রানার জন্য ম্যাচটি জিততে চেয়েছিঃ আশরাফুল

সাজিদা জেসমিন »

২০০৭ সালের ১৬ মার্চ। মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান বাংলাদেশ ক্রিকেটের উড়তে থাকা এক প্রতিভা মানজারুল ইসলাম রানা। বেঁচে থাকলে হয়তো হতেন সেরাদের একজন। কিন্তু অকালেই হেরে গেলেন জীবনের কাছে। সেদিন গিয়েছিলো আরো একটি প্রাণ৷ আরেক উঠতি খেলোয়াড় সেতু। বাংলাদেশ তখন বিশ্বকাপ খেলতে পাড়ি জমিয়েছে দেশের বাইরে।

পরেরদিনই ছিলো বাংলাদেশ – ভারত গ্রুপ পর্বের ম্যাচ। জয়ের ছন্দে থাকা বাংলাদেশ দল অপার সম্ভাবনা নিয়ে বিদেশের মাটিতে গিয়েছিলো। তাই ম্যাচটা জেতার ব্যাপারেও ছিলো আশাবাদী। কিন্তু হঠাৎ করে আগের দিন একটা ফোন কলে কালো মেঘে ঘনীভূত হয় সবার মাঝে।

দলের সবার প্রিয় এক মুখ মানজারুল ইসলাম রানা প্রাণ হারিয়েছেন সড়ক দুর্ঘটনায়। একদিকে যেমন সবাই ছিলেন ব্যাথাতুর। তেমনি অন্যদিকে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে নিজেদেরকে মেলে ধরার প্রচেষ্টা। পুরো দল ঠিক করে নিয়েছিলো রানার জন্যই আমরা ম্যাচটা জিতবো। অগাধ আত্মবিশ্বাসের সাথে যুক্ত হয় শোক। দুয়ে মিলে সেদিন আরো বেশি শক্তিশালী করে তুলে সুমনের নেতৃত্বাধীন দলকে।

ক্রিকেট ভিত্তিক গণমাধ্যম ক্রিকফ্রেঞ্জির সঙ্গে সেই স্মৃতি রোমন্থন করেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তিনি বলেন- “আমরা যখন বিশ্বকাপ খেলার আগে দেশ ত্যাগ করি তখনই আমাদের ভারতকে হারানোর পরিকল্পনা ছিলো। সে ম্যাচের আগে রানা এবং সেতু ভাই মারা যায়। এ কারণে আমরা অনেকটা শোকাহত ছিলাম। সবমিলিয়ে চেয়েছিলাম ম্যাচটি জিততেই হবে। রানা আমাদের বন্ধু ছিল। তাঁর জন্যই আমরা ম্যাচটি জয়লাভ করতে চেয়েছিলাম।”

প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে শোকাতুর মাশরাফি বিন মর্তুজা একপ্রকার জিদ ধরেই বলেছিলেন – ” সুমন ভাই আমাদের ম্যাচটা জিততে হবে। রানার জন্য আমরা খেলবো।” বিশ্বকাপের আগে জয়ের ধারায় ছিলো বাংলাদেশ। তার প্রতিফলন সেই ম্যাচেও দেখা যায়৷ মাশরাফি নেন ৪টি উইকেট। আব্দুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ রফিক নেন ৩টি করে। ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় ভারত৷

আর ব্যাট করতে নেমে তামিম-সাকিব-মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরি জয়ের লক্ষ্যে নিয়ে যায় বাংলাদেশকে৷ সেই ম্যাচের ১৩বছর পেরুলো বাংলাদেশ। আজও হয়তো সেই স্মৃতি চোখে ভাসে সবার। আশরাফুল আরও বলেন- “আমরা কেনিয়া-জিম্বাবুয়েকে আগেই হারিয়েছি। প্রস্তুতি দারুণ ছিল। এরপর বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে তাদের হারাই। যদিও সেখানে ১৩ জন করে খেলেছিলাম।

বোলিংয়ে সেদিন মাশরাফি দুর্দান্ত শুরু এনে দেয়। এরপর রফিক ভাই, সাকিব, রাজ ভাইরা মিলে চমৎকার বোলিং করে। ওদেরকে ১৯১ তে থামিয়ে দেই। পরে তামিম-সাকিব-মুশফিকদের হাফ সেঞ্চুরিতে দুর্দান্ত ছিলো সবকিছু। “

সূত্রঃ ক্রিকফ্রেঞ্জি ডট কম।

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »