শুভ জন্মদিন জেমস মাইকেল এন্ডারসন!

হাসান আল মারুফ »

পুরো নাম জেমস মাইকেল এন্ডারসন হলেও ক্রিকেটে পরিচিত জেমস এন্ডারসন নামেই। টেস্ট ইতিহাসের সেরা বোলারদের মধ্যে অন্যতম একজন জেমস এন্ডারসন। আজকেই ৩৮ তম বসন্তে পদার্পণ করলেন। তবে তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে তিনি ১৮ বছর ধরে মাঠ মাতাচ্ছেন। কঠোর পরিশ্রমে ধরে রেখেছেন নিজের ফিটনেস। ৩৮ বছর বয়সে এসেও দিব্যি নিজের গতিতে মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই পেসার। ১৮ বছরের দীর্ঘ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সুইং, বাউন্স আর গতিতে পরাস্থ করেছেন প্রতিপক্ষের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের।

১৯৮২ সালের ৩০ই জুলাই যুক্তরাজ্যের বার্নলিতে জন্ম নেওয়া এন্ডারসনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ২০০২ সালের ১৫ই ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে মাত্র ৩ ম্যাচ খেলেই অজিদের বিপক্ষে ডাক পান তিনি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে জন্মভূমি ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়েই মাঠ মাতাচ্ছেন তিনি। পরবর্তীতে ২০০৩ সালের ২২ই মে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে অভিষিক্ত হন এন্ডারসন। বর্তমানে ৩৮ বছর বয়সী এই পেসার ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে উভয় ফর্মেটেই সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক।

টেস্ট ও ওয়ানডেতে সফলতা পেলেও টি-২০ তে নিজের নামের প্রতি মোটেও সুবিচার করতে পারেননি এন্ডারসন। টেস্ট অভিষেকের প্রায় ৪ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০০৭ সালের ৯ই জানুয়ারি টি-২০ তে অভিষেক হয় এই পেসারের। তবে মাত্র ২ বছর টি-২০ তে খেলতে পেরেছিলেন তিনি। ২০০৯ সালের ১৫ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-২০ ম্যাচের পর আর দলে জায়গা হয়নি জেমির। ২০০৭-০৮ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া লীগ অকল্যান্ডের হয়েও খেলেছিলেন তিনি।

ক্রিকেট ইতিহাসে ষষ্ঠ এবং প্রথম ইংলিশ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ৫০০ উইকেট অর্জন করেন তিনি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে লর্ডসে উইন্ডিজের বিপক্ষে ক্রেইগ ব্রাফেটকে বোল্ড করে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের ৫০০ তম উইকেট শিকার করেন।

টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৫৩ ম্যাচে ২৭ এর কাছাকাছি এভারেজে উইকেট নিয়েছেন ৫৮৯ টি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ট্রেন্ট ব্রিজে ইনিংস সেরা ৪২ রানে ৭ উইকেট ও
ট্রেন্ট ব্রিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ সেরা বোলিং ফিগার ৭১ রানে ১১ উইকেট নেন তিনি। ইনিংসে ২৭ বার ৪ উইকেট, ২৭ বার ৫ উইকেট ও ম্যাচে ৩ বার ১০ উইকেট শিকার করেন। ব্যাট হাতেও আছে এক অর্ধশতকে হাজারের বেশি রান।

ওয়ানডেতে ১৯৪ ম্যাচে ২৯ এভারেজে শিকার করেছেন ২৬৯ উইকেট। ম্যাচ সেরা ২৩ রানে নেন ৫ উইকেট। ৪ উইকেট ১১ বার ও ৫ উইকেট নিয়েছেন ২ বার। ব্যাট হাতে করেছেন ২৭৩ রান, সর্বোচ্চ ৪৩।

টি-২০ তে মাত্র ১৯ ম্যাচ খেলেছেন এন্ডারসন। এই ১৯ ম্যাচে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। ম্যাচ সেরা ১৯ রানে ৩ উইকেট।

প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৫০ ম্যাচে ২৫ এভারেজে নেন ২৬৪ উইকেট। সেরা ইনিংস ৪২ রানে ৭ উইকেট। ৪২ বার ৪ উইকেট, ৪৮ বার ৫ উইকেট ও ৬ বার শিকার করেন ১০ উইকেট।

লিস্ট এ ক্যারিয়ারে ২৬১ ম্যাচ খেলে ২৮ এভারেজে নিয়েছেন ৩৫৮ উইকেট। ম্যাচ সেরা ২৩ রানে ৫ উইকেট। ৪ উইকেট ১১ বার ও ৫ উইকেট নেন ২ বার।

সবশেষ ২০১৫ তে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচের পর দল থেকে বাদ পড়লে এককভাবে টেস্ট ক্রিকেটেই মনোনিবেশ করেন এন্ডারসন। নিজের ফিটনেস ধরে রেখে ৩৮ বছর বয়সে এসেও নিজের সুইং বাউন্সার আর গতিতে হাটুঁ কাপাচ্ছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের। দোরগোড়ায় আছেন ৬০০ উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার। ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল বোলার নিজের ফিটনেস ধরে রেখে নিজেকে আরো ছাড়িয়ে যাবেন সেটাই ক্রিকেট ভক্তদের প্রত্যাশা।

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »