নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
বার্মিংহামের হায়াত রিজেন্সি হোটেলের লবিতে আলাপ চলছিল আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে। হুট করেই দেখা গেল ট্রেডমিলে রানিংয়ের পর ফিরছেন আইসিসির চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে। বুলবুলকে দেখেই ‘হাই’ বলে চলে গেলেন। কয়েক মাসের মধ্যেই তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের পদে।
ঠিক তার আগেই আইসিসি সহযোগী এক দেশের কর্মকর্তাকে বিদায় জানালেন বুলবুল। আইসিসির ডেভেলপমেন্ট কর্মকর্তা বুলবুলকে সেলফির ফ্রেমে বন্দি করে ভদ্রলোক লবি ত্যাগ করেন। আইসিসির এজিএম তখন শেষ (২৫-২৬ জুলাই), ব্যস্ততার শেষ পর্বে বুলবুল। এর মধ্যেই বাংলাদেশের ক্রিকেট, আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপ, বাংলাদেশ নিয়ে আলাপ জমে গেল সাবেক এই অধিনায়কের সঙ্গে।
তিন মাসের মধ্যেই আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপ খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাবে বাংলাদেশ দল। অনেক বছর ধরে এই দেশেই বুলবুলের সপরিবারে বসবাস। দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানের আশা এবার বিশ্বকাপে ভালো করবে বাংলাদেশ দল। বিশ্বকাপে উইকেট থাকবে স্পোর্টিং, প্রচুর রান হতে পারে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে টাইগারদের।
অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে বিশ্বকাপে ভালো করার জন্য তিনটি মৌলিক বিষয়ের কথা বলেছেন বুলবুল। তার মতে, ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লের দুর্বলতা দূর করতে হবে। বৈচিত্র্যময় বোলিং নিশ্চিত করতে সাকিবের সঙ্গে রান আটকানোর দক্ষতা সম্পন্ন বোলার দরকার হবে। এবং ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলতে হবে, ধরাবাঁধা কোনো লক্ষ্য নিয়ে খেলা যাবে না।
আসন্ন বিশ্বকাপে সরাসরি মূল পর্বে খেলবে বাংলাদেশ দল। যেটি ক্রিকেটারদের সঙ্গে সবার জন্যই স্বস্তি। তবে গত পাঁচ আসরে মূল পর্বে জয়শূন্য বাংলাদেশ। জয়ের খাতা খোলার মিশনে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন, উইকেট কতটা বাধা হতে পারে জানতে চাইলে বুলবুল বলেছেন, ‘উইকেট বড় ফ্যাক্টর হবে। অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ান উইকেটগুলো বেশ স্পোর্টিং থাকবে। তাদের উইকেটগুলো ব্যাটিং উইকেট হয়, উইকেটে গতি থাকে একটু বেশি। তাই আমাদের প্রস্তুতি তেমন হওয়া উচিত। বিশ্বকাপের আগে আমরা ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলব নিউজিল্যান্ডে, এটা আমাদের জন্য বড় অনুশীলন হয়ে যাবে। তাই আমি আশা করি, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো করবে।’
টাইগারদের জন্য সাবেক এ অধিনায়কের পরামর্শগুলো হলো; ‘অবশ্যই ভালো করার সক্ষমতা আছে। এই ফরম্যাটের কিছু কৌশল আছে, যেমন স্পেশাল বোলার দরকার, সাকিবের সঙ্গে আমাদের এমন কিছু বোলার লাগবে, যারা রানটা আটকে ধরবে। বোলিংটা একটা বড় ব্যাপার। আর ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে আমরা খুব দুর্বল। আমরা যদি পাওয়ার প্লে-তে উন্নতি করতে পারি, বৈচিত্র্যময় বোলিং করতে পারি, তাহলে আমাদের ভালো করা সম্ভব।’
অতীতে হেরেছি বলে ভবিষ্যতে জয় আসবে না এমন চিন্তা বাদ দিয়ে ইতিবাচক থাকতে বলেছেন বুলবুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের ইতিবাচক থেকে এগোতে হবে। আমরা অনেক দিন ম্যাচ জিততে পারিনি। তার মানে এই না যে, আমরা জিততে পারি না, পারব না।’ টি-২০-তে সাধারণত ১৬০-১৬৫ রানের টার্গেটেই ব্যাট করে বাংলাদেশ দল। বুলবুল বলছেন, এমন নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে চলা যাবে না। যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, ‘কোনো ফিক্সড মাইন্ডসেট থাকা উচিত না। এসব জায়গায় ওপেন মাইন্ডসেট থাকা উচিত। যে কোনো অবস্থান থেকে আমি জিতব, এজন্য যে প্রস্তুতি দরকার, সেটা নিতে হবে। টি-২০ ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ আছে প্রথম ৬ ওভার, শেষে ৩ ওভার। এগুলোর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
আইসিসির মিটিং শেষে দুবাই হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে গেছেন বুলবুল। ক্রিকেটকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছে আইসিসি। সেই মিশনে আইসিসির হয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন বুলবুল। দেশের জন্য তা বিরাট সম্মান, গৌরবই বটে।