দুর্জয় দাশ গুপ্ত »
২৬ সেপ্টেম্বর সারাটা দিন কেটেছে অনেক নাটকীয়তায়। যদিও এই নাটকীয়তার শুরুটা হয়েছিলো এর আগের মধ্যরাতে। হুট করেই বিসিবি বসের বাসায় অধিনায়ক ও হেড কোচ। এরপর থেকেই শুরু হয় একের পর এক নাটকের। অবশেষে সকল নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল। সবচেয়ে বড় চমক ছিলো বিশ্বকাপে তামিমের না থাকাটা। নির্বাচক মণ্ডলী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তারা হাফফিট কিংবা ইনজুরি সম্ভবনা রয়েছে এমন ক্রিকেটারকে বিশ্বকাপে চান না।
বারবার মিডিয়ার সামনে এসেছে তামিম ইকবাল হাফফিট। তামিম নাকি নিজেও বলেছিলেন। এখানে কিন্তু একটা বিস্তর ফারাক রয়েছে। তামিম কখনোই নিজেকে হাফফিট দাবি করেননি। বরং তিনি বলেছেন শতভাগ ফিট না। তামিম যখন অবসরের ঘোষণা দিলেন তখন কিন্তু এর পেছনে তার নিজের ইনজুরিটাকেই বড় করে দেখেছেন। অর্থাৎ তামিম আর শতভাগ ফিট হতে পারবেন না বলেই অবসরে গিয়েছিলেন। কিন্তু এরপরেই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবসর ভেঙে ক্রিকেটে ফেরেন তামিম। ফেরার আগে ইনজুরিকে দমিয়ে রাখতে নিয়েছিলেন ইনজেকশন। এছাড়া রিহ্যাব প্রক্রিয়া শেষ করেই তিনি বিশ্বকাপের আগে জাতীয় দলে ফিরেছেন। তামিম সহ দলের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই জানেন তামিম ইকবাল শতভাগ ফিট হতে পারবেন না কিন্তু বিশ্বকাপে তামিমকে দলের বেশ প্রয়োজন। এশিয়া কাপের এমন পারফরম্যান্সের পর স্বয়ং বিসিবি বসও এ ব্যাপারে খোলামেলাভাবে মিডিয়ায় কথা বলেছিলেন।
এবার একটু ফিরে যাওয়া যাক ২০২২ সালের এশিয়া কাপে। সাকিব আল হাসান অধিনায়ক হিসেবে এশিয়া কাপ খেলতে গেলেন। সাকিব নিজে বেশ কয়েকজন প্লেয়ারকে এশিয়া কাপের দলে চেয়েছেন সেটা বিসিবিরই নির্বাচক প্যানেল বারবার মিডিয়ার সামনে বলেছেন। ধরা যাক পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনের কথা। তিনিও তখন ইনজুরি সাথে নিয়ে ঘুরছেন। তবুও অধিনায়ক সাকিবের বড্ড প্রয়োজন ছিলো সাইফকে। অধিনায়কের চাওয়ায় এশিয়া কাপের বিমানে উঠেছিলেন তিনি, খেলেছেন ম্যাচও। তাহলে তামিমের ক্ষেত্রে সমস্যাটা কোথায়? এমন তো না যে তামিমকে দল রাখলে একজন ইনফর্ম ওপেনারকে বসিয়ে রাখা লাগবে কিংবা আনফিট তামিমের চেয়েও বেটার অপশন টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে আছে। বরং এই তামিমকেই বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এশিয়া কাপ থেকে নিউজিল্যান্ড সিরিজ, সাতটা ম্যাচে ওপেনারদের পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই দেখেছেন অধিনায়ক আর কোচ। তবুও কেন তামিমের চেয়ে তার শতভাগ ফিট না হওয়াটাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হলো এমন প্রশ্নটা থেকেই যায়।
আসলে সমস্যাটা অন্য জায়গায়। গতকালই মিডিয়ায় এসেছে বিসিবির একজন পরিচালক জানিয়েছেন, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে তামিমকে জানানো হয়েছে আফগানিস্তান ম্যাচ সহ কয়েকটা ম্যাচে তাকে খেলানো হবে না। তারপর আবার বলা হয় তামিমকে একাদশে রাখলেও খেলতে হবে মিডিল অর্ডার অথবা লোয়ার মিডিল অর্ডারে। যদি এ ব্যাপারটা সত্য হয়ে থাকে সেটা তবে অবশ্যই ভালো কিছুর বার্তা দেয় না। একজন দেশসেরা ওপেনার যিনি ক্যারিয়ারের সতেরটা বছর কাটিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করেছেন তিনি তার জীবনের শেষ বিশ্বকাপে গিয়ে মিডিল অর্ডারে ব্যাট করবেন তামিমের জন্য এটা মোটেও সুখকর নয়।