যে চারটি উপায়ে হারানো যাবে উইন্ডিজকে

https://scontent.fdac4-1.fna.fbcdn.net/v/t1.0-9/36386236_2027432020601594_1928619179817041920_n.jpg?_nc_cat=104&_nc_eui2=AeFY40879vpUlXD3TvLuwunYiYPt9keMWugjnmsYPL9A2_cQ-azY1GmWWQy36LFNFzNLAU2kdDYB9vV9Qwdjt7cfxuFbw0DGkcoiJ24B4pOm6Q&_nc_ht=scontent.fdac4-1.fna&oh=926e9b4229d9f6e3ffd66fe5510e3767&oe=5D672D33 »

আইসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী এবারের বিশ্বকাপে সরাসরি খেলেছে ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ে সেরা আটটি দল। বাকি দুই দল বাছাই পর্ব খেলে আসতে হয়েছে। বাংলাদেশ দল র‍্যাংকিংয়ে সাত নম্বরে থেকে বিশ্বকাপ শুরু করার ফলে খেলতে হয়নি বাছাই পর্ব। তবে বাছাই পর্ব খেলে মূল পর্বে অংশ নিয়েছে একবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজ এবং আফগানিস্তান।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড ও উইন্ডিজ এই তিন দল মিলে খেলেছে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ। ওয়ানডে ফরম্যাটের ওই সিরিজে বাংলাদেশ দল উইন্ডিজের মুখোমুখি হয়েছিল ৩ বার। ফাইনাল সহ তিন ম্যাচেই ক্যারিবিয়ানদের হারের স্বাদ দিয়েছে টাইগাররা। মূলত বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবেই ওই সিরিজটি খেলেছে উইন্ডিজ এবং বাংলাদেশ।

১৭ জুন টনটনে আবারও বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হিসেবে মাঠে নামতে যাচ্ছে উইন্ডিজ। এবার আর কোনো সিরিজ নয়। চেনা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টাইগাররা মাঠে নামছে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে। সেমি ফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে উইন্ডিজকে হারানোর কোনো বিকল্প নেই মাশরাফি বাহিনীর। ত্রিদেশীয় সিরিজের দল থেকে বর্তমান ক্যারিবিয়ান দল কয়েক গুন বেশি শক্তিশালী। কেননা দলে ক্রিস গেইল ও আন্দ্রে রাসেল যুক্ত হওয়ায় ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই শক্তি বেড়েছে তাদের।

তাহলে এই শক্ত প্রতিপক্ষকে হারানোর উপায় কি? কে-ই বা হতে পারেন তুরুপের তাস? চলুন এবার দেখে নেয়া যাক ক্যরিবিয়ানদের হারানোর উপায়গুলো।

শুরুতেই ব্রেক থ্রু আনা

ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং লাইনআপে অন্যতম প্রধান অস্ত্র হচ্ছে ক্রিস গেইল। গেইলের সাথে শাই হোপের জুটি টাইগার বোলারদের জন্য হয়ে উঠতে পারে হুমকির কারন। নিজের দিনে গেইল ব্যাট হাতে কি করতে পারে সেটা নতুন করে বলার কিছু নেই। অন্যদিকে শাই হোপ ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচেই বড় স্কোর গড়েছেন। যেখানে ছিল একটি সেঞ্চুরিও। প্রথম দশ ওভারের পাওয়ার প্লে চলাকালীন গেইল-হোপ জুটি ভাঙতে না পারলে ভয়ঙ্কর রূপ ধারন করতে পারে তারা। গত ম্যাচগুলোতে হোপ ওপেনিং না করলেও লুইস ভুগছেন রান খরায় তাই ওপেনিংয়ে গেইলের সঙ্গী হিসেবে দেখা যেতে পারে হোপকে। ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচেই সবচেয়ে সফল ছিলে হোপ। তাই তার উইকেট দ্রুত তুলে নেয়াই হতে পারে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।

 

পেস আক্রমন সামাল দেয়া

ইংলিশ কন্ডিশনে পেসাররা রাজত্ব করবে এটা ছিল অনুমেয়ই। সেই অনুমান বাস্তবে রুপও নিচ্ছে। পেসারদের শট বল মোকাবেলা করতে গিয়ে ব্যাটসম্যানরা খাবি খাচ্ছেন নিয়মিত। বাংলাদেশ দলের কথা যদি বলা হয় তাহলে চিত্রটা একই। শট কিংবা বাউন্স সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে টাইগারদের। ব্যাট হাতে সাকিব কিংবা সৌম্য কিছুটা দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন বাউন্সে কিন্তু বাকি ব্যাটসম্যানরা যেন চেষ্টাটাও করতে পারেননি ঠিক মত। ত্রিদেশীয় সিরিজে ক্যারিবিয়ানদের হয়ে বল হাতে বেশ ছন্দে ছিলেন ক্যারিবিয়ান পেসার শেলডন কটরেল। বিশ্বকাপেও ধরে রেখেছেন ধারাবাহিকতা। সাথে ওশনে থমাস বল হাতে আলো ছড়াচ্ছেন নিয়মিতই। অন্যদিকে ক্যারিবিয়ানদের বাজির ঘোড়া আন্দ্রে রাসেল তো প্রতিপক্ষকে গুড়িয়ে দিতে ওত পেতে থাকবেনই। তাই ক্যারিবিয়ানদের পেস আক্রমন সামাল দেয়াটা বাংলাদেশ দলের মূল দায়িত্ব টনটনের উইকেটে।

তামিমের রানে ফেরা

বাংলাদেশ দলের সর্বকালের সেরা ওপেনারের খেতাবটা তামিমের জুটেছে বেশ আগে থেকেই। গত বিশ্বকাপে কিছুটা ছন্দে থাকার পর এবারের বিশ্বকাপ পর্যন্তও ব্যাট হাতে ছিলেন উজ্জ্বল। তবে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চের লরাই শুরু হবার পর থেকে তামিম যেন নিজেকে হারিয়ে খুজছেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ইতোমধ্যে খেলেছে চারটি ম্যাচ। যেখানে মাঠের লরাই হয়েছিল তিনটিতে। অন্য ম্যাচটি হজম করে নিয়েছে বৃষ্টি। দুক্ষজন হলেও বাস্তবতা হচ্ছে তিন ম্যাচের কোনোটিতেই নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তামিম। তিন ইনিংসের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি ছিল মাত্র ২৪ রানের। শুরুটা মন্থর গতিতে করার পর মাতে গিয়েই নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন তামিম। নিজের এই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার ব্যাপারে হতাশাও প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে সেই হতাশা কাটিয়ে দলের প্রয়োজনে জ্বলে ওঠা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে তার জন্য। কেননা বড় স্কোর গড়ার ক্ষেত্রে ওপেনিং জুটিতে রান করা জরুরি।

স্পিন নির্ভরতা কাটানো

একটা সময় বাংলাদেশ দলের বোলিং বিভাগের নেতৃত্ব ছিল স্পিনারদের হাতেই। তবে সময় পরিবর্তনের সাথে সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশ দলের পেস অ্যাটাক এখন অনেকতা শক্তিশালী। ইংলিশ কন্ডিশনে মূলত পেসাররাই ভালো করার কথা। গতির ঝড় তুলে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ভরকে দেয়ার ক্ষেত্রে প্রধান অস্ত্র হচ্ছে পেস। তবে বাংলাদেশ দলে দেখা গিয়েছে এর উলটো চিত্র। বৃষ্টি এবং উইকেটে ঘাস থাকার ফলে যেখানে অন্যান্য দলগুলো বেশিরভাগ ম্যাচেই মাঠে নামছে চার পেসার নিয়ে সেখানে বাংলাদেশ দলে খেলছেন একজন বাড়তি স্পিনার! ব্যাটিং অর্ডার শক্তিশালী করার নামে দলে যে বাড়তি স্পিনার খেলানো হচ্ছে সেটা আদতে কতটা কাজে এসেছে তা ম্যাচগুলোর ফলাফল দেখলেই বুঝা যায়। স্পিনার হিসেবে বাংলাদেশ দলে রয়েছেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তাকে সঙ্গ দিতে দলে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে মোসাদ্দেকও খারাপ নয়। তাছাড়া মোসাদ্দেক একাদশের বাইরে চলে গেলে সেই কাজটা করতে পারেন সাব্বিরও। এরপরও কেন প্রয়োজন বাড়তি পেসার সেটা ঠিক বোধগম্য নয়। বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় কোচ সালাউদ্দিনও স্পিন নির্ভরতা দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাই উইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে একজন বাড়তি পেসার খেলানো হতে পারে সঠিক সিদ্ধান্ত।

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »