পিচই তবে কাল হয়ে দাঁড়ালো ভারতের জন্য!

দুর্জয় দাশ গুপ্ত »

ফাইনালে আগে পর্যন্ত দশটা ম্যাচ খেলে দশটাতেই বড় জয়। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন স্বাগতিক ভারত এবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলবে। অনেক ভক্তরা ম্যাচের আগেই জার্সিতে “৩ তারা” লাগিয়ে ফাইনাল দেখতে মাঠে আসলেন। অথচ গত দশটা ম্যাচ ধরে দেখানো দাপুটে পারফরম্যান্স মলিন হয়ে গেল একটা ফাইনাল হারে। রোহিত, সিরাজরা মাঠ ছাড়লেন চোখের পানিতে।

বিশ্বকাপে আগে ব্যাট করে ৪১০, ৩৯৭, ৩৫৭, ৩২৬ রান করা ভারত ফাইনালে অলআউট মাত্র ২৪০ রানে। অস্ট্রেলিয়ার প্রেক্ষাপটটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সব মিলিয়ে ১১টা ম্যাচ খেললেও ৩০০ পেরোতে পেরেছে মাত্র তিনবার। নিউজিল্যান্ড ছাড়া ‘পুঁচকে দল’ নেদারল্যান্ডস আর আসরের নড়বড়ে দল পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩০০ এর বেশি রান করতে পেরেছে।

আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম বরাবরের মতই স্পোর্টিং উইকেট। এই পিচে বোলাররা ভালো করলেই কেবল দল জিততে পারে। তবে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং অ্যাটাক ভারতের চেয়ে কোনভাবেই ভালো ছিলো না। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ভারতীয় বোলারদের সামনে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের। তবু কেন ফাইনালে এসে এমন ভরাডুবি?

পরিসংখ্যান বলে এই মাঠে সবসময়ই টসটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কারণ আলোর নিচে ব্যাট করাটা তুলনামূলকভাবে সহজ হবে।

 

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা স্বভাবসুলভই হয়েছিলো ভারতের। দলীয় অধিনায়ক রোহিত ছিলেন বরাবরের মতই আগ্রাসী ভূমিকায়। তবে স্টেডিয়াম ভর্তি লাখের উপরের দশর্ককে হতাশ করেছেন শুভমান গিল। তার বিদায়ের পরও মোমেন্টাম হারায় নি ভারত। বরং রোহিত-কোহলি দুজনই চড়াও হয়েছেন অজি বোলারদের উপর। কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের বলে রোহিতের দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে মোমেন্টামটা নিজেদের দিকে নিয়ে নেন ট্র্যাভিস হেড। মূলত এখানটায়ই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ভারত।

১১-৫০ এই ৩৯ ওভারে আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে ভারত বাউন্ডারি মারতে পেরেছে কেবল ৪টা। এর মাঝে ৯৭ বল কোন বাউন্ডারিই হাঁকাতে পারেননি কেএল রাহুল ও বিরাট কোহলি। একের পর এক ডট বল ভারতকে উল্টো প্রেশারে ফেলেছে।

তবে কি ভারতীয় ব্যাটাররা পিচের আচরণ সম্পর্কে অবগত ছিলেন না? নাকি অতি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে ২০০ এর বেশি রান করলেই অস্ট্রেলিয়াকে এই পিচে আটকে রাখা যাবে।

কোহলির বিদায়ের পর আর কোন ব্যাটার কোন ইমপ্যাক্ট রাখতে পারেননি। কেএল রাহুল ১০৭ বলে ৬৬ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলে বিদায় নিলে ভারতের আর কোন ব্যাটারই সুবিধা করতে পারেননি। রবীন্দ্র জাদেজা, সূর্যকুমার যাদবরা এদিন ছিলেন পুরোদমে ব্যর্থে। অথচ ভারতের শুরুটা দেখে মনে হয়েছিলো অনায়াসেই এই উইকেটে ৩০০+ রান করা সম্ভব। যদি দলীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার ঐ ক্যাচটা হেড না ধরতে পারতেন তাহলে হয়তো ভারত আরো বড় সংগ্রহের দিকে এগোতে পারতো।

 

নিউজটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন »

মন্তব্য করুন »