কেমন ছিলো এনসিএলের চতুর্থ রাউন্ডের প্রথম দিন

নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »

জাতীয় ক্রিকেট লিগ এনসিএলের চতুর্থ রাউন্ডে ভিন্ন ভিন্ন মাঠে শুরু হয়েছে চারটি ম্যাচ। প্রথম স্তরের দুটি ম্যাচে রাজশাহীর মুখোমুখি হয়েছে ঢাকা ডিভিশন ও রংপুরের মুখোমুখি হয়েছে খুলনা। আর দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে বরিশালের বিপক্ষে লড়ছে সিলেট ও চট্টগ্রামের বিপক্ষে ঢাকা মেট্রো। দেখে নেয়া যাক কেমন কাটলো এনসিএলের চতুর্থ রাউন্ডের প্রথম দিন।

কক্সবাজারে ঢাকার বোলারদের দাপটঃ

কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম স্তরের ম্যাচে ঢাকা ডিভিশনের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিং নেয় রাজশাহীর অধিনায়ক ফরহাদ হোসেন । শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রাজশাহী। দলীয় ৭৮ রানেই হারিয়ে বসে টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান সাব্বির হোসেন, মিজানুর রহমান, জুনায়েদ সিদ্দিকী ও সাব্বির রহমান কে। এক প্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্ত আগলে রাখলেও অন্য প্রান্তে ছিলো ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিল। ৫৬ রান করে শান্ত ফিরে গেলে বিপর্যয়টা আরও বেশি প্রভাবিত হওয়ার আশা জাগলেও সেখান থেকে রাজশাহীকে টেনে তুলেন মুক্তার আলি ও সানজামুল ইসলাম।

মুক্তার আলি ৫৬ ও সানজামুল ৪৯ রান করে ফিরে গেলে আর কেউ সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি। মাত্র ২৩০ রানেই গুটিয়ে যায় সাব্বির, ফরহাদ রেজাদের রাজশাহী। রাজশাহীর ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন ঢাকার বোলাররা। তিনটি করে উইকেট নেন সুমন খান ও শুভাগত হোম আর দুটি করে উইকেট নেন সালাহউদ্দীন সাকিল ও জুবায়ের হোসেন। দিনের শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে এক ওভারে কোন রান না করে অপরাজিত আছেন দুই ব্যাটসময়ান সাইফ হাসান ও আব্দুল মজিদ।

রাজ্জাকের ৭ উইকেটের দিনে ব্যর্থ রংপুরের ব্যাটসম্যানরাঃ

প্রথম স্তরের আরেক ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় খুলনা। শুরু থেকেই খুলনার বোলারদের বোলিং তোপে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে রংপুর। দুই অঙ্কের কোঠায় পৌঁছাতে পারলেও ইনিংস বড় করতে পারেনি কেউই। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রান আসে রিশাদের ব্যাট থেকে আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান আসে নাসিরের ব্যাট থেকে। মাত্র ২২৪ রানেই গুটিয়ে যায় রংপুর।

বল হাতে একাই রংপুর শিবিরকে ধসিয়ে দেন আব্দুর রাজ্জাক। মেহেদী মারুফকে দিয়ে শুরু হয় রাজ্জাকের জাদুকরী স্পেল। তারপর একে একে ৭ টি উইকেট তুলে নেন। সেই সাথে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।

বিকেলে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা বেশি সুবিধা করতে পারেননি খুলনার ব্যাটসম্যানরাও। মাত্র ২৪ রানেই হারিয়েছে ইমরুল কায়েস ও মইনুলকে। ১৪ রানে আনামুল ও ১ রানে অপরাজিত আছেন তুষার ইমরান।

কক্সবাজারে এবাদতের ৫, বরিশালের ব্যাটিং ব্যর্থতাঃ

কক্সবাজারের একাডেমি মাঠে সিলেটের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বরিশাল। তবে শুরু থেকে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বরিশাল। মাত্র ৩৫ রানেই হারিয়ে বসে দলের সেরা চার ব্যাটসম্যানকে। নাফিজ ও ফজলে মাহমুদ ফিরে শূন্য রানে, আশরাফুল ২০ আর রাফসান ফিরে ১০ রান করে। মাঝের দিকে নুরুজ্জামানের ৪০, সালমানের ২৫ ও সোহাগ গাজীর ২৩ রানের সুবাদে দেড়শো পার করে দলটি। শেষ পর্যন্ত ৫৭.১ বলে ১৬২ রানে অলআউট হয় দলটি।

সিলেটের হয়ে বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন পেসার এবাদত হোসেন৷ ৩৬ রানের বিনিময়ে পেয়েছেন ৫ উইকেট ফিরিয়েছেন নাফিজ, ফজলে মাহমুদ, রাফসান, সামসুল ও সালমানকে। এছাড়াও তিন উইকেট
পেয়েছেন নাসুম৷

প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৮২ রানে ১ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করে সিলেট। ইমতিয়াজ ৪৮ রান করে ফিরে যান আর ৩২ রান করে অপরাজিত আছেন শাহনাজ।

চট্টগ্রামে সাদমানের সেঞ্চুরি, ঢাকা মেট্রোর রান পাহাড়ঃ

চট্টগ্রাম টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৯ রানেই আজমীরকে হারিয়ে বসে ঢাকা মেট্রো। সেখান থেকে বেশ ভালোভাবেই প্রতিরোধ গড়ে তোলে সাদমান ও শামসুর। শামসুর রহমান ফিফটি করে ফিরে গেলেও অন্য প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন সাদমান৷ এছাড়াও অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব ৪০ ও আল আমিন করেন ৮৩ রান৷

ঢাকা মেট্রোর রান পাহাড়ের দিনে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ঢাকা মেট্রোর সাদমান ইসলাম। ২১ চার ও ২ ছয়ের সাহায্যে ২৫৭ বলে ১৬২ রান করে অপরাজিত আছেন। দিনশেষে ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩৫৭ রান তোলে ঢাকা মেট্রো। চট্টগ্রামের হয়ে দুইটি উইকেট নেয় হাসাম ও একটি করে উইকেট নেন নাইম ও মেহেদী

 

চতুর্থ রাউন্ডের প্রথম দিনের সংক্ষিপ্ত স্কোর কার্ডঃ

রাজশাহী (১ম ইনিংস) : ২৩০/১০ ( ওভার ৮৬.১), শান্ত ৫৬, মুক্তার ৫৬, সুমন ৩/৪৩, শুভাগত ৩/৫৭

ঢাকা ডিভিশন : ০/০ ( ওভার ১) , সাইফ ০*, মজিদ ০ *

রংপুর ( ১ম ইনিংস) : ২২৪/১০ ( ৮১.১) , রিশাদ ৪২, নাসির ৪০, রাজ্জাক ৭/৬৯

খুলনা ( ১ম ইনিংস) : ২৪/২ ( ওভার ৯) আনামুল ১৪*, রবিউল ২/৯

বরিশাল (১ম ইনিংস) : ১৬২/১০ ( ওভার ৫৭.১) নুরুজ্জামান ৪০, এবাদত ৫/৩৬, নাসুম ৩/৫৭

সিলেট (১ম ইনিংস) : ৮২/১ ( ওভার ৩২) ইমতিয়াজ ৪৮, শাহনাজ ৩২*

ঢাকা মেট্রো ( ১ম ইনিংস) : ৩৫৭/৪ (ওভার ৯০) সাদমান ১৬২*, আল আমিন ৮৩, হাসাম ২/৬৫

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »