বরিশালে ফিরেছে ক্রিকেট উন্মাদনা, আছে আক্ষেপও

নিউজ ডেস্ক »

বিগত ৩ বছর পরে আবারও বরিশালের আকাশে দেখা দিয়েছে ক্রিকেটের রংধনু। বরিশালের ক্রীড়া প্রেমীদের মনের মেঘ যেন কাটতে শুরু করেছে এবার। গত ৩টি আসরে কীর্তনখোলার পাড়ের কোন দল না থাকলেও এবারে আসরে ফরচুনের পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপ দিয়ে আবারও মাঠে নামছে বরিশাল।

ক্রিকেট প্রেমীদের তালিকার একটা বড় অংশজুড়েই ছিলো বরিশালবাসীদের স্থান। বিভিন্ন ভাবে নিজেদের ক্রিকেটপ্রেমের জানান দিয়েছেন প্রচ্যের ভেনিসের মানুষরা। ঘরোয়া ক্রিকেটে দর্শক খড়া নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে যেন সেই প্রশ্নকেই প্রশ্ন ছুড়ে দেয়। মাঠে হাজার হাজার দর্শকের সমাগমে মুখোর থাকে স্টেডিয়াম চত্বর। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বরিশালের ক্রিকেট প্রেমীদের মনে জমে ছিলো কালো মেঘ। ঘরোয়া ক্রিকেটের সবথেকে বড় আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এই যে ছিলোনা বরিশালের নাম!

২০১২ সালে প্রথমবারের মত ঘরোয়া ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি২০ টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বিসিবি। শুরু থেকেই দাপট দেখিয়ে আসছিলো কীর্তনখোলার তীরের দলটি। প্রথম আসরে রানারআপ হয়েছিলো বরিশাল বার্নার্স। দুই মালিকানায় প্রথম ৪টি আসরে অংশগ্রহণ করে বরিশাল। প্রথম দুই আসরে বরিশাল বার্নার্স নামে এবং পরবর্তী দুই আসরে বরিশাল বুলস নামে অংশগ্রহণ করে দলটি। ৪বারের অংশগ্রহণে ২বার রানারআপ হলেও শিরোপার স্বাদ পায়নি দলটি। সর্বশেষ ২০১৬ বিপিএলে তীরে এসে কুমিল্লার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে বরিশাল। কিন্তু এর পরে বিসিবির সাথে আর্থিক দ্বন্দে পরের আসর গুলোতে দল পায়নি বরিশাল। সর্বশেষ ২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে বিসিবির তত্ত্বাবধায়নে দল গড়লেও সেখানেও ছিলোনা বরিশালের কোন দল। সেবার ক্ষোভে ফেটে পরেছিলো বরিশালের ক্রীড়াপ্রেমীরা।

তবে এবারের আসরে আর বঞ্চিত হতে হয়নি বরিশালকে। ফরচুন সু লিমিটেড (এফএসএল) এর পৃষ্ঠপোষকতায় এবার বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপে বরিশালের অন্তর্ভুক্তিতে বরিশালের আকাশে স্বস্তির বাতাস বইছে। এরই মধ্যে আসরের সর্বপ্রথম জার্সি এবং গান প্রকাশ করে বাড়তি উন্মাদনা যোগ করেছে দলটি। তার সাথে ঢালিউডের তারকা অভিনেতা জায়েদ খানকে শুভেচ্ছা দূত হিসেবে যুক্ত করে বাড়তি মাত্রা এনে দিয়েছে।

এ নিয়ে বেশ খুশি বরিশালের ক্রিকেট প্রেমীরাও। দেশসেরা স্মারক সংগ্রহক জসীম উদ্দিনের বাড়িও বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায়। অনেকদিন পরে কোন টি২০ টুর্নামেন্টে বরিশালের অন্তর্ভুক্তি আত্মতৃপ্তি দেয় তাকে। জসীম উদ্দিন বলেন,’ সত্যি বলতে ভালো লাগছে। নিজের বিভাগকে সাপোর্ট করতে পারবো। ইনশাআল্লাহ চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরে আসাটা জানান দেবে বরিশাল।’

উন্মাদনার সাথে আক্ষেপও আছে বরিশালের ক্রীড়াপ্রেমীদের। ৩ আসর পরে ফিরে আসা বরিশালকে মাঠে বসে সাপোর্ট করা হবেনা বরিশালের ভক্তদের। করোনার জন্য মাঠে দর্শক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার কারণে এবারের আসরে ঘরে বসেই বরিশালকে সাপোর্ট করতে হবে ভক্তদের। এ নিয়ে আক্ষেপ আছে স্মারক সংগ্রহক জসীমেরও। তবে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে দ্রুত করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রত্যাশাও ব্যাক্ত করেন তিনি। জসীমের ভাষায়,’ আক্ষেপতো কিছুটা আছেই। মাঠে বসে সাপোর্ট দিতে পারলে ভালো হতো। তবে এই পরিস্থিতিতে কিছু করারও নেই। তবে শিঘ্রই বিশ্ব করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাবে ইনশাআল্লাহ। আমরা আবারও মাঠে বসে খেলা দেখতে পারবো।’

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »