আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের ১৫ বছর

নিউজ ডেস্ক »

অভিষেকেই মাঠ কাপানো ক্রিকেটারের আগমন বাংলাদেশ ক্রিকেটে কম হয়নি, বরং হরহামেশাই দেখা যায় অভিষেক ম্যাচে চমক জাগানিয়া পারফরম্যান্স। তবে তার আগমন ছিলো একেবারেই সাদামাটা, ব্যাট হাতে ৩০ রান এবং বল হাতে চিগাম্বুরার উইকেট দিয়ে শুরু হয়েছিলো তার ক্যারিয়ার। দিনটা ছিল ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট। কে জানতো সেদিন অভিষেক হওয়া এই লিকলিকে ছেলেটি কয়েক দিন পরে বিশ্ব ক্রিকেট দাপিয়ে বেড়াবে? বনে যাবে বিশ্বসেরা?

মাগুরায় ফুটবলার মাশরুর রেজার ঘর থেকে উঠে আসা ছেলেটির, ছোট বেলায় ফুটবলার হতে চাওয়া ছেলেটি হয়েছেন দেশের সেরা ক্রিকেটার। বিকেএসপির নেটে একটু ব্যাট করার জন্য চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকা ফয়সাল বনে গিয়েছেন আজকের বিশ্বসেরা সাকিব আল হাসান।মাগুরা থেকে মিরপুর স্টেডিয়ামের পথটা মোটেও মসৃণ ছিলো না তার জন্য, তবে বলের ঘূর্ণি , ব্যাটের তেজ, সাথে ক্রিকেটীয় পরিকল্পনা তাকে বসিয়েছে বিশ্বের রাঘব বোয়ালদের মাথায়। ক্রিকেট পারায় এখন রেকর্ড বুক ঘাটলে লাল সবুজের পতাকার বাহক সাকিব আল হাসান নামটি চোখে আসবে বারবার। আজকের এই অবস্থানে আসতে সাকিবকে করতে হয়েছে তীব্র পরিশ্রম, অজস্র অধ্যবসায়, এবং ক্রিকেট এর প্রতি অফুরন্ত ডেডিকেশন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিব আজ পার করেছেন ১৪ বছর, পদার্পন করলেন ১৫ বছরে। ১৪ বছরে সাকিব নিজেকে নিয়েছেন অন্য উচ্চতায়, দেশকে চিনিয়েছেন বিশ্ব দরবারে। সেই ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট থেকে ২০২০ পর্যন্ত বরাবরই জ্বলজ্বল করেছে মহারাজার ব্যাট বল।২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে হারানো ম্যাচে ব্যাট হাতে সাকিবের ছিলো দুরন্ত ইনিংস, যা ম্যাচ জয়ে রাখে বড় অবদান।২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। অধিনায়ক সাকিব পারফর্ম করেছেন একজন অধিনায়কের মতোই।

ড্যানি মরিসনের মুখ থেকে বাংলাওয়াশ শব্দটা শুনার মুহূর্তের কথা করো ভুলে যাওয়ার কথা না, সেবার সাকিবের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে নিউজিল্যান্ড কে প্রথমবারের মতো হোয়াইট ওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। ২০১২ এশিয়া কাপ ফাইনালে সাকিব মুশফিকের কান্নার কথা মনে আছে নিশ্চয়? ১ রানের আক্ষেপ এখনো পোরায় এদেশের ক্রিকেট ভক্তদের, সেবার এশিয়া কাপের ফাইনালে দলকে তুলতে সব থেকে বড় অবদান ছিল এই সাকিব আল হাসানেরই।

সাকিব বারবার ছড়িয়ে গিয়েছেন নিজেকে, দেশকে এনে দিয়েছেন অজস্র সাফল্য। ২০০৯ সালে প্রথমবার বসেছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের আসনে। এরপর হয়েছেন প্রথম ও একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটের সেরা অলরাউন্ডার। এতো সাকিবের সাফল্যের বিন্দু মাত্র তুলে ধরার চেষ্টা মাত্র, তার সাফল্য গাঁথা লিখতে গেলে ফুরিয়ে যাবে কালী। একজন সাকিব আল হাসানকে লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা অসম্ভব।

সাকিবের আজকের অবস্থানে আসার পিছনে বাধা এসেছে অনেক, ২০১৪ সালে এসেছিল নিষেধাজ্ঞা, বাধা পেরিয়ে সাকিব আল হাসান ফিরেছিলেন নবাবের বেশে। ২০১৯ সাকিবকে আবারো পাঠিয়েছে বনবাসে , ভক্তদের বিশ্বাস সাকিব এবার ফিরবেন আরো কঠিন ভাবে, আরো বিষাক্ত হয়ে। যে বিষ পুড়িয়ে ছারখার করবে প্রতিপক্ষকে। সাকিব ফিরবেন রাজার বেশে, সাকিব ফিরবেন সাকিবের মতো করেই, তিনি ফিরবেন সাথে বাঘের গর্জন নিয়ে, আগের সেই আত্মবিশ্বাস এবং সেই আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে।

নিউজ ক্রিকেট/সুফিয়ান

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »