নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
বাংলাদেশ দল ভারতের সাথে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি ও দুইটি টেস্ট খেলতে ভারতে অবস্থান করছে। যদিও এই সিরিজটির আগে বাংলাদেশ দল সবচেয়ে বেশি মিস করবে তাদের টি-টোয়েন্টি ও টেষ্ট দলের অধিনায়ক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। আগামী এক বছর সাকিব আল হাসানকে মিস করবে বাংলাদেশ দল। যদিও সাকিব আল হাসানের অভাব দলে থাকবেই তারপরও দলকে এগিয়ে যেতে হবে। এই ভারত সিরিজে দলকে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ নিতেই হবে বলা যায়। যেহেতু টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে শুরু হচ্ছে এই হাইভোল্টেজ ভারত সফর তাই এই টি-টোয়েন্টি নিয়ে আমাদের আজকের ফিচার।
ফুটবলের আঁতুড়ঘর যদি ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকাকে বলা হয় তবে ক্রিকেটের আঁতুড়ঘর হবে অবশ্যই এশিয়া। টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্ত ১২টি দলের ৫টি দল এশিয়ার। আর এশিয়াতে সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ছিলো একসময় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। তবে এখন তা দিন বদলের মতো করে বদলেছে লড়াইয়ের মঞ্চ। আর বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার লড়াই সবচেয়ে বেশি আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। আর দর্শকদের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা থাকে এই বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ে। বিগত চার বছরে এই চিত্র বেশি দেখা যাচ্ছে। আর দিনকে দিন তা আরো বাড়বে বলে ভাবা হচ্ছে।
তবে এখন সবচেয়ে বড় বিষয় হলো যে, বাংলাদেশ এখনো ভারতের সাথে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিততে পারে নি। যা সবচেয়ে বড় আফসোসের বিষয়। পরিসংখ্যানের দিকে যদি লক্ষ্য করা যাক, বাংলাদেশ ও ভারত একে অপরের সাথে টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে ৮ বার, যার ৮টিতেই জয় পেয়েছে ভারত। আরেকটি মজার বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত একে অপরের বিপক্ষে এই প্রথম কোনো দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এর আগে যে আটবার দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে তার আটটি ম্যাচের তিণটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, দুইটি এশিয়া কাপে ও তিণটি ত্রিদেশীয় সিরিজে। যেহেতু এটি দুই দলের প্রথম দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ তাই এই দিক দিয়েও সিরিজটি একটু বিশেষত্ব বহন করে।
তবে আটবারের আটবারেই হার। এটি একটু বেশি বেদনাদায়ক। এখনো ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে জয়ের মুখ দেখতে পারেনি এই আক্ষেপ অবশ্যই ঘোচাতে চাইবে বাংলাদেশ দল। তবে সমস্যা হলো যে দলের সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসানকে অনেক বেশি মিস করবে দল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ভারতের অনেক কিছুই সাকিবের জানা। কারণ এখানে সে নিয়মিত খেলে যাচ্ছে আইপিএল ক্রিকেট। তাই অবশ্যই দলে যারা খেলবে তাদেরকে অনেক বেশি ভালো খেলতে হবে।
দলের ব্যাটিংয়ে ভরসার দুই কান্ডারি তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান থাকবেন না স্বাভাবিকভাবেই এটি বড় ঘাটতি দলের জন্য। তামিমের না থাকায় ওপেনিংয়ে হয়তো সৌম্য সরকার ও লিটন কুমার দাস নামবেন। আর তাদেরকেই সেই গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে। আর সাকিব যেহেতু নেই এখানে একজন ব্যাটসম্যান ও একজন বোলারের অভাব থাকবে। আর এখানে আফিফ ও বিপ্লবকে নিতে হবে একটু বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। আফিফ ব্যাটসম্যান হিসেবে খুব ভালো এবং তাকে একটু উপরের দিকে খেলালে আরো ভালো হবে এবং বিপ্লব যেহেতু লেগ স্পিনার তাই তার থেকে দল আরো বেশি সার্ভিস চাইবে যেহেতু সাকিব নেই। আর পেসারদের মধ্যে থেকে মোস্তাফিজুর রহমান ও শফিউল ইসলাম হয়তো একাদশে থাকবেন। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ফোকাস থাকবে মোস্তাফিজুর রহমানের উপর। আর ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন যথাক্রমে রুবেল হোসেন ও আল আমিন হোসেন। রুবেল না থাকলেও আল আমিন আছেন। আল আমিনের উপর তাই ফোকাসটা বেশি থাকবে। সর্বোপরি সকলকেই দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে তাহলে ভারতকে হারানো সহজ হবে।
এটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার প্রথম দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আর ভারতের সাথে টি-টোয়েন্টিতে এখনো জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ দল। তাই এই তিণ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয় অবশ্যই চাইবে বাংলাদেশ দল। যদিও ভারতের মাটিতে ভারত অনেক শক্তিশালী একটি দল। তাই তাদেরকে হারানোটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। আর তার উপর বাংলাদেশ দলের সেরা খেলোয়াড় দলে নেই। তারপরও হাল ছাড়বেন না বাংলাদেশ।
ভারতের সাথে তিণ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি ও দুইটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। তিণটি টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে যথাক্রমে ৩, ৭ ও ১০ নভেম্বরে এবং দুইটি টেস্টের প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে ১৪ই নভেম্বর ও দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ২২শে নভেম্বর। ২২শে নভেম্বরের টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে সেটি হবে দিবা রাত্রির। আর সেটি হবে গোলাপী বলের। আর বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দলের জন্য এটি হতে যাচ্ছে প্রথম দিবা রাত্রির টেস্ট ম্যাচ।