নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
জার্নিটা শুরু সেই ২০০১ সাল থেকে। ২০০১ সালের ৮ নভেম্বর থেকে আজ ২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর, এখনো চলছে। _ চলতেই থাকুক না!
১৮ বছরের তরুণ মাশরাফি ২০০১ সালের এই দিনটাতেই শুরু করেছিলেন নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার। এরপর নড়াইলের কৌশিক সময় গড়ানোর সাথে সাথে হয়ে উঠেছেন দেশের কোটি ক্রিকেট প্রেমির চোখের মণি। মাশরাফি – যে পরশ পাথরের ছোঁয়ায় গোটা টিম এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার ন্যায় সাফল্যের খোঁজে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন একজন মাশরাফি বিন মর্তুজা। বলতে গেলে, আজকের এই বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম কান্ডারী তিনি।
দীর্ঘ ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে ব্যাথা-বেদনা, হাসি-কান্না উপেক্ষা করে খেলাটা চালিয়ে গেছেন একজন সত্যিকারের যোদ্ধার বেশে। ক্রিকেট টাকে যে বড্ড ভালোবাসে নড়াইলের এই ছেলেটা।
এর আগে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা একটা ছেলেকে তুলে আনা হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট টেস্ট দলে। ফার্স্ট ক্লাস কোন ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই, সে খেলবে আন্তর্জাতিক ম্যাচ, তাও আবার লংগার ভার্সনে। কি হয়, কি হয় এমন প্রশ্নের মাধ্যমেই তার তাক লাগানো পারফরম্যান্স।
জিম্বাবুয়ের ৪ উইকেট একাই তুলে নিয়ে ফেলে দিলেন হইচই। তখনও কেউ জানতো না এই ছেলেটাই একদিন হয়ে উঠবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কান্ডারী। বেলা গড়িয়েছে অনেক। ইনজুরির পর ইনজুরি তে কাবু হয়ে মাঠের বাইরেও কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময়। কিন্তু ডাক্তারের চালানো ছুরি-কাঁচির আফটার ইফেক্ট শেষ পর্যন্ত হার মেনেছে উনার অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে। ফিরেছেন মাঠে। নিজে জিতেছেন, জিতিয়েছেন দলকে। জিতে নিয়েছেন কোটি মানুষের হৃদয়। ম্যাশের কাপ্তানিতেই তো নতুন এক বাংলাদেশকে দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব।বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশকে আলোকবর্তিকা হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
‘এলাম, দেখলাম আর জয় করলাম’ মাশরাফির সাথে এই উক্তিটা বড্ড বেমানান। কেননা প্রায় দুই যুগের ক্যারিয়ারে তাকে যে লড়াই করতে হয়েছে জীবনের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ ইনজুরির সাথ। ইনজুরি আর মাশরাফি নামটা যেনো গাঁথা ছিলো একই সুতোয়। তবে হ্যাঁ, দমে যান নি তিনি। বারবার ইঞ্জুরিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ফিরেছেন মাঠে, জিতেয়েছেন দলকে।বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন বিশ্ববাসীর কাছে অনন্য এক উচ্চতায়।
মিরাজ-মুস্তাফিজদের মতো তরুণ থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ সাকিব-তামিম সবাই যেনো অনুপ্রেরণা খুঁজে পায় এক মাশরাফিতেই। তিনি যে অনুপ্রেরণার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। তিনি যে হার না মানা এক শক্তির নাম। তিনি যে মাশরাফি।
একটা একটা করে দিন যাচ্ছে আর ঘনিয়ে আসছে মাশরাফির বিদায় বেলা। ভক্ত-সমর্থকদের আতঙ্ক দিন যাওয়ার সাথে সাথে প্রখর হচ্ছে। এ যেনো রবীন্দ্রনাথের সেই কবিতার মতো, ‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়।’ ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও, বাংলাদেশ ক্রিকেট নড়াইলে জন্ম নেওয়া মাশরাফি বিন মর্তুজা (কৌশিক) নামের এই বিস্ময়কর বালককে মনে রাখবে অনন্তকাল। বাংলাদেশ ক্রিকেটে অমর হয়ে থাকবেন মাশরাফি।
‘হে মহানায়ক, তোমাকে আমার সালাম।
ভালো থেকো। সব কিছুর জন্যই ধন্যবাদ।’