কে এম আবু হুরায়রা »
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশকে বেশ কিছুদিন ধরে প্রতিনিধিত্ব করছেন তরুণ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান। মূলত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বিপিএলে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দিয়েই জাতীয় দলে সুযোগ করে নিয়েছেন মেহেদী। বল হাতে যেমন দলের প্রয়োজনে ব্রেকথ্রু এনে দিতে পারেন তেমনি ব্যাট হাতেও জ্বলে উঠতে পারেন। সবশেষ বিপিএলে ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর চড়াও হয়েছিলেন বেশ কয়েকটা ম্যাচে। এর পুরস্কার হিসেবে পুনরায় ডাক পান জাতীয় দলে।
তরুণ এই অলরাউন্ডারের সাথে মুঠোফোনে হলো অনেক গল্প। জানিয়েছেন কিভাবে একজন ক্রিকেটার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি।
পাঠকদের জন্য পুরো সাক্ষাৎকার হুবহু তুলে ধরা হলো।
নিউজক্রিকেটঃ ক্রিকেটের হাতেখড়ি কিভাবে ঘটে?
মেহেদী হাসানঃ ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটে আগ্রহ ছিলো। তারপর একাডেমিতে অনুশীলন শুরু করি। আমার শুরুর দিকটায় খুলনায় যে একাডেমিতে শুরু করি সেখানে কোচ শেখ সালাউদ্দিন স্যার, বুলু স্যার সহ আরো অনেক বড় ভাই ছিলেন৷ তাদের মাধ্যমেই আমি শুরু করি।
নিউজক্রিকেটঃ পরিবার থেকে ক্রিকেটের জন্য সমর্থন পেয়েছেন?
মেহেদী হাসানঃ আসলে শুরুর দিকটায় অর্থাৎ আমি যখন খেলা শুরু করি তখন সমর্থন পাইনি। পরিবার সবসময় চেয়েছে পড়ালেখা করি। এরপর যখন নিজেকে একটু একটু প্রমাণ করতে শুরু করি এবং অনূর্ধ্ব -১৫ জাতীয় ক্যাম্পে সুযোগ পাই তখন থেকে একটু একটু সমর্থন পেতে শুরু করি। তবে পুরোপুরি সমর্থন পেয়েছি যখন জাতীয় পর্যায়ে খেলা শুরু করেছি।
নিউজক্রিকেটঃ একজন স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে কতটা সম্ভবনাময় মনে হয় নিজেকে? ইতিমধ্যেই জাতীয় দলের হয়ে কয়েকটা ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে।
মেহেদী হাসানঃ আমি জাতীয় দলের হয়ে কেবল একটা ফরম্যাটেই কয়েকটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছি আর সেটা হচ্ছে টি-টোয়েন্টি। টি-টোয়েন্টি এমন একটা ফরম্যাট এখানে যেকোনো কিছু হতে পারে। অর্থাৎ অনিশ্চিত। আমি মনে করি আমার শেখার আরো অনেক কিছু বাকি আছে। আমি খুব বড় স্বপ্নও দেখি না এখনো, আমি আমার স্কিলের দিকে মনোযোগী হচ্ছি। আমার কাজটা ভালো করে রপ্ত করার চেষ্টায় আছি৷ আমি জানি একটা সময় এভাবে কাজ করে যেতে যেতে এমনিতেই স্বপ্নটা বড় হবে।
নিউজক্রিকেটঃ গত বিপিএলে ব্যাট হাতেও দারুণ কিছু করেছেন৷ কোন বিশেষ পরিকল্পনা ছিলো কি?
মেহেদী হাসানঃ ছোটবেলা থেকেই আমি মোটামুটি ব্যাটিং করতে পারি৷ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আমার ব্যাটিংয়ের রেকর্ড খারাপ না। তবে এটা ঠিক আমার ব্যাটিং নিয়ে কখনোই বিশেষ কোন পরিকল্পনা থাকে না। অনেক সময় দেখা যায় একটা ম্যাচে ওপেন করেছি আবার পরের ম্যাচে নয় নম্বরে ব্যাট করেছি। আর আমিও এজন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখি সবসময়। দলের প্রয়োজনে যেকোনো জায়গায় পারফর্ম করতে মুখিয়ে থাকি। যে পজিশনেই ব্যাট করিনা কেন নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা থাকে।
নিউজক্রিকেটঃ ক্যারিয়ার তো সবে শুরু হলো। কোন ফরম্যাটটাকে নিয়ে পরিকল্পনা করছেন?
মেহেদী হাসানঃ সত্যি কথা হলো প্রতিটা ক্রিকেটারের একটা স্বপ্ন থাকে টেস্ট ফরম্যাটে ভালো করার এবং একজন নিয়মিত প্লেয়ার হওয়ার। আমারও স্বপ্ন আমি বাংলাদেশ দলে নিয়মিত হতে চাই।
নিউজক্রিকেটঃ স্পিনারদের আসল পরীক্ষা দিতে হয় এশিয়ার বাইরের কন্ডিশনে গিয়ে। আপনি একজন স্পিনার সেক্ষেত্রে এ ব্যাপারটা কিভাবে দেখেন?
মেহেদী হাসানঃ আমি এখন পর্যন্ত দেশের বাইরে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছি পাকিস্তানে। আর হাই পারফরম্যান্স দলের হয়ে দেশের বাইরে কিছু ট্যুর করেছি। বাইরের উইকেটগুলোতে স্পিনারদের জন্য সুবিধা কম থাকে। উইকেট থেকে সুবিধা কম পাওয়া যায়৷ নিজের স্কিল কাজে লাগাতে হয়৷ আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে কাজ করছি। নিজেকে সেভাবে তৈরি করার চেষ্টায় আছি। বলে যদি আরো ভ্যারিয়েশন আনতে পারি তাহলে আরো ভালো হবে।
নিউজক্রিকেটঃ লম্বা সময় ধরে মাঠের বাইরে। প্রায় তিন মাসের মত হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে ক্রিকেট মাঠে ফিরলে মানিয়ে নেয়াটা কতটা চ্যালেঞ্জিং হবে একজন ক্রিকেটারদের জন্য?
মেহেদী হাসানঃ আসলে যারা প্রফেশনাল ক্রিকেটার তারা কেউ বসে নেই। ঘরে থাকলেও সবাই যতটুকু পারা যায় কাজ করে যাচ্ছে। আমার ক্ষেত্রে বলবো আমিও চেষ্টা করে থাকি নিরাপদে থেকে যতটুকু কাজ করা সম্ভব ঘরের ভেতরে থেকে। এটা ঠিক যে লম্বা সময় পরে আমরা মাঠে ফিরলে কিছুটা সমস্যা হবে। তবে প্রফেশনাল ক্রিকেটার যেহেতু কাজেই এসব ঠিক হয়ে যাবে, খুব বেশি সময় লাগবে বলে মনে হয় না।
নিউজক্রিকেটঃ নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডট কমের পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
মেহেদী হাসানঃ আপনাকে এবং নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডট কমের সকল পাঠকদের ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।