নিউজ ডেস্ক »
এ যুগের ক্রিকেটপ্রেমীদের চোখে একজন পেশাদার ধারাভাষ্যকার। বিশেষ করে গত যুগ দেড়েক থেকে ক্রিকেট বুঝে উঠা তরুণদের কাছে অজানাই রয়ে গেছে একজন ক্রিকেটার আতাহার আলী খানের গল্প। কেমন ছিলেন লাল-সবুজের জার্সি গায়ে ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রপি জয়ী সেই অলরাউন্ডার? এ প্রজন্মের কাছে সেকালের আতাহারকেই তুলে ধরার চেষ্টা করেছে নিউজক্রিকেট২৪।
সে সময়কার জাতীয় দলে ‘পিভতাল’ ক্রিকেটারদের একজন ছিলেন আতাহার আলী খান। ব্যাট হাতে নামতেন মিডল অর্ডারে, কখনো ৪ আবার কখনো ৫। তবে মিডল অর্ডারে ক্যারিয়ার শুরু হলেও পরবর্তীতে হয়েছিলেন পুরোদস্তর ওপেনার। পাশাপাশি স্লো মিডিয়াম পেসার। তবে বোলিংয়ের চেয়েও বেশি যশ ছিলো তাঁর ব্যাটে। ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবা আন্তর্জাতিক অঙ্গন, সমানে হেঁসেছিলো আতাহারের ব্যাট।
১৯ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে দেশের হয়ে কুড়ি ওভারের ম্যাচ খেলা হয়নি। মাঠে নামার সৌভাগ্য হয়নি ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত সংস্করণ টেস্টেও। তাই তো ১৯ ম্যাচের সবকটাই ছিলো ওয়ানডে ফরম্যাটে। রান করেছেন বলার মতো। ব্যাটিং গড়ে পেশাদার ব্যাটসম্যানের কাতারে দাঁড় করানো যায় অনায়াসেই।
১৯৬২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় জন্মগ্রহণ করা ৬ ফুট ২ ইঞ্চির (১.৮৮ মিটার) এই দীর্ঘদেহী ক্রিকেটার খেলেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের ফার্স্ট ক্লাস এবং লিস্ট-এ ম্যাচ। ৫৮ বছর বয়সী সাবেক এই ক্রিকেটার সেখানে করেছেন প্রায় সাতশোর্ধ্ব রান। সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে প্রায় ১২ শ’য়ের কিছু বেশি।
১৯ ওয়ানডেতে ২৯.৫৬ গড়ে করেছেন ৫৩২ রান। ৫৬.২৯ স্ট্রাইকরেটে রান তোলা আতাহারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৮২ রানের। তিন বার অর্ধশতকের দেখা পেলেও সেঞ্চুরী উদযাপনের স্বাদ পায়নি তাঁর ব্যাট। ক্যারিয়ার জুড়ে ৪৬টি বাউন্ডারি এবং ৩টি ছক্কা হাঁকানো এই ব্যাটসম্যান অপরাজিত ছিলেন একটিমাত্র ইনিংসে।
ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল মাত্র তিনটি। তবে যেখানে বেশ মন্থর তাঁর ব্যাট। গোটা ৬ ইনিংস থেকে করেছিলেন ৪৮ রান। সর্বোচ্চ ২৩ এবং গড় রান ৮ এর উর্ধ্বে নয়। ২৯টি লিস্ট-এ ম্যাচ থেকে আতাহারের রান সংখ্যা ৭০৮। সর্বোচ্চ ৮২ রানে গড় ২৫.২৮। ৪ ফিফটি, নেই কোনো শতক।
বোলিংয়ে পেশাদারিত্ব ছিল না তাঁর ক্যারিয়ারে। ঠুকঠাক যা করেছেন, উইকেটও পেয়েছেন বেশ কয়েকটি। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৩৩ রান খরচায় দু’টিসহ শিকার করেছেন মোট ছয় উইকেট। ফার্স্ট ক্লাসে একটি এবং লিস্ট-এ ক্রিকেটে মোট ৯ উইকেট।
দীর্ঘদিন লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করা আতাহার জিতেছিলেন দেশের হয়ে প্রথম আইসিসি শিরোপা। ১৯৯৭ সালের ১৩ এপ্রিল আইসিসি ট্রফির ফাইনাল ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ না হলেও গোটা টুর্নামেন্ট ভালো খেলেছিলেন তিনি। সেদিন আকরাম, পাইলট, বাশারদের সাথে টাইগার ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ট্রপি জয়ের আনন্দে গা ভাসিয়েছিলেন আতাহারও।
পরবর্তীতে ব্যাট-প্যাড তোলে রাখার পর পুরোদমে টেলিভিশন ধারাভাষ্যে মনোযোগ দেন তিনি। এখন পর্যন্ত প্রায় এক দশক ধরে এ শাখায় সফলভাবে কাজ করে চলেছেন আতাহার। বাংলাদেশের সেরা এই ধারাভাষ্যকার আছেন আইসিসি ধারাভাষ্য প্যানেলও।