২০১১: শচীনের বিদায় বিশ্বকাপে ভারতের দ্বিতীয় শিরোপা

https://scontent.fdac4-1.fna.fbcdn.net/v/t1.0-9/36386236_2027432020601594_1928619179817041920_n.jpg?_nc_cat=104&_nc_eui2=AeFY40879vpUlXD3TvLuwunYiYPt9keMWugjnmsYPL9A2_cQ-azY1GmWWQy36LFNFzNLAU2kdDYB9vV9Qwdjt7cfxuFbw0DGkcoiJ24B4pOm6Q&_nc_ht=scontent.fdac4-1.fna&oh=926e9b4229d9f6e3ffd66fe5510e3767&oe=5D672D33 »

২০১১ সালের বিশ্বকাপটা ছিলো ভারতীয় লিজেন্ড শচীন রমেশ টেন্ডুলকারের শেষ বিশ্বকাপ। আর নিজের শেষ বিশ্বকাপটাকে স্মরণীয় করে রাখলেন সোনালী সেই ট্রফিটা ছুঁয়ে। আর এটাই ছিলো ভারতীয়দের দ্বিতীয় বিশ্ব শিরোপা। সেবারই বিশ্বকাপে যুক্ত হয় রিভিউ আবেদন। সহযোগী আয়োজক হিসাবে থাকে টিম বাংলাদেশ। আগের বিশ্বকাপ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকা নিয়মিত আয়োজনে আজ জেনে নিবো ২০১১ সালের বিশ্বকাপের খুঁটিনাটি।

১৯৮৭ ও ১৯৯৬ সালের পর তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আয়োজক হয় ভারতীয় উপমহাদেশ। ভারত, শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের আয়োজক হয় বাংলাদেশ। আসরে ভারতের ৮টি, শ্রীলঙ্কার ৩টি, বাংলাদেশের দুটি ভেন্যু ব্যবহার করা হয়। আসরের মাসকট ছিলো স্ট্যাম্পি। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয় ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে।

ইতিহাসের দশম বিশ্বকাপে টেস্ট প্লেইং ১০ টি দেশের সাথে অংশ নেয় আইসিসি ট্রফি খেলে আসা আরো ৪টি দেশ। মোট ১৪ টি দল দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নেয় প্রথম পর্বে। মোট ৪৯ ম্যাচের এই আসরে প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ ৪টি অংশ নেয় কোয়ার্টার ফাইনালে। যেখানে গ্রুপ “এ” থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কাটে পাকিস্তান। আর, একই গ্রুপ থেকে তাদের সঙ্গী হয় শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। অন্যদিকে, গ্রুপ “বি” তে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে কোয়ার্টার ফাইনালের মঞ্চে ওঠে ভারত, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০ উইকেটে হারের লজ্জা দেয় পাকিস্তান। আর নিজেদের পকেটে পুরে নেয় সেমিফাইনালের টিকিট। আরেক সেমিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনালে পা রাখে ধোনির ভারত। পাশাপাশি, দক্ষিণ আফ্রিকার চোকার্স উপাধিও বজায় থাকে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ায়। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা কিউইদের কাছে ৪৯ রানে হেরে সেবারের মতো বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করে। সেই সাথে আরেক কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়ে সেমিতে নাম লেখায় লঙ্কানরা।

প্রথম সেমিফাইনালে কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। আগে ব্যাট করে কিউইদের করা ২১৭ রান টপকাতে মাত্র ৫ উইকেট খরচ হয় লঙ্কানদের। আর, দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান। যেখানে বিশ্ব আবারো দেখতে পায় শচীনের ব্যাটের যাদু। ভারতের ছুড়ে দেয়া ২৬১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে যুবরাজের বোলিং জাদুতে পাকিস্তানকে ২৩১ রানে অল আউট করে দিয়ে ফাইনালের মঞ্চে জায়গা করে নেয় ভারতীয়রা। সেই সাথে অক্ষত থাকে বিশ্বকাপের মঞ্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতীয়দের অপরাজিত থাকার রেকর্ডও।

২রা এপ্রিল মুম্বাইয়ের ওয়াংখের স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হয় মাহেলা-সাঙ্গার শ্রীলঙ্কা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাহেলা জয়াবর্ধনের সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ভারতের সামনে ২৭৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় তারা। জবাবে, শুরুতেই ভারতীয়রা শচীনকে হারালেও গম্ভীর ও অধিনায়ক ধোনীর ব্যাটে চড়ে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়েই ইতিহাস সৃষ্টি করে ভারত। জিতে নেয় নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা। ধোনি ব্যাটের জয় সূচক ছয়ের মারটি আজও ভারতীয়দের যোগায় নিখাদ বিনোদনের খোরাক।

আসরের সেরা ক্রিকেটার হবার গৌরব অর্জন করেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো অলরাউন্ডার যুবরাজ সিং। আসরে ৫০০ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের খেতাব জেতেন লঙ্কান ব্যাটসম্যান তিলকারত্নে দিলশান। আর, সমান ২১ উইকেট শিকার করে উইকেট শিকারিদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি ও ভারতের জহির খান।

এক নজরে ২০১১ সালের বিশ্বকাপ
আয়োজক দেশ : ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ
অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা : ১৪
মোট ম্যাচ : ৪৯
টুর্নামেন্টের ধরণ : রাউন্ড রবিন ও নক আউট
পর্ব চ্যাম্পিয়ন : ভারত
রানার আপ : শ্রীলঙ্কা
সর্বোচ্চ রান : শ্রীলঙ্কার তিলকারত্নে দিলশান (৫০০)
সর্বোচ্চ উইকেট : ২০ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি ও ভারতের জহির খান।
ফাইনালে ম্যাচ সেরা : ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি
টুর্নামেন্ট সেরা : ভারতের যুবরাজ সিং।

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »