দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করতে চান আফতাব খান অমি

দুর্জয় দাশ গুপ্ত »

বিপিএলের নতুন দল দুর্দান্ত ঢাকা। আগের ফ্র্যাঞ্চাইজি ঢাকা ডোমিনেটর্স এর পরিবর্তে এবার বিপিএলে ঢাকার প্রতিনিধিত্ব করবে দুর্দান্ত ঢাকা নামক এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। দুর্দান্ত ঢাকা’র কর্ণধার আফতাব খান অমি যিনি একজন ক্রিকেট সংগঠক, ছোটবেলা থেকেই পারিবারিকভাবে ক্রিকেটের প্রতি রয়েছে তার সখ্যতা। তবে এবারই প্রথম বিপিএলের মত একটি বড় টুর্নামেন্টে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। মুঠোফোনে নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডট কমের প্রতিনিধি দুর্জয় দাশ গুপ্ত কথা বললেন আফতাব খান অমি’র সাথে। তিনি জানালেন দেশের ক্রিকেটের সাথে জড়িয়ে যাওয়ার গল্প আর নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডট কমের পাঠকদের জন্য হুবহু সাক্ষাৎকার পর্ব তুলে ধরা হলো।

 

প্রশ্নঃ কেমন আছেন? বর্তমান ব্যস্ততা কি নিয়ে?

আফতাব খান অমিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। ব্যস্ততা বলতে আসলে ব্যবসায়ীক কিছু কাজ আর বিপিএলকে সামনে রেখে সবকিছু গুচাচ্ছি। এই আরকি।

প্রশ্নঃ ক্রিকেটের সাথে সংশ্লিষ্টতা কিভাবে? কিভাবে জড়ালেন?

আফতাব খান অমিঃ অনেক আগে থেকেই আমি খেলাধুলার সাথে জড়িত। আমি চট্টগ্রামে বেশ কিছু স্পোর্টস ইভেন্টের সাথে জড়িত অনেক আগে থেকেই। আমার বাবার নামে টুর্নামেন্টেরও আয়োজন করেছি। এছাড়া বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ, বঙ্গমাতা কাপ থেকে শুরু করে অনেকগুলো টুর্নামেন্টে সরাসরি আমি জড়িত। আর ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ভালোলাগা কাজ করে। খালেদ মাহমুদ সুজন ভাই সহ তখনকার বাংলাদেশ দলটাকে দেখেই আমরা বড় হয়েছি। সে সময় থেকেই ইচ্ছে ছিলো ক্রিকেটের জন্য কিছু করবো। আমার বাবা শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। পারিবারিকভাবেই আমাদের স্পোর্টসের সাথে সখ্যতা। জাতীয় পর্যায়ে এখন প্রথমবারের মত আসলেও এর আগে থেকেই ক্রিকেটের সাথে জড়িত আছি।

প্রশ্নঃ বিপিএলে প্রথমবারের মত যুক্ত হওয়ার অনুভূতিটা জানতে চাইবো। এবং একইসাথে পুরো প্রক্রিয়াটাও জানতে চাইবো।

আফতাব খান অমিঃ অবশ্যই খুব ভালো একটা অনুভূতি। আমার একটা লক্ষ্য হচ্ছে আমাদের লোকাল প্লেয়ারদের জন্য কাজ করা। যদি দেখা যায় পাঁচটা প্লেয়ারও আমার জন্য ভালো জায়গায় সুযোগ পাচ্ছে নিজেদের মেলা ধরার সেটাই হবে আমার সার্থকতা। ক্রিকেটে উন্নয়নেই কাজ করতে চাই। আর বিপিএল অবশ্যই বড় একটা মঞ্চ। এখানে নিজেকে প্রমাণ করারও অনেক কিছু আছে। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি যদিওবা আরেকটা গ্রুপের মালিকানায় ছিলো কিন্তু উনারা না থাকায় এবার আমার সুযোগ এসেছে কাজ করার। আমি আগ্রহী ছিলাম আগে থেকেই। বলা যায় সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। অবশেষে সে সুযোগটা এসেছে। এখন নিজেকে প্রমাণ করার পালা।

প্রশ্নঃ একটা দলের মালিক হিসেবে প্লেয়ার্স ড্রাফটে বসার অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিলো? আর আপনি কি সন্তুষ্ট নিজের দলের স্কোয়াড নিয়ে?

আফতাব খান অমিঃ দলের মালিক হিসেবে ড্রাফটে বসার অনুভূতিটা দারুণ। আমি আসলে খুব বেশি এক্সাইটেড ছিলাম। অপেক্ষা ছিলাম ড্রাফটের আগের দিন পর্যন্ত। সুজন (খালেদ মাহমুদ) ভাইয়ের সাথে প্ল্যান করেছি কিভাবে কি করা যায় এসব নিয়ে। ড্রাফটের আগের কয়েকদিন আমি এসবেই সময় দিয়েছি। সুজন ভাইও আমাকে অনেক কিছুই বুঝিয়েছেন যেহেতু বিপিএলে আমি নতুন। উনি অনেক সাহায্য করেছেন। ভালো একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। আর স্কোয়াডের কথা যেটা বললেন আমাদের স্কোয়াডে কিন্তু এখনো ঘাটতি রয়েছে। ড্রাফট থেকে আমরা সুযোগ অনুযায়ী প্লেয়ার নিয়েছে। ড্রাফটে দেখা যায় অনেক সময় চাইলেও ভালো প্লেয়ার নেয়া যায় না সুযোগ থাকে না বলে। যেহেতু এখনো চার মাসের মত সময় বাকি আছে আমরা চেষ্টা করছি ভালো কিছু সাইনিং করাতে। যেসব জায়গায় ঘাটতি আছে সেসব জায়গার জন্য প্লেয়ারের খোঁজ করছি।

প্রশ্নঃ আপনার দলে তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলামের মত দুজন পেস বোলার আছেন যারা বর্তমানে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়া ফর্ম বিবেচনায় বর্তমানে তারা দুজন বাংলাদেশের সেরা দুজন পেসার বলাই যায়। এ ব্যাপারটা কিভাবে দেখছেন?

আফতাব খান অমিঃ এটা অবশ্যই আমার জন্য একটা বড় পাওয়া। আসলে আগের ফ্র্যাঞ্চাইজিটা না থাকলেও আমি ঢাকার দায়িত্ব নেয়ার পরে দেখলাম এ দুজনকে রিটেইন করার সুযোগ আছে। তখন আমি এ দুজনকে রিটেইন করলাম। তাসকিন ও শরীফুল দারুণ করছেন বর্তমান সময়ে। আমার দলের জন্য অনেক বড় সম্পদ হতে পারেন এ দুজন। স্পিনার হিসেবে আরাফাত সানীকে পেয়েছি। অবশ্যই এটা আমাদের জন্য ভালো কিছু। তাসকিন আর শরীফুল বিশ্বকাপ খেলে আসবে, ভালো রিদমে থাকবে অবশ্যই ভালো কিছু হবে।

প্রশ্নঃ বিপিএলের মাধ্যমে দেশের ক্রিকেটের জন্য কাজ করার সুযোগ পেলেন। ভবিষ্যতেও কি এই ধারা বজায় থাকবে?

আফতাব খান অমিঃ ইনশাল্লাহ, আমার এখন যেমন চেষ্টা আছে, সামনে আরো ভালো কিছু করার প্ল্যান করছি। বিপিএলে আরো দুই বছর কাজ করার সুযোগ পেয়েছি বলে ভালো লাগছে। যদি দুই বছর পরেও দেখি সবকিছু ঠিকঠাক ভালো চলছে আর বিসিবিও (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) আমার উপর ভরসা করছে তাহলে কেন নয়? এছাড়া বিশ্বকাপের পরে আমি তাসকিন ও শরীফুলকে নিয়ে সারা বাংলাদেশে একটা পেস বোলিং হান্ট করতে যাচ্ছি। বিশ্বকাপের পরেই এটার কাজ শুরু করবো। আমি চাই একদম প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে যেন সত্যিকারের প্রতিভাটা সারা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারি। এছাড়া আমি সবসময়ই আমাদের লোকাল প্লেয়ারদেরকে অগ্রাধিকার দেবো। আমার চেষ্টা থাকবে যেন ক্রিকেটের মাধ্যমে দেশের জন্য কিছু করতে পারি।

– নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডট কমকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

আফতাব খান অমিঃ আপনাকেও ধন্যবাদ। আমার জন্য দোয়া করবেন যেন দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করতে পারি।

 

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »