২৮৩ রানের লক্ষ্যমাত্রাকে মামুলি বানালো কিউই টপ অর্ডার

দুর্জয় দাশ গুপ্ত »

ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার কি ভেবেছিলেন নিজেদের বিশ্বকাপ মিশনটা এভাবে শুরু হবে? আহমেদাবাদের স্পোর্টিং উইকেটে শুরুটা ইংলিশদের চাহিদা মতই হয়েছিলো। কিন্তু এরপরই একের পর এক ধাক্কা। জো রুটের সাথে দারুণ এক পার্টনারশিপের পর আবারো উইকেটে আসা যাওয়ার মিছিল। শেষের দিকে টিকে রাখার লড়াইটা চালালেন আদিল রাশিদ আর মার্ক উড। বলছিলাম ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ইনিংসের গল্পটা।

এমন উইকেটে ২৮২ রান মোটেও যথেষ্ট নয় কিন্তু তারপরও জস বাটলার, মইন আলিরা জয়ের স্বপ্ন দেখছিলেন নিশ্চয়ই। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই উইল ইয়ংকে শূন্য রানে ফেরান স্যাম কারান। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংলিশদের প্রাপ্তি বলতে ছিল কেবল এই একটা মুহূর্তই। এরপরই উইকেটে শুরু হলো ঝড়। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে লাগলেন দুই কিউই ব্যাটার ডেভন কনওয়ে ও রচিন রবীন্দ্র। এক একজন ইংলিশ বোলার হয়তো স্বপ্নেও ভাবেন নি বিশ্বকাপের প্রথম দিনই তাদেরকে এমন এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হবে।

উইকেট তু্ল নেয়া তো দূরের কথা একটা ডট বল করতেও হিমশিম খেতে হয়েছে মার্ক উড, ক্রিস ওউকসের। মার্ক উড তার পুরো ক্যারিয়ারে আজই হয়তো এমন বাজে একটা দিন কাটিয়েছেন। তার এক একটা বাউন্সারে যেখানে ব্যাটারদের ভয় পাওয়ার কথা সেখানে তারা অনায়াসে খেলছেন একের পর এক পুল শর্ট। বল গিয়ে আচড়ে পড়ছে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের গ্যালারীতে।

কনওয়ে ও রবীন্দ্র হয়তো প্রতিযোগীতায় নেমেছিলেন! কে কয়টা বাউন্ডারি মারতে পারেন এমন প্রতিযোগীতা। টি-টোয়েন্টি স্টাইলের ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডের ২৮২ রানটাকেও মনে হয়েছিলো খুবই অল্প। বিশ্বকাপের প্রথম দিনেই বিশ্ববাসী দেখলো জোড়া সেঞ্চুরি। তরুণ রবীন্দ্র যেন কিছু কিছু মুহূর্তে কনওয়েকেও ছাড়িয়ে গেলেন। নিউজিল্যান্ডের জন্য এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে।

ছবি : আইসিসি

২০১৯ বিশ্বকাপে আইসিসির অদ্ভুত এক আইনে ইংলিশদের কাছে হেরে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিলো। তাই হয়তো চার বছরের জমে থাকা ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলতে আগেই এমন পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিলেন এই দুই ব্যাটার।

নিয়মিত অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন খেলেন নি, দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলার টিম সাউদিও ছিলেন না একাদশে। তবুও কোন ঘাটতি নেই। আইসিসি ইভেন্টে নিউজিল্যান্ড সবসময়ই গুছানো দল সেটার আবার প্রমাণ মিললো। বিশ্বকাপ মিশনটা নিউজিল্যান্ডের শুরু হলো ৯ উইকেটের বড় জয়ে। ৮২ বল হাতে রেখে ২৮২ রান টপকালো কিউই টপ অর্ডার। ওপেনার ডেভন কনওয়ে ১২১ বলে ১৯ চার আর ৩ ছক্কায় খেললেন ১৫২ রানের ইনিংস। রবীন্দ্রও তার সাথে পাল্লা দিয়ে ৯৬ বলে করলেন ১২৩। ১১ চারের পাশাপাশি হাঁকিয়েছেন ৫টি বিশাল ছক্কা। মর্ডাণ ক্রিকেটে ব্যাটিংটা আসলে এভাবেই করতে হয়। একইসাথে ভারত বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচই জানান দিলো রানের দিক দিয়ে আগের সবকটা বিশ্বকাপকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভবনা এখানে প্রবল।

 

 

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »