মারুফ ইসলাম ইফতি »
করোনাভাইরাসের বিষাক্ত কালো থাবায় এই মুহুর্তে স্থবির সারাবিশ্ব।করোনা ট্রাজেডিতে এই মুহুর্তে শোচনীয় অবস্থা বিরাজ করছে বাংলাদেশেও।ইতিমধ্যে করোনার কবলে বাংলাদেশে প্রাণ হারিয়েছে ২১৪ জন এবং আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আরো ১৩৭৭০ জন মানুষ।
করোনার ফলে বিশ্বের অনান্য দেশের মতো লক ডাউন চলছে বাংলাদেশেও।লকডাউনের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গরিব অসহায় হতদরিদ্র পরিবার গুলো।খেটে খাওয়া দিনমজুরদের হাতে কাজ না থাকায় অর্থের অভাবে দুবেলা দুমুঠো খাবারও তাদের জন্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।এমন পরিস্থিতিতে সমাজের বিত্তবানরা নিজেদের জায়গা থেকে সহযোগীতা করার চেষ্টা করছেন হতদরিদ্র এই পরিবার গুলোর জন্য।ইতিমধ্যে ক্রীড়া জগতের অনেকেই পাশে দাঁড়িয়েছেন হতদরিদ্র এই মানুষ গুলোর পাশে।এবার এই তালিকায় নিজেকে আবারো যুক্ত করলেন দেশসেরা ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।
দেশসেরা ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহক জসিম উদ্দিন এই কথাটিকে খুব ভাল করে মনে ধারন করেছেন।মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর মাঝে যেন জসিমের সবচেয়ে বড় সার্থকতা।
করোনার এই ক্রান্তিকালে কিছুদিন আগে নিজ উদ্যেগে অসহায় সুবিধাবঞ্চিত ৪০ পরিবারকে প্রয়জনীয় খাদ্য সামগ্রী উপহার হিসেবে প্রদান করেছিলেন তিনি। এবার আবারো অসহায়দের পাশে দাঁড়াচ্ছেন জসিম।জসিমের এবারের ইচ্ছা অনেক গুলো হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো।মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জসিমের জন্য এইভাবে সাহায্য করাটাও কঠিন, আর তাই অর্থের যোগান দিতে নিজের স্মারক সমুদ্র থেকে দুটি মুল্যবান স্মারক নিলামে তুলছেন তিনি।বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার অটোগ্রাফ সহ ক্যাপ এবং ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের স্কোয়াডের সকল ক্রিকেটারদের অটোগ্রাফ সহ ব্যাট নিলামে তুলছেন জসিম।নিলামে এই দুটি মুল্যবান স্মারক থেকে যে পরিমান অর্থ আসবে তার পুরোটা অর্থ ব্যয় করবেন করোনার প্রভাবে ভোগান্তিতে পড়া অসহায় মানুষদের পিছনে।আজ ৯ই মে রাত ১০টায় ‘স্পোর্টস ফর লাইফ’ নামের অন্য একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শুরু হবে নিলাম, এটি চলবে আগামী ১৪ই মে রাত ১০টা পর্যন্ত।
১৯৯৭ সাল থেকে ক্রিকেটকে ভালবেসে এই ক্রিকেটকে মনের মাঝে ধারন করে ছুটছেন এই ক্রিকেটের পাশে।জসিমের স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হবেন, খেলবেন দেশের হয়ে।ভাগ্য সহায় না থাকায় সেই স্বপ্ন আর পূরন হয়নি তার।তবুও রক্তে মিশে যাওয়া ক্রিকেটের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে জসিম সিদ্ধান্ত নেন ক্রিকেট স্মারক সংগ্রহ করবেন।আর সেই লক্ষ্যে ১৯৯৭ সাল থেকে এখনো চলমান জসিমের স্মারক সংগ্রহ।২৩ বছরের স্মারক সংগ্রহ করে এখন ছোটখাটো একটি ক্রিকেট স্মারক সমুদ্রের মালিক জসিম।এরই মধ্যে দেশসেরা ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহকের তকমাও গায়ে মাখিয়েছেন।
দ্বিতীয় ধাপে আবারো বড় স্বপ্ন নিয়ে করোনায় হতদরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর ব্যাপারে নিউজক্রিকেট টুয়েন্টিফোরকে জসিম বলেনঃ দেশের এই ক্রান্তিকালে এই হতদরিদ্র পরিবার গুলোর পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার কর্তব্য।আমি এর আগেও একবার নিজের সাধ্যানুযায়ী সহযোগীতা করেছিলাম।এখন আমার মনে হলো আমার উচিৎ আবারো মানুষের পাশে দাঁড়ানো।আমি মধ্যবিত্ত, তাই আমি চাইলেই উচ্চবিত্তদের মতো সাহায্য করতে পারিনা, তবুও আমার প্রবল ইচ্ছা এবার যতটুক সম্ভব বেশি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।আর সেই লক্ষ্যে আমি আমার সংগ্রহীত স্মারক থেকে আমার খুব প্রিয় দুটো স্মারক নিলামে তুলছি।আশা করি ভাল একটা দাম আসবে এর থেকে, আর সেই অর্থ পুরোটা আমি করোনায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সাহায্যার্থে ব্যয় করবো।আমার এটা ভেবে ভাল লাগছে আমি আবারো কিছু সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পারবো।আমি অনুরোধ করবো সমাজের বিত্তবানদের, আপনারা নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসুন।
উল্লেখ্য, দেশসেরা ক্রিকেট স্মারক সংগ্রাহক জসিম উদ্দিন এর আগেও নিজের সংগ্রহিত স্মারক থেকে ১০ টি ব্যাট ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ক্রিকেটার মোশারফ হোসেন রুবেলকে উপহার হিসেবে প্রদান করেছিলেন তার চিকিৎসার জন্য ব্যয় করতে।এইভাবে মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়ে, মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর মাঝেই লুকিয়ে আছে স্মারক সংগ্রাহক জসিমের আনন্দ।