রোডসনামা

https://scontent.fdac4-1.fna.fbcdn.net/v/t1.0-9/36386236_2027432020601594_1928619179817041920_n.jpg?_nc_cat=104&_nc_eui2=AeFY40879vpUlXD3TvLuwunYiYPt9keMWugjnmsYPL9A2_cQ-azY1GmWWQy36LFNFzNLAU2kdDYB9vV9Qwdjt7cfxuFbw0DGkcoiJ24B4pOm6Q&_nc_ht=scontent.fdac4-1.fna&oh=926e9b4229d9f6e3ffd66fe5510e3767&oe=5D672D33 »

বিশ্বকাপের মাঝখানে শুরু হয়েছিলো গুঞ্জনের সুর। আর বিশ্বকাপ শেষ আর একদিনের মধ্যে সেই গুঞ্জন সত্যিতে রূপান্তরিত হলো। হ্যাঁ বলছি স্টিভ রোডের কথা। বিশ্বকাপের মাঝখানে হুট করেই অভিযোগ ওঠৈ স্টিভ রোডস গেমপ্ল্যান করতে পারে না এবং খেলোয়াড়েরা তাকে ভয় পায় না। এমন অভিযোগ ওঠার পরই গুঞ্জন শুরু হয় স্টিভ রোডসের বিদায় নিয়ে। আর গতকাল তার সাথে চুক্তি বাতিল করলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ( বিসিবি )। স্টিভ রোডস বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দায়িত্ব পায় ৭ জুন ২০১৮ সালে। আর বরখাস্ত হলেন ৮ জুলাই ২০১৯ সালে। ১বছর ১ মাসের এই স্বল্প সময় খেলোয়াড়দের বন্ধুসুলভ কোচ স্টিভ রোডস বাংলাদেশ দলের সঙ্গে ছিলেন। সেই রোডসের অধীনে কেমন ছিলো বাংলাদেশ দল? সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হল এই প্রতিবেদনে।

স্টিভ রোডসের অধীনে বাংলাদেশ দল ওয়ানডে, টেষ্ট ও টি-টোয়েন্টি খেলেছে তার সম্মিলিত পরিসংখ্যান:

ম্যাচ: ৪০
জয়: ১৮
হার: ১৮
ড্র: ২
কোনো ফলাফল হয়নি: ২

এই হচ্ছে স্টিভ রোডসের অধীনে ৩ ফরম্যাটের রেকর্ড। এবার একটু গভীরভাবে ৩ ফরম্যাটকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বিশ্লেষণ করে দেখা যাক:

প্রথমেই আসা যাক টেস্ট:
ম্যাচ: ৮
জয়: ১
হার: ৫
ড্র: ২
কোনো ফলাফল হয়নি: ১

বছরে বাংলাদেশ দল টেষ্ট ম্যাচ কম খেলে যতটা ওয়ানডে টি-টোয়েন্টি খেলে দেখা যায় তার চেয়েও কম টেষ্ট খেলে। সেদিক দিয়ে স্টিভ রোডসের এক বছর মেয়াদে টেষ্ট নিয়ে কাজ করতে পারেননি বললেই চলে। তবে যতটুকু করেছে তাতেও বাংলাদেশ দল ছিলো ব্যর্থ। ৮ টেষ্টে মাত্র ১ জয় আর জয়টা এসেছে জিম্বাবুয়ের সাথে। ওয়েষ্টার্ন ইন্ডিজের বিপক্ষে ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তো টেষ্টে জয়ই পায়নি। অর্থাৎ রোডসের অধীনে বাংলাদেশ দল টেষ্টে ছিলো ব্যর্থ।

এবার আসা যাক ওয়ানডে:
ম্যাচ: ২৯
জয়: ১৫
হার: ১২
কোনো ফলাফল হয়নি: ২

বাংলাদেশ দলের একটি প্রিয় ফরম্যাট হচ্ছে ওয়ানডে ফরম্যাট। তিতুমীর ফরম্যাটের ক্রিকেটে যদি জিজ্ঞেস করা হয় বাংলাদেশ কোন ফরম্যাটে এগিয়ে তাহলে নিঃসন্দেহে ওয়ানডে। আর তারই প্রতিফলন ঘটেছে স্টিভ রোডসের বাংলাদেশ দলের কোচিং ক্যারিয়ারে। স্টিভ রোডসের কোচিং থাকাকালীন অবস্থায় এসেছে এক সাফল্য যা অন্য কোনো কোচের সময় আসেনি। হ্যাঁ বলছিলাম আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের কথা। যা বাংলাদেশ দলের প্রথম বৈশ্বিক কোনো শিরোপা। তবে ইংলিশ কোচ বলে সকলের প্রত্যাশা ছিলো ইংলিশ কন্ডিশনে ইংলিশ কোচ নিয়ে ভালো করবে দল। তবে সেটি হয়নি। বিশ্বকাপের এসাইনমেন্টে‌ ব্যর্থ স্টিভ রোডস তবে সামগ্রিক দিক বিচারে ওয়ানডেতে সফল ছিলেন স্টিভ রোডস।

এবার আসা যাক টি-টোয়েন্টিতে:
ম্যাচ: ৩
জয়: ২
হার: ১

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট কোচ স্টিভ রোডসের সময়ে সবচেয়ে কম খেলা কোনো ফরম্যাট। বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টিতে কেমন? এ প্রশ্নটি যদি ভক্তদের করা হয় তবে একেকরকম উত্তর আসবে। কেউ বলবে বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টিতে উন্নত হয়েছে ,‌ কেউ বলবে আরো উন্নতি করতে হবে। কিন্তু স্টিভ রোডস নিয়োগ পাবার পর বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টি খেলেনি তেমন আর স্টিভ রোডসেরও কাজ করার সুযোগ হয়নি। আর যে ৩টি ম্যাচ খেলে ২জয় ও ১ হার সেটি কোচ স্টিভ রোডসের বাংলাদেশ দলে‌ নিয়োগ পাবার পর প্রথম এসাইনমেন্ট ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এক‌ কথায় বলতে গেলে টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে স্টিভ রোডসের সফল ছিলো।

বন্ধুসুলভ ও‌ ঠান্ডা মেজাজের ‌কোচ হিসেবে পরিচিত ছিলেন স্টিভ রোডস। খেলোয়াড়দের সাথে ছিলো তার বন্ধুর মতো সম্পর্ক। বাংলাদেশ দলের খেলা যখন থাকতো না তখন তিনি চলে যেতে বাংলাদেশ এ দল কিংবা হাই পারফরম্যান্স ইউনিট বা অনুর্ধ্ব-১৯ দলের খেলা দেখতে। সবসময় সকলকে পর্যবেক্ষণে রাখতেন যা একটি কোচের করা উচিত। তবে কোনো মানুষই নির্ভুল নয়। সকলের মধ্যেই কিছুনা কিছু ভুল ত্রুটি থাকেই। তবে স্টিভ রোডস যেভাবে একজন বন্ধুসুলভ কোচ হয়ে বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিয়েছিলেন এমন কোচ পাওয়া দুষ্কর। তবে স্টিভ রোডসের মেয়াদ হয়তো অল্প সময়ের ছিলো। তবে এই অল্প সময়ে সকল বাংলাদেশী ভক্তের মন জয় করেই যাচ্ছেন।

-নাসিফুল হাসান সৌমিক

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »