নিউজ ক্রিকেট ২৪ ডেস্ক »
বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি যুগের অবসান। ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মুশফিকুর রহিম। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতার পর বুধবার রাতে ফেসবুকে এক আবেগঘন বার্তায় নিজের অবসরের ঘোষণা দেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটার ও উইকেটকিপার ছিলেন মুশফিক। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে চলা আলোচনা শেষে নিজেই ওয়ানডে থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
অনেক জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বললেন মুশফিকুর রহিম। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হতাশার পর বুধবার (৫ মার্চ) রাতে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন বার্তায় অবসরের ঘোষণা দেন তিনি।
১৯ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা দিয়ে মুশফিক লিখেছেন, “ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে আমি আজ অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি। হয়তো বৈশ্বিক আসরে আমাদের অর্জন সীমিত, কিন্তু যখনই দেশের জন্য মাঠে নেমেছি, সততার সঙ্গে নিজের শতভাগ উজাড় করে দিয়েছি।”
বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটা আলোচনা অনেক দিন ধরেই চলছিল—চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর সিনিয়রদের কেউ কেউ সরে দাঁড়াবেন। নানা নাটকীয়তায় দলে ফেরা হয়নি তামিম ইকবালের, সাকিব আল হাসান খেলতে পারেননি রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বোলিং অ্যাকশনের জটিলতায়। আর দলকে নেতৃত্ব দেওয়া মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পারফরম্যান্স হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ দল একটিও জয় পায়নি। ব্যক্তিগতভাবে দুই ইনিংসে ০ ও ২ রান করে সমালোচনার মুখে পড়েন মুশফিক। অনেকেই ধারণা করছিলেন, হয়তো এটাই তার শেষ ওয়ানডে টুর্নামেন্ট। তবে মাহমুদউল্লাহ এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না জানালেও, মুশফিক অপেক্ষা করাননি।
২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকের পর দীর্ঘ ১৯ বছরে ২৭৪ ম্যাচে করেছেন ৭৭৯৫ রান , যেখানে রয়েছে ৯টি সেঞ্চুরি ও ৪৯টি হাফসেঞ্চুরি। শুধু ব্যাট হাতে নয়, উইকেটের পেছনেও ছিলেন দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ভরসা—২৪৩টি ক্যাচ এবং ৫৬টি স্টাম্পিং করেছেন তিনি। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০ রান করে টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি ডাবল সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে নাম লিখিয়েছিলেন মুশফিক।
তবে শেষ কয়েকটি সিরিজে ব্যাট হাতে ছন্দে ছিলেন না। গত বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৭৩ রান করার পর আর কোনো ফিফটি পাননি। তার পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনা চলছিল, এবং অবশেষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর নিজেই বিদায়ের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
নিজের অবসরের ঘোষণায় পরিবার, বন্ধু ও ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে মুশফিক লিখেছেন, “আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ আমার পরিবার, বন্ধু ও ভক্তদের প্রতি, যাদের ভালোবাসা ও সমর্থনে আমি ১৯ বছর ক্রিকেট খেলতে পেরেছি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক ইমান দান করুন ও
টি-টোয়েন্টিকে আগেই বিদায় জানিয়েছেন মুশফিক। তবে এখনো টেস্ট ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে তার। হয়তো সামনের দিনগুলোতে লাল বলের ক্রিকেটেই দেখা যাবে এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে।
আরএ/নিউজক্রিকেট২৪