অবিচার করা হয়েছে আমার প্রতিঃ বুলবুল

নিউজ ডেস্ক »

বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাস চিন্তা করতে গেলে শুরুতেই মাথায় আসবে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান বুলবুল ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন মনে অভিমান নিয়ে। আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা না দিয়ে করেছেন নিরব প্রতিবাদ। এক ফেইসবুক লাইভে বুলবুল বলেন , মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের জন্য এ্যাভেইলএভেল থাকবেন তিনি।

২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রেকর্ড গড়েন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির, তার এ রেকর্ড ভাঙার নয়, এ রেকর্ড চিরস্থায়ী। ৩০ বছর বয়সে প্রথম টেস্ট খেলা বুলবুল ক্যারিয়ার শেষ করেন মাত্র ১৩ টেস্ট খেলে, ১৩ টেস্টে ব্যাট হতে তার সংগ্রহ ৫৩০ রান। এরপর এক প্রকার অভিমান নিয়েই, কোন ঘোষনা ছাড়াই বিদায় বলেন ক্রিকেটকে।

নিজের টেস্ট ক্যারিয়ার নিয়ে বুলবলে বলেন, ‘আমরা যখন টেস্ট স্ট্যাটাস পাই তখন আমার বয়স ৩০ বছর। ৩১ থেকে ৩২ এর মাঝামাঝি সময়টাতে আমাকে দল থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছিল। আমি এখন নিজেকে বলি, আরও কয়দিন টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারতাম। ৩০ বছরের একটা ছেলে যখন টেস্ট ম্যাচ খেলে সবার সাথে; আসলে আমাদের সবারই শুরু ছিল তখন। আমরা কয়েকজন অভিজ্ঞ ছিলাম। আমরা বাদ পড়লে ওই জায়গাটা পূরণ করতে অনেক সময় লেগেছ। আমরা খুব ভালো পারফর্মার ছিলাম তা বলছি না, কিন্তু আমরা অভিজ্ঞ ছিলাম।’

শুধু টেস্ট নয় আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাংলাদেশের জার্সিতে ওয়ানডেও খেলেছেন ৩৯ টি, সেখানে তার সংগ্রহ ৭৯৪ রান। বাদ পড়েছেন ফর্মে থাকা অবস্থায়, বাদ পড়ার আগের ম্যাচেও পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৪৪ রানের ইনিংস। বাদ পরার পরে আর দলে ডাকা হয়নি এই ব্যাটসম্যানকে। ওয়ানডে ক্যারিয়ার নিয়ে তিনি বলেন, ‘আর ওয়ানডের কথা বলবো, আমি ভাগ্যবান যে ৩৯টা ম্যাচ খেলেছিলাম। কিন্তু আরও কিছু ম্যাচ খেলতে পারতাম। আমরা শেষ ওয়ানডে ম্যাচ ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। ওদের তখন ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিস, মুস্তাক, আফ্রিদি, রাজ্জাকদের বোলিংয়ের বিপক্ষে ৩৯ বলে ৪১ রান করেছিলাম। তারপরে আর আমাকে সুযোগ দেয়া হয়নি।’

৫২ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান মনে করেন তার সাথে অবিচার করেছিল ক্রিকেট বোর্ড, এ বিষয়ে বুলবুল বলেন ‘তারা তাদের পরিকল্পনার ওপরে ভিত্তি করে আমাকে আর দলে নেননি। আমি আরও কিছুদিন ওয়ানডে খেলতে পারতাম। কিন্তু টি-টোয়েন্টি খেলা হতো। তবে ক্যারিয়ারটা হয়তো আরেকটু দীর্ঘায়িত হতে পারত। আমি অবসর নিইনি ওইসময় কারণ আমার মনে হয়েছিল, আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। কিন্তু আমি কাউকে দোষ দিই না আর দোষ দিবো না কোনোদিনও।’

অবিচারের শিকার হয়েছেন চিন্তা করেই অভিমানে ব্যাট প্যাড তুলে রেখেছিলেন বুলবুল কোন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই, এরপর আর ক্রিকেট মাঠে লাল সবুজের জার্সি চাপিয়ে নামা হয়নি বুলবুলের। তিনি বলেন বাংলাদেশ দলের জন্য তিনি সবসময় প্রস্তুত আছেন। এ বিষয়ে বুলবুলের ভাষ্য ,‌ ‘যেহেতু আমি অবসর নিইনি তার আমি এখনো অ্যাভাইলেবল। কিন্তু আর কোনোদিন সুযোগ পাব না। প্রতিবাদ মতো করে আমি অবসর নিইনি। যখন মারা যাব তখন তো এমনিই অবসর হয়ে যাবে। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত আমি দলের জন্য আমি অ্যাভাইলেবল থাকব।’

নিউজক্রিকেট/সুফিয়ান

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »