নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
কলকাতা থেকে ব্রিসবেন আর ব্রিসবেন থেকে মাউন্ট মঙ্গানুই গল্পটা যেন একই সুতোয় গাঁথা। দেশ, স্টেডিয়াম পাল্টালেও সময়ের ব্যবধানে বিশ্বের তিন জায়গায় ঘটলো একই গল্পচিত্র। স্বাগতিক ভারতের কাছে সফরকারী বাংলাদেশের নাকাল অবস্থা যেখানে মাত্র সোয়া দুইদিনেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে মুমিনুল হকের দল। আর ঐ দিকে বাবর আজমের শতকের পরও অস্ট্রেলিয়ার কাছে ইনিংস ব্যবধানের হার এড়াতে পারেনি সফরকারী পাকিস্তান। সবাই যখন ইনিংস হারের পরাজয়ের গল্প লিখছে সেখানে ইংল্যান্ডের গল্প লেখা বাদ থাকবে কেন? ইংল্যান্ড ইনিংস ব্যবধানে হারলেও বাংলাদেশ পাকিস্তানের থেকে গল্পটা একটু শক্তিশালী। গত কয়দিন যেন এক রীতি চালু হয়ে গিয়েছিলো যে একটা দল টস জিতবে, ব্যাটিং নিবে আর ইনিংস ব্যবধানে হারবে।
মাউন্ট মঙ্গানুইতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩৫৩ রানে অলআউট হয় ইংলিশরা৷ তাদের ৩৫৩ রানের পরিপেক্ষিতে মিচেল স্যান্টনারের সেঞ্চুরি ও ওয়াটলিংয়ের ডাবল সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় গড়ে তুলে কিউরা। ২৬২ রানের লিড নিয়ে ৯ উইকেটে ৬১৫ রান করে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে কিউরা৷ মিচেল স্যান্টনার ও ওয়াটলিংয়ের ব্যাটিং দৃঢ়তার পর বল হাতে তান্ডব চালান ওয়াগনার। গতকাল বিকেলেই তিন উইকেট হারিয়ে উইকেটটা পিছিয়ে পড়েছিলো ইংলিশরা তবে ভরসার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন জো রুট ।
আজ সকালে ব্যাট করতে নেমে সেটারও অবনতি হয়েছে। ঘন্টাখানেক ব্যাট করছিলেন স্বাচ্ছন্দ্যেই কিন্তু হঠাৎই খেই হারিয়ে বসেন ইংলিশ অধিনায়ক। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের বাহিরের শর্ট বল খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন জো রুট আর তাতেই মাত্র ১১ রান করে ফিরে যান তিনি। এক পাশে অবশ্য ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছিলেন জো ডেনলি। বেন স্টোকসকে লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার সময় অবশ্য ইনিংস হারের গন্ধ মেলেনি৷ তবে লাঞ্চের পর সেই ইনিংস হারের গল্প লেখার দায়িত্বটা নিয়ে নিলেন ওয়াগনার। লাঞ্চ থেকে ফিরে ধৈর্য হারিয়ে বসেন বেন স্টোকস। টিম সাউদির অফ স্ট্যাম্পের বল কাট করতে গিয়ে আউট হয়ে ফিরে যান ২৬ রান করে। আর তাতেই কি ইনিংস হার এড়ানোর সম্ভাবনাট ক্ষীণ হয়ে দাঁড়ায়।
শেষের দিকে কিভাবে ব্যাটসম্যানদের কিভাবে সাজঘরে পাঠাতে হয় বিষয়টা বেশ ভালোই জানা ওয়াগনারের। আর তার যথাযথ প্রয়োগটাও মাঠে করে দেখালেন তিনি। হাফ পিচে বল ফেলে তা বাউন্স করে জো ডেনলিকে খেলতে বাধ্য করলেন ওয়াগনার আর তাতেই সফলতা। ইনিংস বাচানোর জন্য যা দরকার ছিলো তাই করে যাচ্ছিলেন তিনি আর ইতিমধ্যেই খেলে ফেলেছিলেন ১৪২ বল। তবে অভাব ছিলো একজন ধৈর্যশীল সঙ্গীর।
এরপর এক স্লোয়ার ফুলটসে ফেরান অলি পোপকে।
৮ উইকেট হারিয়ে চা বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড। আর তখন সামনে পুরো এক সেশন হাতে ২ উইকেট আর এক পরাজয়ের গল্প। শেষের দিকে জোফরা আর্চার ও স্যাম কুরান চীনের প্রাচীর গড়ার চেষ্টা করলে তাতেও গল্প কথার ভিন্নতা আনতে পারেনি তারা। দুইজনে মাঠে ছিলেন ১৬ ওভার তাতেও ঠেকাতে পারেনি ইনিংস পরাজয়। ৩০ রান করে জোফরা আর্চার বিদায় নিলে পরের বলেই ব্রডকে এলবিডব্লিউ করে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের গল্প লিখেন ওয়াগনার ও কিউরা। মাত্র ১৯৭ রানে অলআউট হয় ইংলিশরা। ব্রডকে এলবিডব্লিউ করার মধ্য দিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন। টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলো নিউজিল্যান্ড।
স্কোরকার্ড:
ইংল্যান্ড : ৩৫৩/১০ ও ১৯৭/১০
নিউজিল্যান্ড : ৬১৫/৯