সুফিয়ান আল হাসান »
১৬ ডিসেম্বর , বিজয়ের দিনে তার জন্ম। বাবা মা তাই তার নাম রাখলেন বিজয়। বিজয়ের দিনে যেমন সবাই সদা হাস্য উজ্জল থাকে ঠিক তেমনই সব জায়গায়, সবসময় হাসি থাকে ছেলেটার মুখে। পুল শর্ট তার ভালোবাসা, বাউন্স বল পেলে বিজয়ের থেকে বেশি খুশি কেইবা হয়??
সেই ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি ছেলেটার ভালোবাসা।২০০৮ সালে ঢাকা ডিভিশান লিগে সর্বপ্রথম দেখা যায় এই উইকেটরক্ষক- ব্যাটসম্যানকে। এখানে বেশি দিন বসে থাকতে হয়নি বিজয়কে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের হয়ে ইংল্যান্ডে খেলার সুযোগ মেলে তার। ইংল্যান্ডের সেই সফরে দুর্দান্ত পারফর্মম্যান্স দেখান ব্যাট হাতে। এবার সুযোগ আসে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ দলে, তবে সেই সুযোগ শুধু উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে নয়, বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে। সেবার বিশ্বকাপ আসর বসেছিল অস্ট্রেলিয়ায়। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে তার অসাধারণ ব্যাটিং নৈপূণ্যে সেবার জোড়া সেঞ্চুরির মুখ দেখেন এই ব্যাটসম্যান। সেই সাথে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহায়কের নামটিও ছিল এনামুল হক বিজয়।
অনূর্ধ্ব-১৯ এ দুর্দান্ত পারফর্ম করায় পরবর্তীতে জাতীয় দলে প্রবেশ করতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি বিজয়ের। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৬৬ নম্বর জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের। অভিষেক ম্যাচ টা ভালো না হলেও নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই প্রথম শতক হাঁকান এই তরুণ ক্রিকেটার। তার সেই শতকের উপর ভর করেই ম্যাচটি সেবার টাইগাররা জয় লাভ করে।
২০১৪ সালটিতেই যেন বেশি উজ্জ্বল ছিলেন বিজয়। ২০১৪ সালের এশিয়া কাপের পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় শতকের দেখা পান। তবে সেবার পাকিস্তানীদের জয়ে নিজের শতকটিই বৃথাই গেছে বলতে হবে।সেবছরের ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০ রান করে সিরিজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীও ছিলেন বিজয়। এরপর ডাক এলো ২০১৫ বিশ্বকাপ দলে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ফিলন্ডিং করতে গিয়ে বিজয়ের ইনজুরি যেমন থমকে দিয়েছিল পুরো বাংলাদেশকে।তেমনি বিজয়ের ক্যারিয়ারের সামনেও দাড়িয়েছিল বিশাল দেওয়াল হয়ে।
জাতীয় দলে এরপর ফেরা হয়েছে বেশ কয়েক বার, তবে বাংলাদেশ খুঁজে পায়নি তার পুরনো বিজয়কে, যার ব্যাটিং বিজয় ছড়াতো পুরো বাংলাদেশ সিরিরে, যার ব্যাটিং আনন্দে হাসতো ক্রিকেট ভক্তদের।
জাতীয় দলে অনিয়মিত হলেও ডিভিশন ভিত্তিক ক্রিকেট এবং বিপিএলের মতো প্ল্যাটফর্মে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যায় বিজয়কে। ঘরোয়া লীগ গুলোতে বিজয় থাকেন সেই পুরনো রূপেই, যার ব্যাটে ছুটে রানের বন্যা, জার ব্যাটে পাওয়া যায় জয়ের সুভাষ।