স্বজনপ্রীতির খোটা শুনতে শুনতে ভেঙ্গে পড়েছিলেন ইমাম

নিউজ ডেস্ক »

ক্রিকেটবিশ্বে ‘স্বজনপ্রীতি’ নামক শব্দটা বেশ পরিচিতই বটে। ক্রিকেটের শুরু থেকে কখনো একি দলে একসাথে খেলেছেন দুই ভাই, বাবা-ছেলে কিংবা চাচা-ভাতিজাও। ব্যতিক্রম নয় পাকিস্তানের ক্রিকেটার ইমাম উল হক ও সাবেক পাকিস্তানী অধিনায়ক ও বর্তমান প্রধান নির্বাচক ইনজামাম-উল হক। সম্পর্কে যে তারা চাচা-ভাতিজা তা প্রায় সব ক্রিকেট সমর্থকদেরই জানা। তবে চাচার কারণেই নাকি দলে সুযোগ পান ইমাম এমন কথাও শুনতে হয়েছে তাকে। যখন তিনি প্রথমবার দলে ডাক পান, স্বজনপ্রীতির কারণেই ডাক পেয়েছিলেন এমন কথা তাকে শুনতে হয়।

এমন খবর অবশ্যই যে কারোই জন্যই বেশ কষ্টের। সম্প্রতি সে ব্যাপারেই ইএসপিএন ক্রিকইনফোর এক চ্যাট শো’তে কথা বলেছেন তিনি। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার দীপ দাশ গুপ্তের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের কষ্টের কথা জানান ফিনি। দলে অভিষেকের পূর্বেই ‘স্বজনপ্রীতিতে’ দলে ডাক পেয়েছেন এমন কথা শুনতে হয় তাকে। এতে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন তিনি।

সম্প্রতি দ্বীপ দাসগুপ্তকে তিনি বলেছেন সেই কষ্টের কথা, ‌‌‘সত্যি বলতে কী আমি যখন দলে জায়গা পাই তখন শুধু একজনই বন্ধু ছিল আমার—বাবর আজম। কিন্তু আমাদের দুজনেরও তেমন একটা যোগাযোগ হতো না। কারণ বাবর তখন জাতীয় দলে নিয়মিত আর আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতাম। আমাদের মধ্যে খুব বেশি কথাও হতো না।’

জাতীয় দলে ঢোকার পরও শুরুর দিকে বাবরের সঙ্গে তেমন কথা হতো না, এমনটাই বলেছেন ইমাম, ‌‌‘সে ক্রিকেটেই মনোযোগ বেশি দিচ্ছিল। সেই সময় সে ভালো ছন্দেও ছিল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেছে। টেস্ট ক্রিকেটে সময়টা তার ভালো যাচ্ছিল না। তাই ওয়ানডে ভালো করতে চাইছিল। এ কারণে কারও সঙ্গেই খুব একটা কথা বলত না।’

অভিষেকের আগ থেকেই তাকে নিয়ে এতো সমালোচনা, পাননি লংকানদের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে সুযোগ। তবুও মানুষের সমালোচনা যেনো থামছিলোই না। এ কারণে খুবই ভেঙে পড়েছিলেন ইমাম, ‌‌‌‘এসব যখন ঘটছিল, আমি খাবার খেতেও একা একাই যেতাম। এটা ছিল আমার প্রথম সফর। একজন খেলোয়াড়ের প্রথম সফরে কী হতে পারে সেটা তো আপনি জানেনই।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেও ছিলেন দূরে। ওই সময়টাতে বড় একা হয়ে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান, ‌‘আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কী করব। পরিবারের লোকেদের সঙ্গেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমার সমস্যা নিয়ে ওদের আমি চাপে ফেলতে চাইনি। পরে আমি মোবাইল বন্ধ করে ম্যানেজারের কাছে জমা দিয়েছি।’

দ্বীপ দাসগুপ্তের কাছে তিনি আরো বলেন , ‌‘আমার মনে আছে। সে সময় আমি ঝর্নার নিচে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁদতাম। তখনো পাকিস্তানের হয়ে খেলিনি। অথচ সব আত্মবিশ্বাস উবে যেতে লাগল। তখন শুধু একটা কথাই ভাবতাম—আমি না খেলতেই এই অবস্থা! আমি যদি খেলতে নামি আর ভালো করতে না পারি তাহলে কী হবে!’

তবে তার দুঃখ-কষ্ট আর মানুষের সমালোচনা সব যেনো মিশে যায় তৃতীয় ম্যাচে যখন অভিষেক হয়। আর সেই অভিষেক ম্যাচেই দূর্দান্ত এক শতকে দলকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন। সমালোচকদের সমালোচনার জবাব দেন নিজের অভিষেক ম্যাচেই। এরপর এখন পর্যন্ত ৩৭ ওয়ানডে খেলা ইমাম করেন ৭ টি শতক।

নিউজক্রিকেট২৪/ এইচএএম

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »