মারুফ ইসলাম ইফতি »
বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের নক্ষত্র গুলোর মধ্যে সবাচাইতে উজ্জ্বল নক্ষত্র গুলোর একটি তিনি। তিনি বাইশ গজের এক যোদ্ধা, তিনি একজন ঘাড়ত্যাড়া বিজয়ী, তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক, তিনি কোটি মানুষের ভালবাসার স্পন্দন। বলছি চিত্রা পাড়ের সেই দুরন্ত ছেলে “মাশরাফি বিন মর্তুজার” কথা।
দেখতে দেখতে টাইগারদের হয়ে রঙিন পোশাকে ১৯ বছর পার করে ২০ বছরে পদার্পণ করছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাস অন্যতম সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আজ থেকে ঠিক ১৯ বছর আগে, আজকের এই দিনে (২৩ নভেম্বর,২০০১) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। আজকের এইদিনে রঙিন পোশাকে অভিষেক হয়েছিল মাশরাফির।
২০০১ সালের ২৩ নভেম্বর চট্রগ্রামের এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামে সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে রঙিন পোশাকে অভিষেক হয় ১৮ বছরের এক টগবগে যুবকের, নাম তাঁর মাশরাফি বিন মর্তুজা। অভিষেক ম্যাচে ৮.২ ওভার বল করে ৩ মেইডেনে মাত্র ২৮ রান খরচায়, ২ উইকেট তুলে নিয়ে সবাইকে জানান দিয়েছিলেন, তিনি বিশ্ব জয়ের জন্য এসেছেন।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখন অব্দী লাল-সবুজের জার্সি গায়ে ২২০ ওয়ানডে ম্যাচ টাইগারদের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন মাশরাফি। ২২০ ম্যাচ খেলে নিজের ঝুলিতে নিয়েছেন ২৭০ উইকেট, যা কিনা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে কারো ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ উইকেট শিকার।
১৯ বছরের ক্যারিয়ারে নড়াইল এক্সপ্রেসের জন্য চরম অভিশাপ হয়ে ছিল ইনজুরি। একবার কিংবা দুইবার নয়! সাত-সাত বার সার্জারির টেবিলে ছুরি-কাচির নিচে শুতে হয়েছে তাকে। সাতটি বড় সার্জারির পরও প্রতিবার ঘাড় বাঁকা করে ফিরে এসেছেন লাল সবুজের প্রতিনধিত্ব করবেন বলে। অভিশপ্ত ইনজুরি যদি বারবার পথ আগলে না দাঁড়াতো, তাহলে আজকের দিনে জীবন্ত এই কিংবদন্তীর ক্যারিয়ারের গল্পটা আরো উজ্জ্বল থাকতো সেটাতে কোন দ্বিদা নেই।
রঙিন পোশাকে বর্ণাঢ্য ১৯ বছরের ক্যারিয়ার শেষ করে আজ কুড়ি বছরে পা রাখলেন মাশরাফি। পা গুলো বারবার বেঈমানী করার পরও ঘাড়ত্যাড়া বিজয়ীর মতো প্রতিবার ফিরে এসে, রঙিন পোশাকে পার করে ফেলেছেন দেড় যুগেরও বেশি সময়। কৈশিক এইভাবে আর কতদিন সংগ্রাম করে লাল-সবুজের পতাকার প্রতিনিধিত্ব করবেন সেটা জানা নেই, তবে বিগত ১৯ বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে যেভাবে দুহাত ভরে দিয়েছেন, তার জন্য
টুপি খোলা স্যালুট অবশ্যই প্রাপ্য এই যোদ্ধার। অকপটে স্বিকার করতে দ্বিদা নেই, মাশরাফি বিন মর্তুজারা বহু বছরে একবার জন্মায়।
নিউজক্রিকেট টুয়েন্টিফোর/ মারুফ ইসলাম ইফতি
