শোয়েব আক্তার »
টাইগারদের লাকি গ্রাউন্ড চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ও ভাগ্য ফিরলোনা টুর্ণামেন্টে এখনও জয় শূণ্য থাকা সিলেট থান্ডারের। নুরুল হাসান হোসান ও লেন্ডন সিমন্সের ব্যাটিং দৃঢ়তায় বঙ্গবন্ধু বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট থান্ডার কে ৪ উইকেটে হারিয়ে টুর্ণামেন্টে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। একই সাথে টুর্ণামেন্টে টানা চতুর্থ পরাজয় বরণ করলো সিলেট।
১২৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সিলেট কে দারুণ শুরু এনে দেন দলের বোলার’রা। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ১২ রানের মাথায় ও ব্যক্তিগত ৫ রানে আভিস্কা ফার্নেন্দ কে সাজঘরে পাঠান সান্টোকি।
টুর্ণামেন্টে দূর্দান্ত ফর্মে থাকা ইমরুল কায়েস(৬) কে ও আব্দুল মাজিদের ক্যাচ বানিয়ে আউট করে লো-স্কোরিং ম্যাচে প্রতিদ্বন্দিতা এনে দেন একই বোলার।
পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কে মাত্র দুই রানে আউট করে ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স কে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ইবাদত হোসেন।
ইনিংসের নবম ওভারের শেষ বলে চাভাক ওয়ালটন কে ব্যক্তিগত ৯ রানে আউট করে ম্যাচে দারুণ রোমাঞ্চ এনে দেন সিলেট থান্ডারের তৃতীয় পেসার দেলোয়ার হোসেন।
তবে উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়ে যাচ্ছিলেন লেন্ডন সিমন্স। ৩ বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৭ বল থেকে ৪৪ করে ১২ তম ওভারের পঞ্চম বলে নুরুল হাসানের সাথে ভুল বুঝাবুঝি তে রান আউটে কাটা পড়েন সিমন্স।
১৩ তম ওভারে মুক্তার আলী কে শুন্য রানে এল বি ডব্লিউর ফাদে ফেলে আউট করে ম্যাচ কে নিজেদের দিকে অনেকটা-ই টেনে নেন সান্টোকি।
কিন্তু, শেষ পর্যন্ত নুরুল হাসান সোহান ও কেসরিক উইলিয়ামের ব্যাটিং দৃঢ়তায় জয় তুলে নেয় স্বাগতিক চট্টগ্রাম। নুরুল হাসান ৩ ছয় ও ২ চারের সাহায্যে ২৪ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকেন এবং কেসরিক উইলিয়ামসন ২ ছয় ও ১ চারের সাহায্যে ১৭ বলে অপরাজিত ১৮ রান করেন।
সিলেট থান্ডারের পক্ষে ক্রিসমার সান্টোকি ৪ ওভার বল করে ১৩ রানে ৩ টি উইকেট লাভ করেন। এছাড়া ইবাদত হোসেন চার ওভার বল করে ২৮ রান দিয়ে ১ টি এবং দেলোয়ার হোসেন চার ওভার বল করে ৩১ রানে ১ টি উইকেট লাভ করেন।
এর আগে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বোলারদের বোলিং তোপে পড়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে মাত্র ১২৯ রান সংগ্রহ করতে পারে সিলেট থান্ডারের ব্যাটসম্যান’রা।
দলীয় ১৩ রান ও ব্যক্তিগত ২ রানে মেহেদি হাসান রানার বলে বোল্ড হয়ে আউট হয়ে যান রণি তালুকদার। রুবেল হোসেনের করা পরের ওভারের চতুর্থ বলে মাত্র ছয় রান করে উইকেট কিপার নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ওয়ান ডাউনে খেলতে নামা শফিকউল্লাহ।
চট্টগ্রামের বোলারদের আটোসাটো বোলিং এ মেন্ডেটরি প্লাওয়ার প্লে তে মাত্র ৩০ রান সংগ্রহ করতে পারে সিলেট থান্ডার।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে আন্দ্রে ফ্লেচার ও মোহাম্মদ মিথুন ৩৩ বলে ৩৯ রানের জুটি গড়ে শুরুর ব্যাটিং বিপর্যয় সামাল দেন। দশম ওভারের প্রথম বলে মুক্তার আলীর স্লোয়ারে বোকা বনে সরাসরি বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান আন্দ্রে ফ্লেচার। আউট হওয়ার আগে ৩২ টি বল মোকাবেলা করে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৮ রান সংগ্রহ করেন তিনি।
মেহেদি হাসান রানার করা ইনিংসের বারো তম ওভারের প্রথম ও শেষ বলে মোহাম্মদ মিথুন-১৫(১৭) ও জনসন চার্লস-৩(৯) আউট হয়ে গেলে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় সিলেট থান্ডারের।
তবে,অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত নাইম হাসান কে সঙ্গে নিয়ে আবারও ইনিংস মেরামতের চেষ্ঠা করেন। দুজনে মিলে গড়ে তুলেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৪০ রানের জুটি। রুবেল হোসেনের করা ১৮ তম ওভারের শেষ বলে মেহেদি হাসান রানার হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৬ বল থেকে ১১ রান করে নাইম হাসান আউট হয়ে গেলে এ জুটি ভাঙ্গে।
পরের ওভারের তৃতীয় বলে কেসরিক উইলিয়ামসনের বলে বোল্ড হয়ে আউট হয়ে যান দলের অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। দুই চারের সাহায্যে ২২ বলে ৩০ রান সংগ্রহ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পক্ষে মেহেদি হাসান রানা ৪ ওভার বল করে ১ টি মেডেন সহ মাত্র ২৩ রান দিয়ে ৪ টি উইকেট শিকার করেন। রুবেল হোসেন ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ২ টি উইকেট লাভ করেন। মুক্তার আলী ও কেসরিক উইলিয়ামসন ৪ ওভার বল করে যথাক্রমে ২৬ ও ৩১ রান দিয়ে ১ টি করে উইকেট লাভ করেন। এছাড়া কোন উইকেট না পেলে ও ৪ ওভার বল করে ১ টি মেডেন সহ মাত্র ১৭ রান দেন স্পিনার নাসুম আহমদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট থান্ডার:১২৯/৮(২০)
আন্দ্রে ফ্লেচার-৩৮(৩২),মোসাদ্দেক সৈকত-৩০(২২)
মেহেদি হাসান রানা-২৩/৪(৪),রুবেল হোসেন-২৮/২(৪)
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স:১৩০/৬(১৮)
লেন্ডন সিমন্স-৪৪(৩৭),নুরুল হাসান-৩৭(২৪)*
ক্রিসমার সান্টোকি-১৩/৩(৪),এবাদত হোসেন-২৮/১(৪)
ফলাফল:চট্টগ্রাস চ্যালেঞ্জার্স ৪ উইকেটে জয়ী।