নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
“আধুনিক টেস্ট ক্রিকেট সৌন্দর্যবর্ধিত একটা শহর হলে, স্মিথ সে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পরিশীলন”
“স্মিথ স্মিথ স্মিথ!!!”
হ্যাঁ, টেস্ট ক্রিকেটে ঠিক এভাবেই যেনো স্টিভ স্মিথের জয়জয়কার। সিডনি শহরে ১৯৮৯ সালের ২ জুন
জন্ম হয়, অস্ট্রেলিয়ান এই বিস্ময় বালকের। পুরো নাম ‘স্টিভেন পিটার ডেভেরিউক্স স্মিথ’
২০১০ সালের ১৩ জুলাই ৪১৫ নম্বর খেলোয়াড় হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়, অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটিং আশ্চর্যের। অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত সাদা পোশাকে মাঠে নেমেছেন ৬৫ বার। আর এই ৬৫টি ম্যাচ খেলে ৬২.৯৬ গড়ে রান করেছেন ৬,৪৮৫। সমৃদ্ধশালী এই ক্যারিয়ারে রয়েছে ৩টি দুই শতাধিক রান, ২৫ টি একশত রান ও ২৪ অর্ধশত রানের ইনিংস। সর্বোচ্চ রান– ২৩৯।
বল টেম্পারিংয়ের কারনে হয়েছিলেন নিষিদ্ধ। শাস্তি ভোগ করে আবার ফিরেছেন। তারপরের গল্পটা তো সবারই জানা। এ যেনো এক রাজকীয় প্রত্যাবর্তন।
চলতি অ্যাশেজে স্মিথ চোখ কপালে উঠার মতো দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে যাচ্ছেন। কেননা ইনজুরির কারণে তৃতীয় টেস্ট ও দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে না পারা স্মিথ করেছেন বাজিমাত। ১ম, ২য় ও ৪র্থ টেস্টে পেয়েছেন আকাশচুম্বী সাফল্য। দুটি সেঞ্চুরি, দুটি হাফসেঞ্চুরির সাথে পেয়েছেন একটি ডাবল সেঞ্চুরি। যার ফলশ্রুতিতে, ৯০৪ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে রয়েছেন ব্যাটসম্যানদের র্যাঙ্কিংয়ের ১ম স্থানে।
“এছাড়াও তিনি তার খেলোয়াড়ি জীবনে পেয়েছেন বিভিন্ন সম্মাননা” সেগুলো হলো–
★ ২০১৪ সালে মার্টিন ক্রো টেস্ট ক্রিকেটের তরুণ চার ফ্যাবের অন্যতম হিসেবে জো রুট, কেন উইলিয়ামসন ও বিরাট কোহলি’র সাথে তাকেও অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
★ ২০১৪-১৫ মৌসুমে আইসিসি’র বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার মনোনীত হন তিনি।
★ ২০১৫ সালের ২৩ জুন আইসিসি বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি লাভ করেন।
“স্মিথের প্রারম্ভিক ক্রিকেট জীবনের খুঁটিনাটি” –
★ ২০০৮ সালের ২৪ জানুয়ারি, নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত একমাত্র ইনিংসে ৩৩ রান করেছিলেন।
★ ২০০৮ সালের কেএফসি ২০-২০ প্রতিযোগিতায় তিনি সর্বাধিক উইকেট লাভকারী বোলার ছিলেন। কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেট সহ সর্বমোট ৫ খেলার চারটিতে অংশগ্রহণ করে ৯ উইকেট লাভ করেন তিনি। এ প্রতিযোগিতার তিনি দ্বিতীয় সেরা খেলোয়াড় ছিলেন।
★ ২০০৯ সালের ২০-২০ চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জয়ী নিউ সাউথ ওয়েলস দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।
“স্মিথের অধিনায়কত্ব” –
★ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে দলে স্থায়ীভাবে সহঃ অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। ২০১৪-১৫ মৌসুমে সফরকারী দল ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের ইনজুরিতে পড়া ও সিরিজ থেকে বাদ পড়ার প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কের দায়িত্ব পান তিনি। এছাড়াও তিনি ক্লার্কের ফিল্ডিং অবস্থান স্লিপেও দাঁড়ান।
★ ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি, অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত কার্লটন মিড ত্রি-দেশীয় সিরিজের ২য় খেলায় ধীরগতিতে ওভার করার কারণে নিয়মিত অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক জর্জ বেইলিকে ম্যাচ ফি’র ২০% জরিমানাসহ এক খেলার জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়। আর এর ফলে হোবার্টে অনুষ্ঠিত সিরিজের ৪র্থ খেলায় স্টিভ স্মিথ দলের অধিনায়কত্ব করেন।
একজন হার না মানা ক্রিকেটারের নাম স্টিভেন স্মিথ। তার এমন সাফল্যে আমরা তাকে নির্দ্বিধায় আধুনিক ক্রিকেটের ব্র্যাডম্যান বলতে পারি।