উড়ে গেল বাংলাদেশ, ভারতের জয় ৭ উইকেটে

দুর্জয় দাশ গুপ্ত »

ভারতের ম্যাচ জিততে প্রয়োজন ৭ রান, কোহলির সেঞ্চুরির জন্য প্রয়োজন ৮। স্ট্রাইকে থাকা কোহলি দারুণ রানিং বিটুইন দ্যা উইকেটে দুটো ডাবল নিলেন, কোহলি ছাড়া অন্য যেকোনো ব্যাটার হলে এখানে ডাবল হবে এমনটা চিন্তাও করতে পারতেন না হয়তো। কোহলি ডাবল নিলেন, ওভারের শেষ বলে সিঙ্গেলও নিলেন। শেষে সমীকরণ গিয়ে দাঁড়ায় ভারতের প্রয়োজন ২ রান, কোহলির ৩। বোলার নাসুম আহমেদ ইচ্ছে করে একটা ওয়াইড ডেলিভারি করলেন কিন্তু আম্পায়ার সেটাকে ওয়াইড হিসেবে বিবেচনা করলেন না। পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ৩৭ হাজার দর্শক “কোহলি, কোহলি” বলে চিৎকার করতে শুরু করলেন। পরের বলটায় ডাউন দ্যা উইকেটে এসে দারুণ এক ছয়। ভারতের জয় নিশ্চিত হলো একইসাথে শতক পূর্ণ হলো কোহলিরও। পুরো ম্যাচ জুড়ে যে অপূর্ণতা ছিলো সেটা যেন পূর্ণ হলো ঐ মুহূর্তে।

দারুণ এক ব্যাটিং স্বর্গে বাংলাদেশের দেয়া ২৫৭ রানের লক্ষ্যটা মামুলিই ছিলো ভারতের জন্য। ভারতীয় দুই ওপেনার যেভাবে শুরু করলেন যেন মনে হলো ৪০০ রানের লক্ষ্যমাত্রাকেও সহজেই টপকে যাওয়া সম্ভব এই উইকেটে। রোহিত-গিলের টি-টোয়েন্টি মেজাজের ব্যাটিংয়ে প্রথম দশ ওভারেই ম্যাচ থেকে পুরোপুটি ছিটকে যায় বাংলাদেশ। তারপরও বাংলাদেশি ভক্তরা হয়তো কোনো এক মিরাকেলের আশায় টিভি সেটের সামনে থেকে উঠেননি। ৮৮ রানে ভারতের প্রথম উইকেটের পতনের পর ক্রিজে আসেন কোহলি, তখন ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৬৯ রান। সেই ১৬৯ রানের ১০৩ রান আসলো কোহলির ব্যাট থেকে। উইকেটে এসেই চড়াও হলেন পেসার হাসান মাহমুদের উপর। দুটো ফ্রি হিটের দুটোকেই করলেন বাউন্ডারি ছাড়া। মাঝে বাংলাদেশের প্রাপ্তি বলতে মেহেদি হাসান মিরাজের দুটো উইকেট শিকার। শুভমান গিল আর শ্রেয়াস আইয়ারের উইকেট তুলে নিয়ে কেবল হারের ব্যবধানটা খানিকটা কমাতে পেরেছেন মিরাজ। ক্যারিয়ারের ৪৮তম শতক পাবার দিন কোহলি ছিলেন অনবদ্য। পুনের দর্শকদের হতাশ করেননি ভারতীয় এই লিভিং লিজেন্ড।

২৫৬ রানের পুঁজি নিয়ে বল করতে নামা বাংলাদেশি বোলাররা শুরু থেকেই ছিলেন অগুছালো। একের পর এক বাউন্ডারি বল দিয়ে হজম করেছেন একের পর এক বাউন্ডারি। বোলিং ইনিংসে কোন প্রতিরোধই গড়তে পারেননি মুস্তাফিজ-শরীফুলরা।

চার ম্যাচের চারটাতেই জয় ভারতের। অন্যদিকে বাংলাদেশের আরো এক করুণ পরাজয়। মাঠ এবং মাঠের বাইরে বাংলাদেশের সময়টা যে কঠিন থেকেও আরো কঠিনতর হচ্ছে। এমন হারে সেমিফাইনালের সমীকরণটা আরো কঠিন হয়ে পড়লো চান্ডিকা হাথুরুসিংহে’র দলের। অথচ এ বিশ্বকাপকে ঘিরে দেশের কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর কত স্বপ্নই না ছিলো। কোচ ও ক্যাপ্টেন বলেছিলেন আগের বিশ্বকাপগুলোতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি বলতে ছিলো তিনটা করে জয়। এবার এরচেয়েও ভালো কিছু করার প্রত্যয় নিয়েই ভারতে আসে টিম টাইগার্স। কিন্তু মাঠের ক্রিকেট বলছে বাংলাদেশ যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলছে সেখানে অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোও তাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »