দ্বিতীয় বিশ্বকাপ

নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »

১৯৭৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ বা প্রুডেন্সিয়াল বিশ্বকাপ ‘৭৯ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আয়োজিত ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার ২য় আসর। ১৯৭৯ সালের ৯-২৩ জুন প্রতিযোগিতাটি ২য় বারেরও মতো ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়।

আগের বিশ্বকাপের ন্যায় এ প্রতিযোগিতার ধরন ও নিয়মাবলী অপরিবর্তিত রাখা হয়। প্রতিটি দল ৬০ ওভারের খেলায় অংশ নেয়। সনাতনী ধাঁচের সাদা পোষাক এবং লাল বল ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি খেলাই দিনের বেলায় এবং খুব সকালে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে অংশ নেয় কানাডা।

নিউজ ক্রিকেট টোয়েন্টি ফোর ডট কমের পাঠকদের আজ জানাবো, ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপের কিছু কথা…

১৯৭৯ সালে প্রুডেনশিয়াল বিশ্বকাপের আগে, অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায়ী ও চ্যানেল নাইনের স্বত্তাধিকারী কেরি প্যাকারের ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেট, কাঁপিয়ে দেয় পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে। যদিও বিশ্বকাপ শুরুর আগে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডের (সিএ) সাথে কেরি প্যাকার সমঝোতায় আসেন।

তারপরও বিদ্রোহী টুর্নামেন্টে খেলার অপরাধে ইয়ান চ্যাপেল ও গ্রেগ চ্যাপেল, ডেনিস লিলি, রডনি মার্শের মত তারকাদের ছাড়া অস্ট্রেলিয়া ও টনি গ্রেগ-ডেরেক আন্ডারউডদের ছাড়া বিশ্বকাপের দল সাজায় ইংল্যান্ড। আগের আসরের মত এবারের বিশ্বকাপেও অংশ নেয় ৮টি দেশ।

প্রথমবারের মত আয়োজিত আইসিসি ট্রফির চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা ও রানার্স আপ কানাডা অংশ নেয় এই আসরে। ইংল্যান্ডের ৫টি শহরের ৬টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপের মোট ১৫টি ম্যাচ। বিশ্বকাপের ২য় আসরে ৪ ম্যাচে ২৫৩ রান করে সর্বোচ্চ রানের মালিক হন গর্ডন গ্রিনিজ।

আর ১০৮ গড়ে ২১৭ রান করেন ভিভ রিচার্ডস। আর ইংল্যান্ডের মাইক হেন্ড্রিক ১০টি উইকেট নিয়ে হন সেরা বোলার। এ গ্রুপ থেকে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান এবং বি গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ড।

তবে গ্রুপ পর্বে ক্রিকেট বিশ্ব সাক্ষী হয় এক অঘটনের। শক্তিশালী ভারতকে ৪৭ রানে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করে শ্রীলংকা। তবে সেমিফাইনালে হয়নি কোনো অঘটন। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও, পুরো আসরে দাপটের সঙ্গে খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজ টানা দ্বিতীয় ও স্বাগতিক ইংল্যান্ড প্রথমবারের মত জায়গা করে নেয় ফাইনালে।

প্রথম বিশ্বকাপে ৪ ম্যাচ খেলে মাত্র ৩৮ রান করলেও, এই আসরে স্বমহিমায় ভাস্বর স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস। ১৯৭৯ সালের ২৩ জুন ঐতিহাসিক লর্ডসের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় ৯৯ রানে প্যাভিলিয়নে গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স, ক্লাইভ লয়েডের মত তারকারা। কিন্তু তখনো উইকেটে ছিলেন ভিভ রিচার্ডস ও কলিস কিং। অনেকটা রাজার মতই ৬৬ বলে ৮৬ রানেই এক ইনিংস খেলেন কিং।

অন্যদিকে, লর্ডস সাক্ষী হয় ভিভ রিচার্ডসের এক অতিমানবীয় ইনিংসের। ২য় ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে ফাইনালে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন ভিভ। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা মেরে অপরাজিত থাকেন ১৩৮ রানে। দলকে এনে দেন ২৮৬ রানের সংগ্রহ। ক্যারিবিয়দের বিশ্ব সেরা পেস অ্যাটাককে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি থ্রি লায়ন্সরা।

জোয়েল গার্নার-কলিন ক্রাফট-মাইকেল হোল্ডিং ও অ্যান্ডি রবার্টসদের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে বয়কট-বোথাম-গুচরা। ১৯৪ রানে থামে ইংল্যান্ড। ফলে ৯২ রানের জয়ে, বিশ্ব শ্রেষ্ঠত্ব থেকে যায় ক্যারিবিয়ানদের কাছেই।

এক নজরে ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপঃ
আয়োজক দেশঃ ইংল্যান্ড
চ্যাম্পিয়নঃ ওয়েস্টইন্ডিজ।
রানার্স আপঃ ইংল্যান্ড
মোট অংশগ্রহণকারী দেশঃ ৮টি
মোট ম্যাচঃ ১৫টি
সর্বোচ্চ রানঃ ২৫৩, গর্ডন গ্রিনিজ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
সর্বোচ্চ উইকেটঃ ১০টি, মাইক হেনড্রিক (ইংল্যান্ড)
ফাইনালে ম্যাচ সেরাঃ ভিভ রির্চাডসন (১৩৮ রান)।

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »