নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ স্পিনার তিনি। তাকেই কিনা বড়সড় অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে খারাপ খেলার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এমন স্বীকারোক্তি করেই ক্রিকেট বিশ্বে চাঞ্চল্য ফেলে দিলেন শ্যেন কিথ ওয়ার্ন। ১৪৫ টেস্টে ৭০৮ উইকেট নেয়া মহাতারকা কেরিয়ারের শুরুর দিকে অবশ্য এমন প্রস্তাব পেয়েছিলেন। তাকে বুকির তরফে বলা হয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে করাচি টেস্টে খারাপ বল করলেই মিলবে ২ লক্ষ ৭৬ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় বর্তমানে যা দুই কোটি ৩৭ লাখ টাকারও বেশি।
সেই বুকির নাম-ও জানিয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন কিংবদন্তি। তিনি তৎকালীন পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন সেলিম মালিক। ১৯৯৪-এ শ্যেন ওয়ার্ন এবং টিম মে-র কাছে তিনি প্রস্তাব রেখেছিলেন স্ট্যাম্পের বাইরে বাইরে বল করলেই মিলবে বিপুল অর্থ।
করাচি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য একসময় প্রয়োজন ছিল মাত্র ৮ উইকেট। সেই টেস্টের ফলাফলের আগেই শ্যেন ওয়ার্নকে গড়াপেটার প্রস্তাব দেন মালিক। সেই সময় ওয়ার্নের অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে বার্ষিক চুক্তি ছিল ২৫-৩০ হাজার ডলার। তিনি সরাসরি এই প্রলোভন উপেক্ষা করে যান। ‘জানি না, সেই প্রস্তাব পেয়ে কী বলব। আমি স্রেফ বিমূঢ় হয়ে ওখানে বসে ছিলাম। তারপর তাকে বলি- ধুস, তোমাদের আমরা হারাবোই।’
২০০০ সালের শেষের দিকে গড়াপেটায় ধরা পড়েন সেলিম মালিক। আজীবন নির্বাসন জোটে তার। একদিনের ক্রিকেটে ৭১৭০ রান এবং টেস্টে ১৫ শতরান সহ ৫৭৬৮ রান করেছেন সেলিম মালিক।
ওয়ার্ন অস্ট্রেলিয়ার এক ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন, ‘এখন ফিক্সিংয়ের কথা বললে, লোকে ধরেই নেয় তা হবে না। তবে ৩০ বছর আগে সেরকম কোনো আলোচনাই হতো না। কোনো খেলাতেই তখন বিষয়টা এত মাথাচারা দেয়নি। আমি যখন এমন প্রস্তাব পেলাম, তখন আমার মনের অবস্থা অনেকটা- কী যে বলো, ধরনের। আমি স্রেফ ছিটকে গিয়েছিলাম। কী বলব, ভেবেই পাচ্ছিলাম না।’
এমন নজিরবিহীন অফার পেয়ে শ্যেন ওয়ার্ন এবং টিম মে সঙ্গে সঙ্গেই দলের অধিনায়ক মার্ক টেলর এবং কোচ ববি সিম্পসনকে জানান। জানানো হয় ম্যাচ রেফারি জন রেইডকেও। ওয়ার্ন জানান, ‘টাকা পাওয়ার জন্য খারাপ বোলিং করতে পারব না।’ ওই টেস্টে ওয়ার্ন ৮ উইকেট শিকার করে ম্যাচের সেরা হয়। তবে সাড়া জাগানো সেই ম্যাচ জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ইনজামাম উল হক এবং ১১ নম্বর ব্যাটার মুস্তাক আহমেদ শেষ উইকেটে ৫৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে এক উইকেটে জয় এনে দেন।
কার্যত জেতা ম্যাচ হেরে বসায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন ওয়ার্ন। পাকিস্তানের জয়ের পরে সেলিম মালিককে শুনিয়ে বলে দিয়েছিলেন, ‘একদমই হারাটা উচিত হয়নি আমাদের।’ ওয়ার্ন অবশ্য সেই হারের কারণও জানিয়েছেন পরে। বলেছেন, ‘ইনজামাম উল হককে বেশ কয়েকবার লেগ বিফোর করলেও আম্পায়াররা সাড়া দেননি। সেই সময় নিরপেক্ষ আম্পায়ার কার্যত ছিলই না।’
তবে ওয়ার্নের ওই দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।