মুশফিক ভক্ত “রবির” উদারতায় হতদরিদ্র পাঁচ পরিবারের মুখে হাসি!

মারুফ ইসলাম ইফতি »

নিজের খাবার বিলিয়ে দিবো অনাহারীর মুখে!
ছোট বেলায় পাঠ্যবইয়ের কবিতার এই লাইনটি মুশফিক ভক্ত “রবি পড়েছিলেন কিনা তা জানা নেই।তবে কবিতার এই লাইনটিকে বাস্তবে রূপ দিয়ে রবি ফুটিয়ে তুলেছেন সুবিধাবঞ্চিত পাঁচটি পরিবারের মুখে হাসি!

জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের অগনিত ভক্তের মাঝে এমন একজন ভক্তের কথা বলছি, যার মুশফিকের প্রতি ভালবাসার পরিমান লিখে বুঝানো মুশকিল।এক কথায় যদি বলতে হয় তাহলে অকপটে স্বিকার করতে হয় মুশফিকুর রহিমের অন্ধ একজন ভক্ত সে।প্রিয় ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের প্রতি তার ভালবাসাও সীমাহীন।ভক্তের ভালবাসার গভীরতা চোখ এড়ায়নি মুশফিকের। যার কারনে স্বয়ং মুশফিক নিজেও তার এই ভক্তকে নিজের পরিবারের একজন হিসেবে সবসময় বিবেচনা করেন।রবির সীমাহীন ভালবাসা এবং মুশফিক তার পরিবারের একজন হিসেবে “রবিকে” মূল্যায়ন করা,এই দুইয়ের মাঝে লুকিয়ে আছে স্বার্থহীন এক ভালবাসার গল্প।

করোনার এই ক্রান্তিকালে বরাবরের মতো ভক্ত রবির পাশে অভিভাবকের মতো ছায়া হয়ে আছেন মুশফিকুর রহিম।করোনার এই মহামারি সময়টায় ভক্ত রবির পারিবারিক সকল খরচ বহন করছেন মুশফিক।রবির ভাষায় : বলতে লজ্জা নাই! মুশফিক ভাই না থাকলে আমি আর আমার অসুস্থ বৃদ্ধ “মা” না খেয়ে অনাহারে মরতাম।

উদার মুশফিকের অন্ধ ভক্ত রবি এবার নিজের প্রিয় ব্যক্তিকে অনুসরণ করে এমন একটি মহৎ কাজের জন্ম দিয়েছেন, যেটি স্বয়ং মুশফিকের কানে পৌঁছালে ভক্তের এই কাজে খুশি হওয়ার পাশাপাশি ভক্তকে নিয়ে গর্ব করতে পারেন মুশফিক নিজেই।করোনার এই ক্রান্তিকালে নিজের প্রিয় ব্যক্তি মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে নিজের জন্য পাওয়া আর্থিক অনুদান দিয়ে নিজেই এবার দাঁড়িয়েছেন হতদরিদ্র পাঁচটি প্রতিবেশী পরিবারের পাশে।নিজের পাওয়া অনুদানের অর্থ থেকে উদারতার প্রমাণ দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন হতদরিদ্র পরিবার গুলোর পাশে।এমন মানসিকতা এবং মহৎ উদ্যোগ কয়জনই বা নেয়? এই পাঁচটি পরিবারকে ত্রান উপহার দিয়ে পরিবার গুলোর কাছে নিজের প্রিয় ব্যক্তি মুশফিকুর রহিমের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেছেন রবি।

মহৎ এই উদ্যেগের ব্যাপারে জানতে চাইলে নিউজক্রিকেট টুয়েন্টিফোরকে রবি জানান: আমি ওদের জন্য কিছু করিনি, এগুলো মুশফিক ভাইয়ের ভালবাসা।ভাই আমাকে ভালবেসে যে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন, সেই ভালবাসা আমি আমার মতো আরো পাঁচটা পরিবারের সাথে ভাগাভাগি করে নিয়েছি। যেগুলো আমি উনার একজন ভক্ত হিসেবে উনাদের নিকট পৌঁছে দিয়েছি।আমার কাছে আমার মা-বাবার পর মুশফিক ভাই আমার সবকিছু।করোনার এই ক্রান্তিকালে আমি আমার অসুস্থ মা’কে নিয়ে এখনো সুস্থ সবল ভাবে বেঁচে আছি এই মানুষটার জন্য।ভাই নিয়মিত আমার খোঁজখবর নেন এবং না চাইতেই আমার পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্য করেন সবসময়।করোনার এই সময়টায় ভাই এত ব্যস্ততার মাঝেও আমার এবং আমার পরিবারের খোঁজখবর রাখছেন নিয়মিত।আমাকে ভাই বেশ কয়েকবার টাকা পাঠিয়েছে করোনার এই সময়ে। আমার এলাকার কিছু হতদরিদ্র পরিবার আমাকে বলেছে তোর তো মুশফিক ভাই আছে তোকে দেখার জন্য, আমাদের তো কেউ নেই।সম্ভব হলে আমাদের জন্য কিছু সাহায্য এনে দে।তাদের এই অসহায় অবস্থার চিত্র গুলো দেখে আমার কাছেও খারাপ লাগে।তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমার জন্য ভাই যে আর্থিক সাহায্য দিয়েছে সেখান থেকে আমি এই পরিবার গুলোর সাথেও এই মহামারি সময়ে ভাগাভাগি করে নিবো।আমার অনুদানের অর্থ গুলো থেকে আমি সাধ্যানুযায়ী পাঁচটি পরিবারের কাছে মুশফিক ভাইয়ের পক্ষ থেকে উপহার দিয়েছি,আর উনাদের বলেছি আমার মুশফিক ভাইয়ের জন্য দোয়া করতে।

রবি আরো যোগ করেন: মুশফিক ভাইয়ের জন্য আমার মতো একজন তুচ্ছ রবি আজ আমার এলাকায় মানুষের কাছে সম্মান পাই, ভালবাসা পাই, যেগুলোর মানসিক প্রশান্তি আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না।আপনারা সবাই মুশফিক ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন, উনি যেন এইভাবে মানুষের কল্যানে কাজ করে যেতে পারেন।মহান আল্লাহ’র কাছে কোটি শুকরিয়া মুশফিক ভাইয়ের মতো একজন অভিভাবক আমার জীবনের সাথে যুক্তি করার জন্য।

মুশফিক ভক্ত রবির এমন সাহসী মহৎ উদ্যেগ আমাদের সমাজের বিত্তবানদের জন্য একটা উদাহারন হতে পারে।নিজের প্রাপ্ত অনুদান দিয়ে আরো কয়েকটি পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর দায়িত্ব নিতে প্রয়োজন রবির মতো সুন্দর মানসিকতার।বিশ্বব্যাপী চলতে থাকা করোনা ভাইরাসের এই মহামারি সময়ে একজন রবির এমন সাহসী উদ্যেগ থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারেন সমাজের সামর্থ্যবান মহল।করোনার এই ক্রান্তিকালে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মানুষ যদি রবির মতো এমন মানসিকতা নিয়ে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে মহামারি এই করোনায় বিষাক্ত কালো থাবা থেকে বেঁচে যাবে হাজারো পরিবার।

মুশফিক ভক্ত রবির এই মহৎ উদ্যেগকে স্বাগত জানিয়ে নিউজক্রিকেট টুয়েন্টিফোর পরিবারের পক্ষ থেকে সমাজের সামর্থ্যবান মানুষদের প্রতি আহবান থাকবে, রবির মতো সাধারন একজন ব্যক্তির এই মহৎ উদ্যেগে যদি আপনার মনে বিন্দু মাত্রও দোলা দিয়ে যায় তাহলে আপনিও নিজের সাধ্যানুযায়ী পাশে দাঁড়ান সমাজের অবহেলিত পরিবার গুলোর পাশে।

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »