নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
প্রথম টেস্টে শুক্রবার ইনিংস ও ১২ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল ডিন এলগারের দল।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে আবার ব্যাটিংয়ে নামাতে ইংল্যান্ডের করতে হতো ১৬১ রান। স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে যায় স্রেফ ১৪৯ রানে। প্রথম ইনিংসে তারা অল আউট হয়েছিল ১৬৫ রানে।
বেন স্টোকসের নেতৃত্ব আর ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কোচিংয়ে প্রথম চার টেস্টেই ইংল্যান্ড জিতেছিল চতুর্থ ইনিংসে আড়াইশর বেশি রান তাড়া করে। এবার তারা দেখল মুদ্রার উল্টো পিঠ।
ক্রিকেট তীর্থ লর্ডসে এই নিয়ে মাত্র চতুর্থবার ইনিংস ব্যবধানে হারের স্বাদ পেল ইংল্যান্ড। ২০০৩ সালে সবশেষটিও ছিল এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
গতি আর আগ্রাসনে এবার ইংল্যান্ডকে নাড়িয়ে দেন আনরিক নরকিয়া। তৃতীয় দিন লাঞ্চের পর ১০ বলের মধ্যে কোনো রান না দিয়ে এই পেসার নেন ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসেও তার প্রাপ্তি ছিল ৩টি।
প্রথম ইনিংসের পাঁচটিসহ ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন যদিও আরেক পেসার কাগিসো রাবাদা, চোট শঙ্কায় এই ম্যাচে যার খেলা নিয়েই ছিল অনিশ্চয়তা!
দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় দিন ব্যাটিং শুরু করেছিল ৭ উইকেটে ২৮৯ রান নিয়ে। এদিন তারা যোগ করে আরও ৩৭ রান। প্রথম ইনিংসে পায় ১৬১ রানের লিড।
দিনের তৃতীয় বলে স্টুয়ার্ট ব্রডের অসাধারণ ক্যাচে বিদায় নেন রাবাদা। প্রথমবার ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা ইয়ানসেন ২ রানের জন্য পাননি প্রথম ফিফটি। আগের দিনের ৪১ রানের সঙ্গে আর ৭ রান যোগ করে আউট হন তিনি। নরকিয়া খেলেন অপরাজিত ২৮ রানের কার্যকর ইনিংস।
উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভয়ঙ্কর ছিল না মোটেও। কিন্তু ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা লড়াইয়ের ছাপ রাখতে পারেননি দ্বিতীয় ইনিংসেও।
তৃতীয় ওভারেই রাবাদার বলে আউট হয়ে যেতে পারতেন অ্যালেক্স লিস। জীবন পান তিনি স্লিপে কিগান পিটারসেন ক্যাচ ফেলায়।
অষ্টম ওভারে স্পিনার কেশভ মহারাজকে আক্রমণে আনেন এলগার। সাফল্য ধরা দেয় দ্রুতই। তৃতীয় বলে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন জ্যাক ক্রলি।
লাঞ্চের আগে শেষ বলে মহারাজ শিকার ধরেন আরেকটি। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা অলি পোপকেও এলবিডব্লিউ করে দেন বাঁহাতি স্পিনার। এই উইকেট আসে রিভিউ নিয়ে।
টিকতে পারেননি জো রুটও। লুঙ্গি এনগিডির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক।
ছয় বছর পর দেশের মাটিতে কোনো টেস্টে উভয় ইনিংসে দুই অঙ্ক ছুঁতে ব্যর্থ হলেন তিনি।
এরপরই নরকিয়ার দুর্দান্ত ওই স্পেল। দারুণ ডেলিভারিতে তিনি কট বিহাইন্ড করে দেন জনি বেয়ারস্টোকে।
ওই ওভারে তার গড় গতি ছিল ঘণ্টায় ১৪৯ কিলোমিটার!
পরের ওভারে এসে তিন বলের মধ্যে তিনি ফিরিয়ে দেন লিস ও বেন ফোকসকে। দুজনই ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে। তখন ৮৬ রানে ৬ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডের সামনে একশর আগে গুটিয়ে যাওয়ার চোখ রাঙানি।
সেই শঙ্কা কাটে সপ্তম উইকেটে স্টোকস ও ব্রডের ৪৫ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৫ রানের জুটিতে।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৫ চার ও এক ছক্কায় ২৯ বলে ৩৫ রান করা ব্রডকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রাবাদা। ম্যাথু পটসকে দ্রুত বোল্ড করে দেন ইয়ানসেন।
রাবাদা পরের ওভারে থামান ২০ রান করা স্টোকসকে। ডিপ মিড উইকেটে দারুণ ক্যাচ নেন মহারাজ। আর অ্যান্ডারসনকে বোল্ড করে ম্যাচের ইতি টেনে দেন তরুণ বাঁহাতি পেসার ইয়ানসেন।
আগামী বৃহস্পতিবার ম্যানচেস্টারে শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট।