নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া কমিটির পরিচালক ও চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস
মোহাম্মাদ জালাল ইউনুস। একজন ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ মানুষ, সফল ক্রিড়া সংগঠক এবং সাবেক ক্রিকেটার। ১৯৭৩ সালে বাঁহাতি পেস বোলিংয়ের মাধ্যমে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছেন। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত কাটিয়েছেন আবাহনীতে। এই ক্রিকেট নিবেদিতপ্রাণ মানুষটি বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া কমিটির পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছিলেন নিউজ ক্রিকেট টোয়েন্টি ফোরের।
একান্ত সাক্ষাৎকারে অকপটে কথা বলেছেন তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার, ২০১৯ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্রিকেটের নানা দিক নিয়ে নিউজ ক্রিকেট টোয়েন্টি ফোরের বিশেষ প্রতিনিধি তানভীর তুহিন এর সাথে।
নিউজ ক্রিকেট টোয়েন্টি ফোরঃকেমন আছেন স্যার?
জালাল ইউনুসঃ আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি।
নিউজ ক্রিকেটঃ নিউজ ক্রিকেট টোয়েন্টি ফোরে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
জালাল ইউনুসঃ ধন্যবাদ।
নিইজ ক্রিকেটঃ সম্প্রতি ক্রিকেটারদের নিয়ে বিসিবি যে নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তি করলো সেটা দল পুনর্গঠন করতে কতটা ভূমিকা রাখবে?
জালাল ইউনুসঃ আমি বলবো যে, কেন্দ্রীয় চুক্তির সাথে দল গঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা ভালো পারফর্ম করবে ডেফিনেটলি তাঁরাই দলে আসবে। আর যারা চুক্তি থেকে বাদ গেছে তার মানে এই নয় যে তাঁরা জাতীয় দল থেকে বাদ গেছে। তাঁরা জাতীয় দলে কিছুদিন আগেও খেলেছে। হয়তো পারফর্মেন্সের কারণে তাঁরা এই কেন্দ্রীয় মানদণ্ডে আসেনি। আমার বিশ্বাস তাঁরা পারফর্মেন্স দিয়ে আবারো দলে ফিরবে। অতএব এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।
নিইজ ক্রিকেটঃ ২০১৯ বিশ্বকাপের দল গঠন করতে এই সংকোচিত চুক্তি কি বিশেষ কোনো ভূমিকা রাখবে?
জালাল ইউনুসঃ যারা চুক্তিতে আছে তাঁরা ভালো করছে। ডেফিনেটলি সামনে আরো ভালো করার চেষ্টা করবে। আর যারা চুক্তি থেকে বাদ গেছে তাঁদেরও স্কিল আছে, স্পীড আছে। এখান থেকে তাঁরা একটা পজিটিভ মেসেজ নিয়ে সামনের দিনে আরো ভালোভাবে কামব্যাক করার ইন্সপারেশন পাবে। নিজেদের গুছিয়ে নেয়ার সময় পাবে। আর এদের মধ্যে থেকেই যারা ভালো করবে তাঁদের নিয়ে বিশ্বকাপের স্কোয়াড হবে।
নিইজ ক্রিকেটঃ বিশ্বকাপ প্রস্তুতির কোনো পরিকল্পনা…
জালাল ইউনুসঃ ডেফিনেটলি বিশ্বকাপে আমাদের বেস্ট স্কোয়াডই খেলবে। তো সে অনুযায়ী আমাদের অনেক প্ল্যানও রয়েছে। মূলত আমারা হেড কোচ নিয়োগের পরেই বিশ্বকাপের মূল পরিকল্পনা শুরু করবো। এজন্যই আমরা কিছুদিন অপেক্ষা করছি। হয়তো এর মধ্যে আমরা হেড কোচ পেয়ে যাবো। এরপর ত্রিশ জনের একটা দল গঠন করা হবে। তাঁদের মধ্যে থেকেই ফাইনাল স্কোয়াড বিশ্বকাপে খেলবে।
নিউজ ক্রিকেটঃ আমরা দেখলাম মোসাদ্দেক, তাসকিন, সাব্বির, সৈম্য সরকারের মত ক্রিকেটাররাও এই চুক্তি থেকে বাদ পড়েছে। তো তাঁদের কামব্যাক করার জন্য কোন বিষয় গুলোর প্রতি নজর দেয়া উচিৎ?
জালাল ইউনুসঃ অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম, পারফর্মেন্স এসবের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। যেহেতু তাঁরা অধিকাংশ খেলোয়াড়ই ভেরি ইয়াং তাই এখনো অনেক সময় আছে ভুল শুধরানোর। তাঁদের ট্যালেন্ট নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। দে আর ভেরি ট্যালেন্টেড প্লেয়ার। এইজন্য আমার মনে হয় তাঁদের জন্য খুব কষ্টকর কিছু হবেনা। পরিশ্রমের মাধ্যমে তাঁরা আবার অনেক ভালো করবে। আমি মনে করি তাঁদের এখনো দলকে অনেক কিছু দেয়ার বাকি আছে।
নিউজ ক্রিকেটঃ আপনি একজন পেস বোলার ছিলেন। তাই তাঁদের জন্য বিশেষ কোনো পরামর্শ?
জালাল ইউনুসঃ দেখুন, আমি আগেই বলেছি পারফর্মেন্সের সাথে চুক্তির কোনো সম্পর্ক নেই। যারা ভালো করবে তাঁরাই দলে খেলবে। কিন্তু ফাস্ট বোলারদের একটু বেশিই পরিশ্রম করতে হয়। কারণ একটা বল ডেলিভারি করার সময় তাঁদের স্কিল, শক্তি, পরিকল্পনা সবকিছুর সমন্বয় করতে হয়। এটা অনেক কঠিন কাজ। সুতরাং এটা অন্যদের সাথে তুলনা করলে চলবে না। তবে আমাদের কোচ হিসেবে কোর্টনি ওয়ালশ আছে, চাম্পাকা রামানায়েক আছে। এছাড়াও আমাদের ফর্মার কিছু ক্রিকেটার রয়েছে যারা ফাস্ট বোলিংয়ের সাথে জড়িত। তো তাঁদের সাথে যদি ভালোভাবে কাজ করে আমার মনে হয় কামব্যাক করতে খুব একটা সমস্যা হবে না। কনফিডেন্স লেভেলটা রিগেইন করতে হবে তাঁদের। কিছু সময় লাগবে হয়তো। তবে সেই সময়টা তাঁদের ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করে যেতে হবে।
নিউজ ক্রিকেটঃ স্যার, এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। আপনার ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু সেই ১৯৭৩ সালে। আপনি আবাহনীতে গতিময় বাঁহাতি পেসার হিসেবে এক যুগেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন। তো সেই সময়ের ক্রিকেট আর এই সময়ের ক্রিকেট উত্থান বা উত্তরণে আপনার মূল্যায়ন কি?
জালাল ইউনুসঃ আমাদের সময় কিন্তু অনেক কম্পিটিশন ছিলো। সেই হিসেবে এখন ততটা কম্পিটিশন নেই। সত্যি কথা বলতে তখন খুব বেশি কোয়ালিটি ফাস্ট বোলার ছিলোনা। তখন যারা কম্পিট (প্রতিযোগিতা) করতাম তাঁদের মধ্যে আমি ছিলাম এবং এছাড়াও ছিলেন মাসুদ ভাই, তানভীর হায়দার, সামিউর রাহমান, দিপু চৌধুরী, তানজীব হাসান সাদ, দৌলত জামান। এরকম আট থেকে দশটা প্লেয়ার প্রতিযোগিতা করতাম ন্যাশনাল টীমে আসার জন্য। এখন কিন্তু কোয়ালিটি ফাস্ট বোলারদের অল্প কয়েকজনের মধ্যে এই কম্পিটিশনটা হয়। আমি বলবো এখানে একটা বিরাট ডিফরেন্স আছে। সেই সময় দেখা যায় আমরা অনেক কষ্ট করতাম ন্যাশনাল টীমে আসার জন্য। লীগের মধ্যে চল্লিশ পঞ্চাশটা করে উইকেট পাচ্ছি, ন্যাশনাল লীগে পাচ্ছি, ডোমেস্টিকে পাচ্ছি কিন্তু তারপরেও ন্যাশনাল টীমে কল পাচ্ছি না। আবার কল পাই কিন্ত দেখা যায় ফাইনাল সিক্সটিনে থাকছিনা। অথচ এখন দেখা যায় অনেকে তুলনামূলক সহজে ন্যাশনাল টীমে চলে আসছে। তাঁদের খুব একটা কষ্ট করতে হচ্ছেনা। তারমানে বোঝাই যাচ্ছে কোয়ালিটি ফাস্ট বোলারের বড় অভাব এখন। এই অভাবটাকে পূরণ করতে হবে আমাদের। আসলে ফাস্ট বোলিংটা কিছুটা ভিতরে আগে থেকেই থাকতে হবে। আর বাকিটা প্র্যাকটিস, নার্সার, পরিকল্পনা করে ইন্টারন্যাশনাল লেভেলে আসতে হবে। নিশ্চই আমাদের বোলার আছে। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল ক্লাস বোলারের ঘাটতি আছে। তবে অনেক দেশের বিচারে সময়ের সাপেক্ষে আমাদের ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়েছে।
নিউজ ক্রিকেটঃ আপনি আবাহনীতে দীর্ঘ সময় খেলেছেন , শেখ জামালে (তখনকার ধানমন্ডি ক্লাব) খেলেছেন। ওই সময়ের ক্রিকেট সম্পর্কে কিছু বলুন…
জালাল ইউনুসঃ দেখুন, আমরা যখন ব্যাটিং করতাম তখন ভাবতাম ২০০ রানই যথেষ্ট। তখন কিন্তু বর্তমানের মত এত ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশন ছিলোনা। দশ পনেরো ওভার পর ফিল্ডিং ছড়িয়ে দেয়া যেত। সিক্স থ্রি পজিশনে অর্থাৎ ছয়টা বাইরে ও তিনটা ভিতরে খেলা যেত। তখন ২০০ রান করাটাই অনেক ডিফিকাল্ট হয়ে যেত। ২২০ রান ছিল তখন অনেক বড় স্কোর। ৩০০ রান আমরা কল্পনাই করতে পারতাম না। টাকা পয়সার ছড়াছড়ি ছিলোনা। আর ক্রিকেট নিয়ে এখনকার মত এতটা উদ্দীপনাও ছিলোনা।
নিউজ ক্রিকেটঃ কিন্তু বর্তমানে…
জালাল ইউনুসঃ এখন কিন্তু ৩০০ রানও নিরাপদ নয়। এখন ক্রিকেট আগের মত নেই। এখন খেলার মধ্যে অনেক চেঞ্জ এসেছে । খেলায় গতি এসেছে, ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশন এসেছে, অনেক টেকনোলজি এসেছে, গেমের অনেক রুলস চেঞ্জ হয়েছে। তাছাড়া খেলার ফরম্যাট চেঞ্জ হয়েছে। টি-টোয়েন্টি অনেক গ্ল্যামারাস খেলা। এটা খেলায় অনেক উদ্দীপনা বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেক সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। মানুষ খেলার প্রতি অনেক বেশি আগ্রহী হচ্ছে। ক্রিকেটাররা অনেক উৎসাহ পাচ্ছে। তারমানে ক্রিকেট এখন অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে আমরা গর্বিত এই কারণে যে, তখন আমরা যে সুবিধাগুলো পাইনি সেগুলো বর্তমান জেনারেশনকে করে দিতে পারছি।
নিউজ ক্রিকেটঃ এই জায়গাটা কিন্তু রাতারাতি তৈরি হয়নি। এটা আপনাদের মত নিবেদিত প্রাণ মানুষের নিরলস পরিশ্রমেরই ফসল…
জালাল ইউনুসঃ আপনি একদম ঠিক বলেছেন। দেখুন, ক্রিকেট কিন্তু তিলে তিলে এই পর্যন্ত এসেছে। তখন অনেক রকম চ্যালেঞ্জ ছিলো। মাঠ ছিলোনা। সুযোগ সুবিধা ছিলোনা। আমরা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলতাম। তখন ঐটাকে ইনার স্টেডিয়াম বলা হতো। কারণ বাইরে তিনটি মাঠ ছিলো। সেখানে ধূলার মধ্যে তিনটি মাঠেই একসাথে সবাই খেলতো। আপনারা যদি সেই সময়ের মাঠটা দেখতেন তাহলে বুঝতেন। এমনো হয়েছে যে আমারা ধূলার মধ্যে মুখে রুমাল দিয়ে ফিল্ডিং করেছি। ড্রিংসের সময় আমরা টিনের বালটিতে পানি খেয়েছি। আর এখন কত রকম চেঞ্জ দেখেন! এই যে ট্রান্সফরমেশন এটা একদিনে হয়নি। তখন যদি আমরা ক্রিকেট ধরে না রাখতাম হয়তো দেখা যেতো ধীরে ধীরে ক্রিকেট গুরুত্বের দিক থেকে অনেক নিচের দিকে চলে যেতো। আর আমাদের আগে যারা ছিলো তাঁরাও অনেক বেশি কষ্ট করেছে। বিশেষকরে ক্লাব গুলোর কথা না বললেই নয়। আমি বিশ্বাস করি ঢাকার ক্লাবগুলো যদি ক্রিকেট ধরে না রাখতো তবে আজকে বাংলাদেশ ক্রিকেট এই পর্যায়ে আসতো না। সেকেন্ড ডিভিশন, ফার্স্ট ডিভিশন, থার্ড ডিভিশন, প্রিমিয়ার ডিভিশন যাই বলেন না কেনো তাঁদের অবদান অনেক। তাঁদের অবদানের জন্যই ক্রিকেট এই লেভেলে এসেছে।
নিউজ ক্রিকেটঃ স্যার, আমরা জানি যে আপনি ঢাকা ইউনিভারসিটিতে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স নিয়ে স্টাডি করেছে। আপনি চাইলে অন্য দিকেও আপনার ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারতেন। কিন্তু ক্রিড়া ক্ষেত্রে আসার ইন্টেনশন এর জায়গাটা কি ছিলো?
জালাল ইউনুসঃ ইন্টারন্যাশনাল রিলেসন্সে তো আমি স্কুল, কলেজ পার হয়ে তারপর আসছি। কিন্তু ক্রিকেট আমার ইনবর্ণ (জন্মগত)। আমি ছোটো বেলা থেকেই ক্রিকেট খেলতাম। যেখানেই ক্রিকেট খেলা হতো সেখানেই চলে যেতাম। ফুটবলও খেলতাম। ছোটো বেলায় আমরা গ্রীষ্মকালে ক্রিকেট খেলতাম। আর বর্ষাকালে ফুটবল খেলতাম। কিন্তু ক্রিকেট আমাকে আকর্ষণ করতো বেশি। এভাবে ধীরে ধীরে ক্রিকেটের দিকে চলে আসলাম। আর ঢাকা ইউনিভারসিটিকে আমি বেশ কয়েকবার রিপ্রেজেন্ট করেছি। আমরা তিনবার চ্যাম্পিয়নও হয়েছি। আমাদের পর ঢাবি আরও ভালো করেছে।
নিউজ ক্রিকেটঃ আপনার ক্যারিয়ারের বেস্ট পারফর্মেন্স কোনটি?
জালাল ইউনুসঃ তখন তো আর প্রিমিয়ার ডিভিশন ছিলো না। অমরজ্যোতি ক্লাবের সাথে আবাহনীর খেলায় আমি ২৭ রানে ৯টি ইউকেট পেছিলাম। এটা গেলো একটা। আর ক্যারিয়ারের বেস্ট পারফর্মেন্সের কথা উঠলে আমি সবসময় বলি ১৯৭৬-১৯৭৭ সিজনের কথা। আমি তখন ধানমন্ডি ক্লাবে খেলছি। মোহামেডানের সাথে আমাদের খেলা ছিলো। সেই সময় মোহামেডানে এলিট প্লেয়াররা খেলতো, ন্যাশনাল টীমের প্লেয়াররা খেলতো। তখন আমি ২৮ রানে ৭ ইউকেট নিয়েছিলাম।
নিউজ ক্রিকেটঃ ক্রিকেটের প্রতি আপনার কোনো আক্ষেপ আছে?
জালাল ইউনুসঃ ডেফিনেটলি আছে। আমি যখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ি আমার বয়স ১৯- ২০ বছর হবে। তখন দেখা যায় আমি ডোমেস্টিক লীগে, ক্লাব লীগে এক সিজনে ৫০-৬০টি উইকেট পেতাম। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় হচ্ছে এত ভালো করার পরেও জাতীয় দলে ডাক পেতাম না। তখন অনেক ফেভারিটিজম ছিলো। এখন যেমন কেউ ভালো করলেই দলে সুযোগ পেয়ে যায় কিন্তু সত্যি কথা বলতে আমরা সেভাবে পাইনি। আর যারা সিনিয়র ক্রিকেটার ছিলো (আমি নাম বলতে চাইনা) তাঁদের অনেকের কোনো ফর্মই ছিলোনা। এমনকি লীগেও ভালো ফর্ম ছিলোনা। তারপরেও তাঁরা জাতীয় দলে বছরের পর বছর খেলে যেতো। আপনি জানেন আমাদের একসময়ের চীফ সিলেক্টর ছিলেন রফিক আলম। আমরা একসাথে খেলতাম। ন্যাশনাল লীগে সে রানের পর রান করে যেতো আর আমি ইউকেটের পর উইকেট নিয়ে যেতাম। কিন্তু আমাদের ডিপ্রাইভ করা হতো। আমাদের বড়জোর ত্রিশে রাখতো কিন্তু ফাইনাল স্কোয়াডে রাখা হতোনা।
নিউজ ক্রিকেটঃ এত ভালো করার পরেও ফাইনাল স্কোয়াডে না রাখার মূল কারণ কি ছিলো বলে মনে হয়?
জালাল ইউনুসঃ আমি আসলে বুঝতামনা আমাদের সাথে এমন কেনো করা হতো! তখন খেলায় ফেভারিটিজম অনেক বেশি ছিলো। আর পলিটিক্যালও হতে পারে। তা না হলে আমরা পারফর্ম করেও সুযোগ না পাওয়ার কোনো কারণ দেখিনা।
নিউজ ক্রিকেটঃ ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে কোথায় দেখতে চান?
জালাল ইউনুসঃ ওয়ার্ড কাপে ডেফিনেটলি আমরা প্রথম চারে আসতে চাই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমরা এসেছিলাম। কিন্তু ২০১৯ বিশ্বকাপে আমরা অন্তত সেমিফাইনাল খেলতে চাই। তবে বিশ্বকাপে আমরা ফাইনাল খেললেও অবাক হবোনা।
নিউজ ক্রিকেটঃ স্যার আপনি ইতোমধ্যে জেনেছেন যে, নিউজ ক্রিকেট টোয়েন্টি ফোর একটি ক্রিকেট ভিক্তিক নতুন অনলাইন নিউজ পোর্টাল। তো এর শুভকামনা জানিয়ে কিছু বলুন…
জালাল ইউনুসঃ আমি খুবই আনন্দিত যে ‘নিউজ ক্রিকেট টোয়েন্টি ফোর’ একটি ক্রিকেট ভিক্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল বেরিয়েছে কয়েকদিন আগে এবং আমি যা দেখেছি যে তাঁরা যেভাবে নিউজ করছে, ক্রিকেটকে যেভাবে কাভার করছে সত্যি খুবই প্রশংসনীয়। আর আমার মনে হয় যে, যেহেতু ক্রিকেট এখন খুবই পপুলার একটা গেম বাংলাদেশে, তো তাঁরাও এটার পিছনে কাজ করছে, ক্রিকেটের পিছনে কাজ করছে এবং অনেকে তাঁদের সাথে আছে। আমি মনে করি যে তাঁরা যে যাত্রা শুরু করেছে এটা একটি সফল যাত্রা হবে। ক্রিকেটের অগ্রগতির জন্য তাঁরা ডেফিনেটলি কাজ করে যাবে সারা বাংলাদেশে। আমি তাঁদের শুভকামনা জানাচ্ছি। তাঁরা আরও সামনের দিকে উত্তরোত্তর যেনো এগিয়ে যায় এবং এখন যে অবস্থায় আছে তার থেকে আরো প্রসার করে, সেজন্য আমি তাঁদের শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা দিলাম।
নিউজ ক্রিকেটঃ স্যার, আপনাদের মত মানুষ ক্রিকেটাঙ্গনে আছে বলেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি। আপনাদের হাত ধরেই বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ট্রফি আসুক সেই শুভকামনা রইলো। নিউজ ক্রিকেট টোয়েন্টি ফোরকে আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
জালাল ইউনুসঃ আপনাকেও ধন্যবাদ এবং এমন একটি নিউজ পোর্টাল চালু করার জন্য নিউজ ক্রিকেট টোয়েন্টি ফোরের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ।