নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
ক্রিকেট “রাজার খেলা” বলে পরিচিত। ক্রিকেট জন্ম দিয়েছে অনেক মহাতারকাকে। ক্রিকেট খেলায় অনেকে এসেছে সাধারণ হয়ে কিন্তু দিনকে দিন সে নিজেকে ছাড়িয়ে হয়ে গিয়েছে তারকা থেকে মহাতারকা। আর বিদায়ের সময় বীরের বেশে বিদায় নিয়েছে। ক্রিকেটে শচীন, লারা, পন্টিং এরা যদি হয় সেরা ছাত্র আর তাদের এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হচ্ছেন ডব্লিউ জি গ্রেস। হ্যাঁ ডব্লিউ জি গ্রেস এই নামটির সাথে অনেকেই পরিচিত আবার অনেকে হয়তো এই নামটি কখনো শুনেন নি। তাই আজ এই লেখায় জানাবো ক্রিকেটের প্রথম মহাতারকা ডব্লিউ জি গ্রেসের আদ্য পাদ্য সব।
ক্রিকেটে প্রচলন শুরু হয় ১৮৬৫ সালের দিকে এইটা বিশ্বাস করেন ক্রীড়া লেখক থেকে শুরু করে ক্রীড়া গবেষক সকলে। তবে অনেক জায়গায় প্রচলিত আছে ১৬৫০ – ১৭০০ সালের মধ্যে ক্রিকেট খেলার প্রচলন হয় তবে ব্যাপকভাবে সকলে জানে যে ১৮৬৫ সালের দিকে ক্রিকেট খেলার প্রচলন হয়। আর সেসময় ক্রিকেট এতটা ভালো কেউ পারতো না। আর সেসময় ডব্লিউ জি গ্রেস ছিলেন অনন্য প্রতিভার অধিকারী। আর তাকে তো এজন্য ” ক্রিকেটের পিতামহ” বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
এ পর্যায়ে ডব্লিউ জি গ্রেসের সম্পূর্ণ পরিচয়টা দিয়ে নেয়া যাক। ডব্লিউ জি গ্রেস তার সংক্ষিপ্ত নাম। তার পুরো নাম হচ্ছে উইলিয়াম গিলবার্ট গ্রেস। তিনি ১৮৪৮ সালের ১৮ই জুলাই ডাউনএন্ডে ব্রিস্টলে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম হেনরি গ্রেস এবং তার মায়ের নাম মার্থা গ্রেস। তার বাবার পেশায় ছিলেন ডাক্তার।
তার কিছু ডাক নাম রয়েছে তা হলো: ডব্লিউ জি, দ্যা ডাক্তার, দ্যা চ্যাম্পিয়ন, দ্যা বিগ আন, দি ওল্ড ম্যান। তিনি একজন অলরাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং ডানহাতি মিডিয়াম বোলার ( রাউন্ড আর্ম ধরন )। তার দুই ভাই ই. এমন গ্রেস এবং ফ্রেড গ্রেস। তিনি তার ক্যারিয়ারে যে কয়টি দলের হয়ে খেলেছেন তা হলো: ইংল্যান্ড জাতীয় দল, জেন্টেলম্যান, গ্লুচেস্টারশায়ার, লন্ডন কাউন্টি, মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব, সাউথ অফ ইংল্যান্ড। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় ১৮৮০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অষ্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। তিনি ইংল্যান্ডের ২৪ তম টেস্ট ক্রিকেটার। ডব্লিউ জি গ্রেসের দুই সন্তান ছিলো সিবি গ্রেস ও ডব্লিউ জি গ্রেস জুনিয়র। গ্রেস পেশায় একজন ডাক্তার ছিলেন। তিনি ক্রিকেট ক্যারিয়ার ১৮৬৫ সাল থেকে ১৯০৮ সাল অবধি চালিয়ে গিয়েছেন।
ডব্লিউ জি গ্রেস এত ক্রিকেটার থাকতে কেন গ্রেস সাহেব ক্রিকেটের প্রথম মহাতারকা? এ প্রশ্নটি অবশ্যই আসতেই পারে। আসুন জেনে নেয়া যাক কেন গ্রেস এত জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি পেশায় ডাক্তার হলেও ক্রিকেট যেন ছিলো তার আত্মার মতো। সবচেয়ে বেশি বয়সে অবসর নেয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে তৃতীয় হচ্ছেন গ্রেস। বর্তমানে যে পিচে খেলা হয় সেখানে থাকে রানের ফুলঝুরি। সেখানে ব্যাটসম্যানেরা রানের বন্যা বসিয়ে দেন। কিন্তু আগের আমলের ক্রিকেটে পিচ এখনকার মতো ছিলো না। পিচ ছিলো অনেক লোক। এই লোক পিচে রান করা ছিলো অনেক কষ্টসাধ্য। রান করা যেন পাহাড়সম ব্যাপার ছিলো। বোলাররা সুবিধা পেত। আর সে আমলে ব্যাটসম্যানরা অনেক ব্যর্থ ছিলেন। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিলেন ডব্লিউ জি গ্রেস। তার ব্যাট যেন পিচকে কামড়ে রাখতো। আর তাকে যেন আউট করা এক পাহাড় টপকানোর সমান ছিলো। গ্রেসের বাবার নেতৃত্বে মাত্র ৯ বছর বয়সে পশ্চিম গ্লসটার্সের বিরুদ্ধে প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ খেলার সুযোগ পান গ্রেস। ১৮৭৪ সালে ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক ছিলেন জর্জ পার। গ্রেসের মা মার্থা গ্রেস জর্জ পারকে চিঠি লিখেছিলেন। চিঠি পড়ে জর্জের মন ছুঁয়ে যায়। জর্জের জন্য ১৬ বছর বয়সে ডব্লিউ জি গ্রেসকে জেন্টেলম্যান দলে নেয়া হয়। জেন্টেলম্যান দল পেম্নোয়ারের বিপক্ষে কখনোই জিততে পারতো না। এমনকি ১৫ জন নিয়ে ফিল্ডিং করলেও পারতো না। তবে ড্রেসের উপস্থিততে রূপ যেন বদলে গেল। গ্রেস একাই আধিপত্য বিস্তার শুরু করলেন। জেন্টেলম্যান দল না যেন গ্রেসকে সামলানো কষ্ট হচ্ছিলো পেম্নোয়ারের। আর গ্রেসের মনোমুগ্ধকর খেলায় একতরফা আধিপত্যের পতন হয়। আরেকটি মজার বিষয় হচ্ছে গ্রেসের বয়স যখন মাত্র দুই বছর তখন তার হাতে একটি ব্যাট তুলে দেয়া হয় আর সেই ব্যাংকটি তার জীবনের শেষ পর্যন্ত রান তোলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। ডাক্তার সাহেব গ্রেস ছিলেন একজন পুরো জম্মুর অ্যাথলেট। তিনি ১৮ বছর বয়সে ৪০০ মিটার হার্ডলিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। এছাড়া তিনি ফুটবল খেলেছিলেন ওয়ান্ডার্স এফসির হয়ে। তখনকার দিনে সেরা অ্যাথলেটদের তালিকায় ছিলো তার নাম।
আমরা ডব্লিউ জি গ্রেসের আরো অনেক কিছু জানবো তবে এবার দেখে নেয়া যাক তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার কেমন ছিলো। ডব্লিউ জি গ্রেস ইংল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে টেস্ট অভিষেক হয় ১৮৮০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ওভারে। আর তিনি জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ১৮৯৯ সালের ১লা জুন অষ্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নটিংহ্যামে। তবে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট চালিয়ে গিয়েছেন ১৮৬৫ পাল থেকে ১৯০৮ সাল অবধি। তিনি একজন অলরাউন্ডার ছিলেন। ব্যাটে ও বলে সমান পারদর্শী ছিলেন গ্রেস। গ্রেস জাতীয় দলের হয়ে ২২টি ম্যাচ খেলেছেন। ব্যাটিংয়ে তিনি ৩৬টি ইনিংস খেলেছেন, অপরাজিত ছিলেন ২ বার, রান করেছেন- ১০৯৮, সর্বোচ্চ- ১৭০, গড় ছিলো- ৩২.২৯, হাফ সেঞ্চুরি : ৫টি ও সেঞ্চুরি করেছেন: ২টি। বোলিংয়ে ১৩টি ইনিংস বল করেছেন, বল করেছেন- ১১১ ওভারে, রান দিয়েছেন: ২৩৬, উইকেট নিয়েছেন- ৯টি, এক ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগার: ২/১২, এক টেষ্টে সেরা বোলিং ফিগার: ৩/৬৮, ইকোনমি: ২.১২।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন এই গ্রেস। গ্রেস প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৮৭০টি ম্যাচ খেলেছেন। ব্যাটিংয়ে ১৪৭৮টি ইনিংস খেলেছেন, অপরাজিত ছিলেন: ১০৪ বার, রান: ৫৪২১১, সর্বোচ্চ: ৩৪৪, গড়: ৩৯.৪৫, হাফ সেঞ্চুরি: ২৫১, সেঞ্চুরি: ১২৪। বোলিংয়ে বল করেছেন: ২০৮০৫.১ ওভার, রান দিয়েছেন: ৫০৯৮০, উইকেট নিয়েছেন: ২৮০৯টি, সেরা বোলিং ফিগার: ১০/৪৯, ইকোনমি: ২.৪৫, ৫ উইকেট নিয়েছেন: ২৪০টি ও ১০ উইকেট নিয়েছেন: ৬৪টি। ব্যাটিং বোলিং এর মতো ফিল্ডিংয়েও উজ্জ্বল ছিলেন গ্রেস। জাতীয় দলের হয়ে ৩৯টি ক্যাঁচ নিয়েছেন। আর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনি ৮৭৬টি ক্যাঁচ লুফে নিয়েছেন। মজার একটি বিষয় হলো তিনি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে উইকেট কিপারের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ৫টি স্টাম্পিং করেছেন। তিনি জীবনের প্রথম টেস্টে চিরশত্রু অষ্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি ( ১৫২ ) হাঁকান। জাতীয় দলের হয়ে যে ২২টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তার সর্বশেষ ১৩টি ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন ডব্লিউ জি গ্রেস। তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ২২টি টেস্টের ২০টি তিনি অ্যাশেজ সিরিজ খেলেছে। যার মধ্যে রান করেছেন ৯০১, সর্বোচ্চ: ১৭০, হাফ সেঞ্চুরি: ৫টি ও সেঞ্চুরি: ১টি। ১৯ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৯টি টেস্ট খেলেছেন ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডে এবং বাকি ৩টি ম্যাচ খেলেছেন ঘরের বাইরে অষ্ট্রেলিয়াতে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৫৪ হাজার ২১১ রানের মালিক সে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় পঞ্চম স্থানে গ্রেস। তিনি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৮০৯টি উইকেট নিয়েছেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারে দশম স্থানে। এছাড়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ক্যাচ নেয়া দ্বিতীয় ক্রিকেটার গ্রেস।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রেসের একটি চেহারা সকলের কাছে কমবেশি পরি
চিত। বেশ বয়স্ক এক লোক। মোটা এবং ভুড়িটা যেন বেল্ট দিয়ে আটকে রেখেছেন। এটি তার ক্যারিয়ারের শেষ সময়কার। তিনি তরুণ বয়সে ছিলেন বেশ অ্যাথলেটিক ফিগার। গ্রেসের ফুটওয়ার্ক ছিলো সত্যি মনোমুগ্ধকর। ফ্রণ্ট ফুট ব্যাক ফুট সকল কিছুতে পারদর্শী ছিলেন। তার মতো এতো ফিট ও দুর্দান্ত খেলোয়াড় সেসময় ছিলো না। আকাশে যাত্রার আগে তার মতো এতো পথ পাড়ি দেয়নি কেউ। তিনি এতটাই ক্রিকেট প্রেমী ছিলেন যে সুযোগ পেলে ক্রিকেট খেলা ছাড়তেন না। ১৮৭১ এবং ১৮৭৬ সালে তিনি এত রান করেছিলেন যে সেসময় তার পরের ব্যাটসম্যানদের রান তার অর্ধেকের কম। তার ক্যারিয়ারে তিনি যত রান ও উইকেট নিয়েছেন তা বর্তমান সময়ে অনেক অভাবনীয় মনে হতে পারে। তাহলে ভেবে দেখুন তো সেই আমলে দর্শকদের কেমন লাগতো তার খেলা। ডাক্তার হলেও তার ক্যারিয়ারে আয়ের মূল উৎস ছিলো এই ক্রিকেট। যেসব ম্যাচে তিনি খেলতেন সেই ম্যাচগুলোতে আয় হতো অনেক বেশি। আর দর্শকরা গ্রেসের খেলা দেখার জন্য মাঠে আসতো। আর আয়োজকরা টিকেটের দামটাও বাড়িয়ে দিত। মজার বিষয় তার বিয়ের হানিমুন তিনি স্পন্সরের টাকায় করেছিলেন।
গ্রেস সাহেবের খেলা দেখার জন্য আসতো সে আমলের দর্শকেরা। আর ডব্লিউ জি গ্রেস ছিলেন যেন নিজেই আইন প্রণেতা। তিনি যা বলতেন তা ছিলো আইন। তার ছিলো স্বৈরাশাসনমূলক আচরণ। আর তা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে। চলুন তাকে নিয়ে যে কাহিনী প্রচলিত আছে তা একটু শুনে আসা যাক।
একবার এক আম্পায়ার গ্রেসকে এলবিডব্লিউ আউট দেন এরপর গ্রেস আম্পায়ারের কাছে গিয়ে বলেন যে দর্শক তোমাকে দেখতে মাঠে আসেনি। দর্শক আমাকে দেখতে মাঠে এসেছে।
আরেকবার গ্রেস বোল্ড হয়ে যান। পড়ে যাওয়া বেলগুলো তুলে যথাস্থানে রেখে আবারো খেলা শুরু করেন নতুন করে কেউ কিছু বলার সাহস করেনি।
এবারের ঘটনাটি মজার এক খেলায় টানা দুইবার বোলার এলবিডব্লিউ এর আবেদন করে তা দেখে গ্রেস আম্পায়ারকে ভয় দেখান। পরের বলটিতে গ্রেস বোল্ড হন এবং দুটি স্ট্যাম্পে পড়ে যায়। বোলার ইশিরায় গ্রেসকে বোঝান তুমি তো যাচ্ছো না তখন গ্রেস জানান আরো একটি স্ট্যাম্প বাকি আছে।
আরেকবার তো তিনি স্কোর বোর্ড বদলে দিয়েছিলেন। চলুন শুনে নেয়া যাক ঘটনাটি। এক ম্যাচে তিনি নিশ্চিত আউট ছিলেন কিন্তু আম্পায়ার আউট দেননি।
এরপর তিনি ব্যাট করছিলেন তো করছিলেন থামার কোনো নাম গন্ধ ছিলো না। তিনি টানা ৩ দিন ব্যাট করার কারণ ছিলো তিনি সেই টেস্ট চলাকালীন একটি টেলিগ্রাম পান যে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো বাবা হয়েছেন। এরপর মাঠেই শ্যাম্পেনের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম উদযাপন করেন। এরপর ঘোষণা দেন নতুন রেকর্ড গড়তে চান। তিনি হয়তো ৪০৪ রানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর ভাঙ্গার কথা বলেছিলেন। ১৮৪৮ সালে এডমন্ড টাইলকট এই রেকর্ডটি গড়েছিলেন। আয়োজকদের মাথায় হাত তারা ভাবছে এতে হয়তো শেষ দিন দর্শক হবে না। যে কথা সেই কাজ ঠিক দর্শক কম হয়। এরপর গ্রিমসবি বোলাররা টার্গেট করা শুরু করে গ্রেসের বোলারদের টার্গেট করা। শেষ অবধি ৪০৪ রানের রেকর্ড ভাঙা হয়নি তার। ৪০০ রান করতে পারেনি। ৩৯৯* যে অপরাজিত থাকে। তিনি নিজে গিয়ে স্কোর বোর্ড ৪০০ করতে বলেছিলেন। আর তারাও সেটি করে। আপনারা বলতে পারেন এটা স্বৈরাচারী কাজ ঠিক কিনা। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে সে আমলে তার মতো খেলোয়াড় ছিলো না। এক ম্যাচে প্রতিপক্ষরা তাকে আউট করার জন্য তার কাছে অনুরোধ করে ২২ জন ফিল্ডার দাঁড় করানোর। সে তাতে হাসিমুখে সায় দেয়। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে ২২ জন ফিল্ডার নিয়েও তাকে আটকাতে পারে নি।
এই মানুষটি সত্যিকারের ক্রিকেটের প্রথম মহাতারকা। সেই আমলে ক্রিকেটকে টাইমপাসের খেলা হিসেবে ধরা হতো। আর ডব্লিউ জি গ্রেস এই ক্রিকেটকে টাইম পাসের খেলা থেকে সত্যিকারের খেলার মর্যাদায় রূপান্তর করে। মানুষ সে আমলে মাঠে খেলা দেখতে আসতো গ্রেসের জন্যই। তিনি মানুষকে বিশ্বাস করিয়েছেন এই ক্রিকেটটা শুধু টাইমপাসের জন্য নয়। এই মহান ক্রিকেটার ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন সবধরনের খেলা থেকে ১৯১৪ সালের ৮ আগস্ট বিদায় নেন। সে ম্যাচে ব্যাটিং বা বোলিং কোনোটাই করেননি। এরপরের বছর ১৯১৫ সালের ২৩শে অক্টোবর মটিংহ্যাম কেন্টে তিনি ৬৭ বছর ৯৭ দিন বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ক্রিকেট খেলা যতদিন থাকবে ততদিন এই ডব্লিউ জি গ্রেসকে সকলে মনে রাখবে। তিনি ক্রিকেটের প্রথম মহাসারথী। তিনি ক্রিকেটের প্রথম মহাতারকা।