খলনায়ক থেকে মহানায়ক হওয়ার গল্প

হাফিজুল ইসলাম »

১২ বছর বয়সে পরিবারের সাথে  ইংল্যান্ডে যাত্রা করেন বেন স্টোকস। বাবা ছিলেন একজন রাগবি খেলোয়াড় পরে হয়ে উঠেন কোচ। ইংল্যান্ডে গিয়েও একটি আঞ্চলিক দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পান। যে কারণে ওখানেই স্থায়ী হয় তার পরিবার। যেটা হয়তোবা বেন স্টোকস এর জন্য কল্যাণ বয়ে এনেছে । না হলে পরবর্তীতে তিনি যেভাবে ব্যাড বয় খেতাব পান , নিউজিল্যান্ডের মত শান্তি প্রিয় দেশের বোর্ড হয়তো তাকে দলের জন্য বিবেচিত ই করতো না ।

২০০৯ সালে ডরহাম দলের হয় প্রথম পেশাদার ক্রিকেট শুরু স্টোকসের। মোটামুটি অলরাউন্ড নৈপুণ্যে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব ১৯ দলের বিপক্ষে সিরিজে সুযোগ পান তিনি । সেখানে দুটি মাঝারি ইনিংস আর কয়েকটা উইকেট পেলে অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ দলেও সুযোগ মিলে স্টোকসের।

বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ একটি সেঞ্চুরি করে জাতীয় দলের নির্বাচকদের নজরে আসেন । এরপর সুযোগ মিলে জাতীয় দলের হয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে প্রথম ম্যাচে মোটেও সুবিধা করতে পারেননি । তিন বল মোকাবেলা করেই সাজঘরে ফিরে যান তিনি। এরপর ধীরে ধীরে দলে জায়গা পাকাপোক্ত করেন। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয় স্টোকসের। এরপর সব ফরম্যাটেই সুযোগ মেলে এবং দলে আসা যাওয়ার মধ্যেই থাকেন ।

২০১৬ টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং নৈপুণ্যে দেখান । ওই ম্যাচে ২৬/২৭ রানে ৩ উইকেট পান । দলে তার ভুমিকা ছিল ফিনিশারের। খুব বড় ইনিংস খেলার সুযোগ না পেলেও নিয়মিত ই ফিনিশিংয়ের দায়িত্বে থাকতেন তিনি।

১৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে মুখোমুখি উইন্ডিজের আসরের সেরা দলের বিপক্ষে খেলা। টান টান উত্তেজনাময় সেই ম্যাচে ইংল্যান্ডের পাল্লা ভারী ছিলো। তবে শেষ ওভারেই নাটকিয়তাই ম্যাচ জয়লাভ করে উইন্ডিজ। ‌

শেষ ওভারের পরপর চার বলে চার ছক্কা খেয়ে ফাইনাল খুইয়ে বসে ইংল্যান্ড। কান্নায় ভেঙে পড়লেন বেন স্টোকস তার কান্না ভরা সেদিনের রসেই ম্যাচ যারা দেখেছে কেউ ভুলবে না এত কাছে তবুও দূরে।বেন স্টোকস হলেন খলনায়ক।

কিন্তু এখানেই থেমে যাননি স্টোকস। পাপ মোচন করার জন্য বেঁছে নিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপ।নায়ক থেকে মহানায়ক হবার সুযোগ এলো বিশ্বকাপ ফাইনালে । নিউজিল্যান্ডের বোলারদের তোপের মুখে যখন একের পর এক ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান সাজঘরে আসা যাওয়ার পথে তখন স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে লড়াকু এক ধৈর্যশীল ইনিংস খেললেন বেন স্টোকস। ৯৮ বলে ৮৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংসের মাধ্যমে ম্যাচ বাঁচালেন। সুপার ওভারে গড়ালো ম্যাচ সেখানে ও ৩ বলে ৮ রান করে প্রথমবারের মতো জিতলেন অধরা বিশ্বকাপ । বেন স্টোকস পেলেন সম্মানসূচক স্যার উপাধি ।

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »