টি ম্যাচ খেলেছেন টেন্ডুলকার। প্রায় ৪৫ গড়ে ১৮৪২৬ রান করেছেন তিনি যা এখন পর্যন্ত যেকোনো ক্রিকেটারদের পক্ষে সর্বোচ্চ। আর শুরুর দিকটায় আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্যই গিলক্রিস্টকে ওপেনিংয়ে রেখেছেন আশরাফুল। এছাড়া এই একাদশে উইকেটরক্ষকের ভূমিকাও পালন করবেন তিনি।
তিন নম্বরে পজিশনের পাশাপাশি এই একাদশের অধিনায়কের দায়িত্বে রাখা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার দুবারের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক রিকি পন্টিংকে। আশরাফুল বলেন, ‘তিন নম্বর পজিশনে আমি মনে করি সেরা ব্যাটসম্যান রিকি পন্টিং। এবং পরিসংখ্যানও তাঁর পক্ষে কথা বলে৷ এছাড়া অধিনায়ক হিসেবেও পন্টিং অসাধারণ।’
চার নম্বর পজিশনে আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ব্রায়ান লারা। আশরাফুলের মতে এই পজিশনের সেরা ব্যাটসম্যান লারা। এজন্যই তাকে বেছে নিয়েছেন তিনি। একমাত্র ক্যারিবীয় ক্রিকেটার হিসেবে লারাই আছেন আশরাফুলের ওয়ানডে একাদশে।
পাঁচ নম্বর পজিশন যেকোনো দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই পজিশনে যেকোনো দলের দ্রুত রান তুলতে পারা এবং অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ব্যাট করে থাকেন। আশরাফুলের সেরা ওয়ানডে একাদশের পাঁচ নম্বর পজিশনে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক এবিডি ভিলিয়ার্স।
এই একাদশের ছয় নম্বর পজিশনে আছেন ইংলিশ পেস বোলিং অলরাউন্ডার এন্ড্রু ফ্লিনটফ। ব্যাট এবং বল হাতে দলের জন্য খুবই কার্যকরী ফ্লিনটফ। আর এজন্যই ফ্লিনটফকে রেখেছেন আশরাফুল।
আশরাফুলের সেরা ওয়ানডে একাদশে একমাত্র বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সাত নম্বর পজিশনে এই অলরাউন্ডারকে রেখেছেন আশরাফুল। এবং একমাত্র বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে দুই দশকের সেরা একাদশে সাকিবকে রাখার কারণও ব্যাখা করেছেন তিনি। আশরাফুল বলেন, ‘সাকিব যেকোনো দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন ক্রিকেটার। যেকেউই সাকিবকে দলে চাইবে। ব্যাটিং এবং বোলিং দুদিক দিয়েই দলকে সমর্থন করে যাবার ক্ষমতা সাকিবের রয়েছে। এজন্যই আমি সাকিবকে বেছে নিয়েছি।’
আশরাফুলের সেরা ওয়ানডে একাদশে পেস বোলার হিসেবে আছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরাম ও নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার শেন বন্ড। এছাড়া একাদশে আছেন দুজন কিংবদন্তি স্পিনারও। অস্ট্রেলিয়ার স্পিন জাদুকর শেন ওয়ার্নের সাথে আছেন শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন।
আশরাফুল বলেন, ‘আমি মনে করি এই একাদশের বোলিং লাইনআপটা যেকোনো দলের ব্যাটসম্যানদের জন্য হুমকিস্বরূপ। ওয়াসিম আকরাম ও শেন বন্ড দুজনই কিংবদন্তি আমার চোখে। আর নিঃসন্দেহে আমার দেখা সেরা দুজন স্পিনার ওয়ার্ন ও মুরালিধরন৷ বিশ্বের যেকোনো ব্যাটসম্যানদের জন্যই এ দুজন স্পিনার খুবই ভয়ংকর। আমি ওয়ার্ন ও মুরালিধরনকে একাদশে নিতে মোটেও ভুল করবো না।’
মোঃ আশরাফুলের চোখে দুই শতকের সেরা ওয়ানডে একাদশঃ
শচীন টেন্ডুলকার, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট (উইকেটরক্ষক), রিকি পন্টিং (অধিনায়ক), ব্রায়ান লারা, এবিডি ভিলিয়ার্স, এন্ড্রু ফ্লিনটফ, সাকিব আল হাসান, ওয়াসিম আকরাম, শেন ওয়ার্ন, মুত্তিয়া মুরালিধরন, শেন বন্ড।