ধারাবাহিক লিটনের যে রহস্য!

সাজিদা জেসমিন »

সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ক্লাসি ব্যাটসম্যানদের একজন মনে করা হয় তাকে। মোটামুটি প্রায়ই শটই ব্যাট হাতে খেলতে পারেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিসংখ্যান বরাবরই অনেক ভালো। ব্যাট হাতে যেদিন জ্বলে উঠেন, দেখা মেলে দৃষ্টিনন্দন সব স্ট্রোকস এবং চার-ছক্কার দুর্দান্ত ইনিংস। এ যেন চোখের প্রশান্তি।

হ্যাঁ! বলছি লিটন কুমার দাসের কথা। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেন দেখা গেছে এ-র উল্টোটাই। বেশিরভাগ ইনিংসেই উপরের দিকে মারতে গিয়ে ক্যাচ হাতে ফিরে গেছেন। এজন্য অবশ্য সমর্থকমহলে অভিযোগের শেষ নেই। বেশিরভাগ ইনিংসে অকালেই মাঠ ছেড়ে গেছেন।

তবে জিম্বাবুয়ে সিরিজে দেখা গেছে নতুন এক লিটনকে। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত টাইমিং আর পারফেকশনে ভরা ইনিংস। এ যেন নতুন করে লিটনের ক্রিকেটে উত্থান ঘটেছে। দৃষ্টিনন্দন শটে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন সবার হৃদয়ে। প্রতিটা ইনিংসে বেশ মনোযোগী ভঙ্গিতে খেলেছেন। দৃঢ়তা আর বড় ইনিংস খেলার পরিকল্পনায় মেতে উঠেছিলেন। যার ফলে সাফল্য ধরা দিয়েছে অনায়াসেই।

৩ ফরম্যাট মিলিয়ে এই সিরিজে করেছেন ৫০০ এ-র কাছাকাছি রান। শেষ কবে লিটনকে এরকম ধারাবাহিক দেখা গেছে? লিটন নিজেই শোনালেন সাফল্যের কথা। সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রত্যাশার ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, ‘না ভাই। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে এমন প্রত্যাশা কখনই ছিল না।’

নিজের অবস্থান সম্পর্কে লিটন বলেন, ‘আজকের ম্যাচের কথা ভাবতে গেলে, অনেক সহজ ছিল। তবে ব্যাটিং করা সহজ ছিল না। প্রত্যেকটা বলই ছিলো চ্যালেঞ্জিং। তবে কোন চাপ বা তাড়াহুড়ো ছিল না। আমার জন্য সহজ ছিল। সব মিলিয়ে ভালোই কেটেছে ।’

কিছুদিন আগেই ক্রিকেটকে হতাশার মন্তব্য করা লিটনের এই সিরিজ শেষে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বলেন- ‘একটি সিরিজ দিয়ে বিবেচনা করা যায়না। এটি ভালো কেটেছে , তাই বলে কি কথা পাল্টে ফেলা সম্ভব? আবারো খারাপ সময় আসতে পারে। তখন কী মন্তব্য করবো? আসলে ক্রিকেটে উত্থান -পতন থাকবেই।’

জিম্বাবুয়েকে অত্যন্ত দুর্বল ভাবা হয় সাম্প্রতিক সময়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই দলটির বোলিং লাইনআপ কেমন ছিলো/ লিটনের কাছে চ্যালেঞ্জিং ছিলো কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘হ্যাঁ তাদেরর বোলিং খুব অ্যাটাকিং নয়। তবে সাফল্যর জন্য মূল কর্তব্য নিজের উপর ফোকাস রাখা। প্রতিপক্ষ যেমনই হোক না কেন? প্রতিদ্বন্দ্বী বোলার হিসেবে সামনে এমপফু না, মিচেল স্টার্ক যেই হোন না কেন? ফোকাসটা একই রাখা একান্তই প্রয়োজনীয়।’

নিজেকে সেরা ভাবতে নারাজ লিটন। তবে শোনালেন সাফল্যের পিছনে দৃঢ়তার গল্প, ‘এর পূর্বেও আমি পারফরমেন্স করেছি। রান এসেছে। তবে এক ম্যাচ ভালো করলে একটু বেশি রিলাক্স হয়ে যেতাম। কিছুটা হলেও ফোকাস কমতো। মনে হতো এক ম্যাচে রান পেয়েছি। পরের ম্যাচেও হয়ে যাবে। তবে এবার পুরো সিরিজে আমি যথেষ্ট ফোকাস ছিলাম নিজের প্রতি। শট সিলেকশনেও মনোযোগী ছিলাম।’

লিটনের এখন সামনে ফোকাস নিজের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ধরে রাখার প্রতি।

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »