শোয়েব আক্তার »
মেহেদি হাসান রানা ও রুবেল হোসেনের বোলিং নৈপুন্যে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স কে ১৬ রানে হারিয়ে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখলো স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্চার্স। অপর দিকে হারের বৃত্ত ভাঙ্গতে পারে নি কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স।
২৩৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরটা মুটামুটি ভালোই হয়েছিলো কুমিল্লার। প্রথম দুই ওভারে ২০ রান সংগ্রহ করলেও ইনিংসের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বলে জোড়া আঘাত হানেন মেহেদি হাসান রানা।
সৌম্য সরকার কে ১৫(৮) ও রাজাপাকশে কে ৬(৮) রানে আউট করে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স কে বড় ধাক্কা দেন রানা। এক ওভার পর নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে এসে আবারও চট্টগ্রাম কে সাফল্য এনে তিনি। এবার তাঁর শিকার সাব্বির রহমান ৫(৫)।
দশম ওভারের শেষ বলে ১৭ বলে ২১ রান করা ইয়াসির আলী কে নুরুল হাসানের ক্যাচ বানিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান রুবেল হোসেন। কার্যত তখন ই ম্যাচ জয়ের ক্ষীণ সম্ভাবনা ও ম্লান হয়ে যায় কুমিল্লার।
তবে, উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলে যাওয়া ডেভিড মালান খেলেন লড়াকু এক ইনিংস। ৫ টি ছয় ও ৭ টি চারের সাহায্যে ৩৮ বলে ৮৪ রানের ইনিংস খেলে মুক্তার আলীর বলে ওয়ালটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান তিনি। এরপর দাসুন অধিনায়ক শানাকা ২১ বলে ৩৭ রান করে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলে তা কুমিল্লার জয়ের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২২ রান স্কোর বোর্ডে জমা করতে পারে কুমিল্লা।
চট্টগ্রামের পক্ষে মেহেদি হাসান রানা ৪ ওভার বল করে মাত্র ২৮ রানে ৪ টি উইকেট লাভ করেন। এছাড়া রুবেল হোসেন ৩০ রানে ১ টি, কেসরিক উইলিয়ামস ৫১ রানে ১ টি ও মুক্তার আলী ৫৫ রানে ১ টি উইকেট লাভ করেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে চ্যাডউইক ওয়ালটন, ইমরুল কায়েস, আভিস্কা ফার্নেন্দ ও নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটি তান্ডবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৩৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্চার্স। মাত্র দুই রানের জন্য বিপিএলের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ টপকাতে না পারলেও এবারের আসরের দলীয় সংগ্রহ গড়ে নেয় তারা।
শুরু টা অবশ্য খুব একটা ভালো হয় নি চট্টগ্রামের। তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে লেন্ডন সিমন্স কে আউট করে কুমিল্লা কে প্রথম সফলতা এনে দেন মুজিবুর রহমান। তবে চট্টগ্রামের রান সংগ্রহে তা বিন্দু মাত্র প্রভাব ফেলেনি।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আভিস্কা ফার্নেন্দ ও ইমরুল কায়েস ৪৯ বলে ৮৫ রানের জুটি গড়ে চট্টগ্রাম কে বড় সংগ্রহের ভীত গড়ে দেন তাঁরা। ব্যক্তিগত ৪৮(২৭) রানে সৌম্য সরকারের বলে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফার্নেন্দ আউট হয়ে গেলে এ জুটি ভাঙ্গে।
ফার্নেন্দ আউট হয়ে গেলে ও ক্রিজের অপর প্রান্তে দ্বায়িত্বশীল ব্যাটিং করে এবারের বিপিএলের দ্বিতীয় অর্ধ-শতক তুলে নেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ৪১ বলে ৬২ রান করে দাসুন শাকানার বলে সুমন খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনি আউট হয়ে যান।
মাঝখানে নাসির হোসেন আউট হয়ে গেলে চ্যাডউইক ওয়ালটন ও নুরুল হাসান সোহান মাত্র ৩৪ বলে ৯৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি দলকে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ২৩৮ রানের বিশাল সংগ্রহ এনে দেয়।
ওয়ালটন মাত্র ২৭ বল মোকাবেলা করে ৫টি চার ও ৬টি বিশাল ছয়ের সাহায্যে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন। অপরদিকে নুরুল হাসান সোহান ১৫ বল থেকে ২৯ রান সংগ্রহ করেন যেখানে সমান সংখ্যক ২ করে চার, ছয়ের মার ছিল।
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের পক্ষে সৌম্য সরকার ৩ ওভার বল করে ৪৪ রানে দুটি, মুজিবুর রহমান ৪ ওভার বল করে ৩১ রানে ১ টি ও দাসুন শানাকা ৪ ওভার বল করে ৪৭ রানে ১ টি উইকেট লাভ করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স:২৩৮/৪(২০)
চ্যাডউইক ওয়ালটন-৭১(২৭), ইমরুল কায়েস-৬২(৪১)
সৌম্য সরকার-৪৪/২(৩), মুজিবুর রহমান-৪৭/১(৪)
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স:২২২/৭(২০)
ডেভিড মালান-৮৪(৩৮), দাসুন শানাকা- ৩৭(২১)
মেহেদি হাসান রানা-২৮/৪(৪), রুবেল হোসেন-৩০/১(৪)
ফলাফল:চট্টগ্রাস চ্যালেঞ্জার্স ১৬ রানে জয়ী।