চৌধুরী মোহাম্মদ ইমতিয়াজ »
বয়স ভিত্তিক দলের কোনো সিরিজ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সদ্য বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে আসা অনুর্ধ্ব-১৯ দল আছে অবকাশ যাপনে। তবে ভিসা জটিলতার কারনে বিশ্বকাপ স্বপ্ন মাটিতে মিশে গিয়েছিলো দলের নিয়মিত পেসার, সিলেটের তরুণ রুহেল আহমেদের। ১৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে আকবর, শরীফুলদের মতো দল পেয়েছেন তিনিও।
২০১৯/২০২০ মৌসুমে মোহামেডান এর হয়ে খেলছেন বাঁহাতি এই পেসার। এরই মাঝে লীগের দ্বিতীয় রাউন্ড শেষ না হতেই মাঠে হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। বিসিবি’র নির্দেশে গুটিয়ে ফেলা হয় দেশের সব ধরনের ক্রিকেট। সবুজ গালিচায় পা ফেলা হচ্ছে প্রায় মাস দুয়েক। আনাগোনা নেই জিমনেশিয়ামেও। দীর্ঘ এই গৃহবন্দি সময় এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিউজক্রিকেট২৪ এর সাথে কথা বলেছেন তরুণ সম্ভাবনাময়ী ক্রিকেটার রুহেল আহমেদ।
নিউজক্রিকেট২৪: করোনাভাইরাসের কারনে গৃহবন্দি সময়টা কেমন কাটছে?
রুহেল আহমেদ: এটা আসলে খুব বিরক্তিকর, বিশেষ করে আমরা যারা ক্রিকেটার আছি তাদের জন্য। ফিটনেস নিয়ে ঠুকঠাক কাজ করার পাশাপাশি সোস্যাল মিডিয়াতেও বেশ সময় কাটছে। বিশেষ করে ক্রিকেটের পুরনো ভিডিওগুলো দেখা হচ্ছে।
নিউজক্রিকেট২৪: এতো লম্বা সময় ক্রিকেট ছাড়া থাকার অভিজ্ঞতাটা কেমন?
রুহেল আহমেদ: অবশ্যই খুব খারাপ লাগার বিষয়। ক্রিকেটের সাথে একটা আত্মার সম্পর্ক হয়ে গেছে। এতো লম্বা সময় তো দূরের কথা, এর আগে ক্রিকেট ছাড়া দু’চার দিনের বেশি কখনো থাকা হয়নি। একদমই সময় কাটছে না, বাসায় ছোট ভাইদের নিয়ে বল পেটাই। যত দ্রুত সম্ভব ক্রিকেটে ফিরতে পারাটাই আমাদের জন্য মঙ্গল।
নিউজক্রিকেট২৪: অবসরটা ফর্মের উপর কেমন প্রভাব ফেলতে পারে?
রুহেল আহমেদ: হ্যাঁ! দীর্ঘদিন পর মাঠে ফিরে খেই হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা আছে। খেলায় থাকলে ম্যাচ, ব্যাটিং, বোলিং সবই নিয়মমাফিক হয়। সবকিছু ঠিক থাকে। এখন বেশ কঠিন সময় পার করছি।
নিউজক্রিকেট২৪: ম্যাচের বাইরে থাকা, অনুশীলনও বন্ধ। ফিটনেস ধরে রাখার চ্যালেঞ্জটা কিভাবে নিচ্ছেন?
রুহেল আহমেদ: এখন যেহেতু ঘরেই আছি, সেক্ষেত্র পর্যাপ্ত জিম কিংবা ট্রেনিং করার সুযোগ নেই। তবে যতটুকু সম্ভব ফিট থাকার চেষ্টা করছি। বিসিবি’র ফিজিও, ট্রেইনারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। রুটিন ধরে কাজ করছি প্রতিদিন। ভোর পাঁচটায় চলে রানিং সেশন। সিট আপ, পুশ আপ তো আছেই। চারপাশে আতঙ্কের মধ্যে এভাবেই কোনোরকম চলছে।
নিউজক্রিকেট২৪: পেশাদার হিসেবে বোলিং নিয়ে বিশেষ কিছু করা হচ্ছে কি?
রুহেল আহমেদ: বিশেষ কিছু বলতে কোচদের পরামর্শগুলোই মানার চেষ্টা করছি। কিভাবে বল ড্রিল করতে হবে বা কিভাবে হাত ঘুরাতে হবে। বল হাতে বাসায় এসব পাকা করার চেষ্টা চলছে।
নিউজক্রিকেট২৪: ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান কিংবা জাতীয় দলের স্বপ্নটা কেমন?
রুহেল আহমেদ: প্রত্যেক ক্রিকেটারই স্বপ্ন দেখে জাতীয় দলের। আমিও সেই স্বপ্ন দেখি। তবে সে জায়গায় পৌঁছানো অনেক কঠিন জানি, সেভাবে নিজেকে গড়ে তোলতে কষ্ট করে যাচ্ছি। যেন লম্বা সময় টিকে থাকতে পারি। আমি আত্মবিশ্বাসী, বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।
নিউজক্রিকেট২৪ : বোলিং আইডল কিংবা কাকে দেখে বেড়ে উঠা?
রুহেল আহমেদ: বেড়ে উঠার গল্প বলতে গেলে একটা নামই আসবে, মিচেল স্টার্ক (অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার)। ছোটবেলায় যখন ক্রিকেট শুরু করি তখন তাকেই আইডল মানতাম। পরবর্তীতে যখন দেখি, না আমার বোলিং তো অন্য কারো সাথে মেলানো সম্ভব না। তাই ভাবলাম নিজেরটাই আলাদা এ্যাকশন। বলতে পারেন এখন নিজের আইডল নিজেই।
নিউজক্রিকেট২৪: বিশ্বকাপে আপনার খেলা না হলেও দীর্ঘ সময় অনুর্ধ্ব-১৯ দলের সাথে খেলেছেন। দলের শিরোপা জয়ে আপনার অনুভূতি কেমন ছিল?
রুহেল আহমেদ: বলতে গেলে এটা আমার জন্য দুর্ভাগ্যও বটে। আপনারা জানেন যে বিশ্বকাপ দলে ছিলাম আমি এবং সবকিছু ঠিক হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে ভিসা জটিলতার কারনে আমি যেতে পারিনি। সেক্ষেত্রে একটু মন খারাপের ব্যাপার থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের দল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তাতেই খুব খুশী হয়েছি।
নিউজক্রিকেট২৪: নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডট কমের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
রুহেল আহমেদ: আপনাকে এবং নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডট কমের সকল পাঠকদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।