নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
আজ শেষ হল জাতীয় ক্রিকেট লীগ এনসিএলের ২১ তম আসরের তৃতীয় দিনের খেলা। দেশের চারটি ভেন্যুতে লড়ছেন আটটি দল। এবারের আসরের প্রথম রাউন্ডে ব্যাটসম্যানদের থেকে বোলারদের দাপুট একটু বেশি। এখন পর্যন্ত এনসিএলে মিলেনি কোন শতক। তবে ইতিমধ্যে ৫ উইকেট নিয়েছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি,সুমন খান ও আরাফাত সানিরা।
খুলনাতে রবিউল ও ইমরানের ব্যাটিং কারিশমা :
আব্দুর রাজ্জাক,রুবেল হোসেনদের দারুণ বোলিংয়ের পর ঝলক দেখাচ্ছেন খুলনার ব্যাটসম্যানরাও। আব্দুর রাজ্জাকের ৪ উইকেট ও রুবেল,আলামিনের ২ টি উইকেটে মাত্র ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় রংপুর বিভাগীয় দল। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন তানবির হায়দার আর ফিফটি করেন সোহরাওয়ার্দী শুভ আর ৪৮ রান আসে অভিজ্ঞ নাইম ইসলামের ব্যাট থেকে।
খুলনার প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করে দুই ওপেনার রবিউল ও ইমরান। দুই জনের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ১৩৬ রান। ১১ চারের সাহায্যে ১২৭ বলে ৭১ রান করে ইমরান ফিরে গেলে ভাঙ্গে তাদের এই শত রানের জুটি। ইমরানের পর খুব বেশি সময় থাকতে পারেননি আরেক ওপেনার রবিউল। তিনি ফিরেন ১৬১ বলে ৭৬ রান করে, যেখানে চারের মার ছিলো ৮ টি। অভিজ্ঞ তুষার ইমরান ফিরেন মাত্র ২ রান করে। আর শেষ বিকেলটা অপরাজিত থেকে শেষ করেন দুই ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। ইমরুল অপরাজিত ২৯ রানে আর সৌম্য সরকার অপরাজিত ৮ রানে। একটি করে উইকেট নেন রবিউল,তানবির ও মাহমুদুল।
মিরপুরে ঢাকা মেট্রোর রানের পাহাড়:
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে চট্টগ্রামের ২৯০ রানের জবাবে রানের পাহাড় গড়ছেন ঢাকা মেট্রোর ব্যাটসম্যানরা। শুরুতে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়লেও সেটি সামাল দিয়ে উঠেন শামসুর রহমান ও অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব। অধিনায়ক ২১ রান করে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়লে অতিদ্রুত হারিয়ে বসে আরও দুই উইকেট। আল- আমিন ও সৈকত আলি দুজনেই ফিরেন ৫ রান করে। সেখান থেকে দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান চার বছর পর লিগে ফেরা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ১৩৪ বলে ৬৩ রান করে ফিরেন তিনি। শেষ বিকেলটা নিজেদের করে নেন জাবিদ হাসান ও শহিদুল ইসলাম। দুজনের জুটি থেকে আসে ১৪৮ রান। দিন শেষে ৮১ রান করে অপরাজিত জাবিদ ও ৮২ রান করে অপরাজিত শহিদুল। তিন উইকেট নেন আফ্রিদি আর একটি করেন উইকেট নেন নোমান,রনি ও মাসুম।
ফতুল্লায় শক্ত অবস্থানে ঢাকা বিভাগ:
প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৪০ রানেই গুটিয়ে যায় ঢাকা বিভাগ, তবে বেশি দূর যেতে পারেনি রাজশাহীও। সুমন ও সালাহউদ্দিন সাকিলের বোলিং তোপে ১৯৭ রানে থামে রাজশাহীর প্রথম ইনিংস। সুমন নেন ৫ উইকেট আর সাকিল নেন ৩ উইকেট। তবে ২য় ইনিংসেও ভালো শুরু করতে পারেনি ঢাকা দল। শুরুতেই হারিয়ে বসে মজিদের উইকেট তবে সবার অবদানে বেশ ভালো অবস্থানেই শোভাগত হোমের ঢাকা। ২০ রান আসে রনি তালুকাদারের ব্যাট থেকে আর ৩০ রান জয়রাজ। ৮৮ রানে ৩ উইকেট হারানো দলটাকে ভালো পুঁজি দেয় রাকিবুল হাসান ও তাইবুর রহমান। রাকিবুল ফিরেন ৬৫ রানে আর তাইবুর অপরাজিত ৬৭ রানে। তবে শেষ দিকে একটু খেঁই হারিয়ে ফেলে ঢাকা। তিনটি উইকেট নেন স্পিনার তাইজুল ও দুটি উইকেট নেন ফরহাদ রেজা।
ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কায় সিলেট :
প্রথম ইনিংসে মাত্র ৮৬ রানেই অলআউট হয় অলক কাপালির সিলেট। ব্যাটসম্যানদের পর বল হাতেও ব্যর্থ বোলাররা দেখাতে পারেনি আহামরী কিছু। সিলেটের প্রথম ইনিংসে কাঁপন ধরান রাব্বি। বোলারদের দাপুটের পর ব্যাট হাতে দাপুট দেখান বরিশালের ব্যাটসম্যানরা। শাহরিয়ার নাফিসের ৬৩, রাফসানের ৩৩ ও অধিনায়ক ফজলে মাহমুদের ৭০ রানের উপর ভর করে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বরিশাল।
প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ সিলেটের টপ অর্ডাররা। শেষ বিকেলে ২৬ রানে হারিয়ে বসে দুই উইকেট। দিনশেষ অপরাজিত আছেন ইমতিয়াজ ও এনামুল হক জুনিয়র। সিলেটের দুই ইনিংসে মিলেও ১১৮ রানে পিছিয়ে আছে বরিশালের প্রথম ইনিংসের থেকে । আর তাতেই শঙ্কা জেগেছে সিলেটের ইনিংস পরাজয়ের।
তৃতীয় দিনের সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
ঢাকা ডিভিশন প্রথম ইনিংস- ২৪০/১০(৭৬.১)
দ্বিতীয় ইনিংস- ২০৬/৬*, (৮০), তাইবুর রহমান ৬৭*, রকিবুল হাসান ৬৫, তাইজুল ইসলাম ৩৩-০৫- ৮২-০৩
রাজশাহী ডিভিশনঃ-
প্রথম ইনিংস- ১৯৭/১০(৭৭.৫), মুশফিকুর রহিম ৭৫, জহুরুল ইসলাম ৬৪, সুমন খান ২৭-০৯-৫০-৫
চট্টগ্রাম ডিভিশন ১ম ইনিংস – ২৯০/১০ (১২২.৫), তাসামুল হক ৯০, সাদিকুর রহমান ৯১, আরাফাত সানি ৩৯.৫-১২-৮৭-৬
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস – ৩৪৯/৭(১২২), শহিদুল ইসলাম ৮২, জাবেদ হাসান ৮১*, মিনহাজুল আবেদিন ৩০-০২- ১০৩-৩
রংপুর ডিভিশন ১ম ইনিংসঃ ২২৭/১০ (১০০.১)
তানভির হায়দার ৬৪(১৬২), সোহরাওয়ার্দী শুভ ৫০(১৪১)
আব্দুর রাজ্জাক ৩২-৬-৮১-৪, আল আমিন ২৩-১০-৪৯-২।
খুলনা ডিভিশন ১ম ইনিংস ১৯২/৩ (৬৭)
রবিউল ইসলাম রবি ৭৬(১৬১), ইমরান উজ্জামান ৭১(১২৭)।
মাহমুদুল হাসান ৮-৩-৯-১, রবিউল হক ১৫-৪-৪৫-১।
সিলেট ডিভিশন ১ম ইনিংসঃ ৮৬/১০(৪৬.১) এবং ২য় ইনিংসঃ ২৭/২(১১)
জাকির হাসান ৩২(৬৩), অলক কপালি ১৮(৮৬)।
কামরুল ইসলাম রাব্বি ১৬.১-৫-২৪-৬, নুরুজ্জামান ৩-৩-০-৩।
বরিশাল ডিভিশন ১ম ইনিংস: ২৩১/৮ (৫৮.৩) ডিক্লে.
ফজলে মাহমুদ ৭০(৯২), শাহরিয়ার নাফিস ৬৩(৯৭)।
রেজাউর রহমান ১৭-৩-৭৪-৩, অলক কপালি ৭-৩-১৫-২।